জবি প্রতিনিধি

  ১৪ জানুয়ারি, ২০২৫

ক্যাম্পাসে কমপ্লিট শাটডাউন চলবে

সচিবালয়ে জবি শিক্ষার্থীদের অনশন, পরে প্রত্যাহার

দাবি আদায়ে বাংলাদেশ সচিবালয়ের সামনে আমরণ অনশনে বসেছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরসহ তিন দফা দাবিতে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নেন তারা। প্রায় তিন ঘণ্টা অবস্থানের পর আশ্বাসের চিঠি পেয়ে অনশন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে দিয়ে ক্যাম্পাস ও সচিবালয় মিলিয়ে ৩৫ ঘণ্টা অনশনের অবসান ঘটে। তবে দাবি পুরোপুরি পূরণের ঘোষণা না আসা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

অনশন প্রত্যাহারের কথা জানান অনশনরত উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী একেএম রাকিব। তিনি বলেন, আমাদের ৩টি দাবির মধ্যে দুটি পুরোপুরি মেনে নিয়ে লিখিত চিঠি দেওয়া হয়েছে। বাকি একটি আলোচনা সাপেক্ষে মেনে নেওয়া হবে। লিখিত চিঠি পাওয়ায় আমরা অনশন প্রত্যাহার করছি। তবে মন্ত্রণালয়ের সভার সিদ্ধান্ত সামনে না আসা পর্যন্ত আমাদের শাটডাউন কর্মসূচি চলবে।

তিন দফা দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সাত শতাধিক শিক্ষার্থী গতকাল সোমবার সকালে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক, শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনসহ বিভিন্ন ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। ঘোষণা করেন কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি। এর আগে থেকেই দাবি আদায়ে ক্যাম্পাসের শহীদ মিনার চত্বরে অনশন চালিয়ে যাচ্ছিলেন শতাধিক শিক্ষার্থী। প্রায় ৩২ ঘণ্টার অনশনে কেউ কেউ অসুস্থও হয়ে পড়েন।

তবে দুপুরের দিকে ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে সচিবালয়ের পথে রওয়ানা হন শিক্ষার্থীরা। বিকেল ৫টার দিকে তারা সচিবালয়ের সামনে পৌঁছান। সচিবালয়ে পৌঁছে প্রধান ফটকের সামনের রাস্তায় বিছানা-চাদর বিছিয়ে অনশন শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘এক দুই তিন চার, ক্যাম্পাস আমার অধিকার; আমার ভাই অনশনে, প্রশাসন কী করে; বিপ্লবে বলীয়ান, নির্ভীক জবিয়ান’সহ নানা স্লোগান দিতে থাকেন।

এদিকে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অনশন করে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেও প্রশাসন কোনো উপযুক্ত পদক্ষেপ নেয়নি। প্রশাসন এখনো চিকিৎসা ব্যয় ঠিকভাবে দিচ্ছে না। তাদের চিকিৎসা ব্যয়সহ বিভিন্ন খরচ শিক্ষার্থীদের টাকায় হচ্ছে। এ প্রশাসন সব দিক দিয়ে ব্যর্থ। তারা দাবি পূরণ হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালয়ে যাবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ক্লাস হতে দেবেন না। অনশনরত শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান বলেন, আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা অনশন ভাঙব না। সবার কাছে অনুরোধ, আপনারা যারা অনশন করছেন না, আপনারা ক্লাস-পরীক্ষা বয়কট করুন। আমাদের দাবি পূরণ করেই আমরা বাড়ি যাব। শ্রেণিকক্ষে ফিরব।

এর আগে গতকাল সকালে মাকসুদ নামে ১৪তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত ১৫ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে ভর্তি আছেন বলে জানা গেছে। অনশনে বসা শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবিগুলো হলো- ১. দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের চুক্তি অনতিবিলম্বে স্বাক্ষর করতে হবে। ২. পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ড. হাবিবুর রহমান হলের স্টিল বেইজড ভবনের কাজ দ্রুত শুরু এবং শেষ করতে হবে। ৩. যতদিন পর্যন্ত আবাসন ব্যবস্থা না হয়, ততদিন পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতা নিশ্চিত করতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close