সালাহ উদ্দিন বাবর

  ১১ জানুয়ারি, ২০২৫

করের বোঝায় বাড়বে সংসারের খরচ

দেশের মানুষ উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে পিষ্ট। গত ডিসেম্বরের শেষদিকে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও এখনো সেটা দুই সংখ্যার ঘরে। এতে নিম্ন ও নির্দিষ্ট আয়ের মানুষের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিদ্যমান এ উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যেই প্রায় ১০০টি পণ্যের ওপর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এতে মূল্যস্ফীতি আরো বেড়ে ভোক্তাদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

আজ শনিবার থেকে মোবাইল ফোন ব্যবহার, ইন্টারনেট, টিস্যু, আঙুর, আপেল, তরমুজ, তৈরি পোশাক, রেস্তোরাঁ, মিষ্টি, এলপি গ্যাস, হোটেল ভাড়া ও চশমার মতো পণ্যের ওপর নতুন ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্কহার কার্যকর হবে। ফলে এসব পণ্য ও সেবার খরচ বাড়বে। সংগত কারণেই বেড়ে যাবে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার ব্যয়। যেসব পণ্য ও সেবায় ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক ও আবগারি শুল্ক বৃদ্ধি করা হচ্ছে- তার মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য না থাকায় সর্বসাধারণের ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়বে না এবং মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব পড়বে না বলে দাবি করছে এনবিআর। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা ভিন্নমত পোষণ করেছেন। তারা বলছেন, ওষুধ, এলপিজি, রেস্তোরাঁর খাবার ও মোবাইল ফোন সেবার ওপরও বাড়তি শুল্কারোপের ফলে মানুষের ব্যবহার্য পণ্য ও সেবার দাম স্বাভাবিকভাবেই বাড়বে। ফলে মানুষের ব্যয় বাড়বে।

জানা গেছে, জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সামগ্রিক রাজস্ব আদায় ২.৬২ শতাংশ কমে যাওয়ায় দেশীয় ও বিদেশি উৎস থেকে যখন সরকারের ঋণ নেওয়ার চাপ বাড়ছে ঠিক সেই প্রেক্ষাপটেই পরোক্ষ কর বাড়ানোর পথে গেল এনবিআর। ২০০৩ সালের জানুয়ারি মাসে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) অনুমোদন করা ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের শর্তের অংশ হিসেবেও এ ভ্যাট বাড়ানোর সুপারিশ ছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শতাধিক পণ্য ও সেবায় শুল্ক-কর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ তালিকায় রয়েছে ওষুধ, এলপি গ্যাস, গুঁড়া দুধ, বিস্কুট, আচার, টমেটো কেচাপ বা সস, সিগারেট, জুস, টিস্যু পেপার, ফলমূল, সাবান, ডিটারজেন্ট পাউডার, মিষ্টি, চপ্পল (স্যান্ডেল), বিমান টিকিট। রেস্তোরাঁ, হোটেল ছাড়াও অন্য যেসব খাতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট বসতে যাচ্ছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো উৎপাদন পর্যায়ে বিস্কুট, আচার, সিআর কয়েল, ম্যাট্রেস, ট্রান্সফরমার, টিস্যু পেপার ইত্যাদি। এছাড়া ভ্যাট বাড়ানোর ফলে খরচ বাড়তে পারে পোশাক ব্র্যান্ডের শোরুম, মিষ্টির দোকান, এইচআর কয়েল।

পোশাক তৈরির খরচ বাড়বে : অনেকেই দর্জির দোকানে গিয়ে মাপ দিয়ে পছন্দমতো বিভিন্ন পোশাক তৈরি করে নেন। ফলে সারা বছরই ভিড় থাকে দর্জির দোকানে। ঈদের আগে সেটি কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এবার ঈদ মৌসুমের আগ মুহূর্তে টেইলারিং শপ ও টেইলার্সে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। ফলে দর্জির দোকানে পোশাক বানাতে আগের চেয়ে এখন বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে। এত দিন টেইলারিং শপ ও টেইলার্সে ভ্যাটের হার ছিল ১০ শতাংশ। এখন সেটি বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করেছে এনবিআর। ফলে টেইলারিং শপ ও টেইলার্সে ২ হাজার টাকার একটি পোশাক বানাতে ৩০০ টাকা ভ্যাট দিতে হবে। এতদিন সেটি ছিল ২০০ টাকা। তার মানে খরচ বাড়বে ১০০ টাকা। দর্জি দোকানে পোশাক বানালে ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। তার মানে পোশাক কেনা কিংবা বানানো উভয় ক্ষেত্রেই ভোক্তার খরচ বাড়বে।

সব ধরনের জুস ও তামাকজাতীয় পণ্যের দাম বাড়বে : আবার আর্টিফিসিয়াল ড্রিংকসের (সব ধরনের জুস) সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে। যেসব পণ্যে ভ্যাট ৫, সাড়ে ৭ ও ১০ শতাংশ রয়েছে- সেসব খাতে ভ্যাট ১৫ শতাংশ করা হচ্ছে। এর ফলে অনেক প্রতিষ্ঠান রেয়াত নিতে পারবে। শুধু স্থানীয় পর্যায়ে নয়, আমদানি পর্যায়েও কয়েকটি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে। নতুন করে কয়েকটি পণ্যের ওপর সম্পূরক শুল্ক বসানো হয়েছে। আমদানি পর্যায়ে যেসব পণ্যের সম্পূরক শুল্ক বেড়েছে অধ্যাদেশ অনুযায়ী, সুপারি বাদাম ৩০ শতাংশ থেকে ৪৫ শতাংশ, পাইন বাদাম ২০ থেকে ৩০ শতাংশ, তাজা বা শুকনা সুপারি ৩০ থেকে ৪৫ শতাংশ, আম, কমলালেবু, লেবুজাতীয় ফল, আঙুর, লেবু, পেঁপে, তরমুজ, আপেল ও নাশপাতি, ফলের রস, সবজির রস, তামাক, বাদাম, পেইন্টস, পলিমার, ভার্নিশ ও লেকার, সাবান ও সাবান জাতীয় পণ্য, ডিটারজেন্ট, ফ্রুট ড্রিংকস, আর্টিফিসিয়াল বা ফ্লেভার ড্রিংকস ও ইলেকট্রোলাইট ড্রিংকস (কার্বোনেটেড ও নন-কার্বোনেটেড), তামাকযুক্ত সিগারেট ইত্যাদি। এসব পণ্যে সম্পূরক শুল্ক ৫ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, সরবরাহ পর্যায়ে যেসব পণ্যের সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়েছে, তা হলো- যেসব হোটেলে মদ বা মদ জাতীয় পানীয় সরবরাহ করা হয় সেসব হোটেল বা বারের বিলের ওপর সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়া রেস্তোরাঁর ক্ষেত্রেও একইভাবে মদ বা মদজাতীয় পণ্য সরবরাহ করা হলে তার বিলের ওপর সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে। মোবাইল ফোনের সিম কার্ডের ওপর ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৩ শতাংশ করা হয়েছে। ইন্টারনেট সেবা বা আইএসপির ওপর প্রথমবারের মতো ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বসানো হয়েছে।

এনবিআর সূত্রে আরো জানা যায়, যেসব পণ্যের ভ্যাট বা মূসক বাড়ানো হয়েছে, তা হলো পটেটো ফ্ল্যাকস, কর্ন, মেশিনে প্রস্তুত বিস্কুট, হাতে তৈরি বিস্কুট, আচার, চাটনি, টমেটো পেস্ট বা টমেটো কেচাপ বা সস, আম, আনারস, পেয়ারা ও কলার পাম্প, তেঁতুলের পেস্ট, ব্যবহারের অযোগ্য ট্রান্সফরমার অয়েল, লুবব্লেয়িং অয়েল, এলপি গ্যাস, বাল্ক ইম্পোটেড পেট্রোলিয়াম বিটুমিন, বিআরটিএ থেকে নেওয়া লেমিনেটেড ড্রাইভিং লাইসেন্স, কঠিন শিলা, ফেরো-ম্যাঙ্গানিজ ও ফেরো-সিলিকো ম্যাঙ্গানিজ, ফেরো সিলিকন অ্যালয়, এইচ আর কয়েল থেকে সিআর কয়েল, সিআর কয়েল থেকে জিপি শিট, জিআই ওয়্যার, ৫ কেভিএ থেকে ২ হাজার কেভিএ বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার, চশমার প্লাস্টিক ফ্রেম, চশমার মেটাল ফ্রেম, রিডিং গ্লাস, নারিকেলের ছোবড়া থেকে তৈরি ম্যাট্রেস। এসব পণ্যের ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়া রেস্তোরাঁর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ, ইনভেন্টিং সংস্থার ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়া কিচেন টাওয়াল, টয়লেট টিস্যু, ন্যাপকিন টিস্যু, ফেসিয়াল টিস্যু, হ্যান্ড টাওয়াল, সানগ্লাস, নন এসি হোটেল, মিষ্টান্ন ভাণ্ডার, প্রতিষ্ঠানের কেনাকাটা, নিজস্ব ব্র্যান্ডসংবলিত তৈরি পোশাকের শোরুম বা বিপণিবিতান- এসব পণ্য ও সেবার ওপর প্রযোজ্য ভ্যাট সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়া বৈদ্যুতিক খুঁটি, ইলেকট্রিক পোল, মোটর গাড়ির গ্যারেজ ও ওয়ার্কশপ, ডকইয়ার্ড, ছাপাখানা, চলচ্চিত্র স্টুডিও, চলচিত্র প্রদর্শনী (সিনেমা হল), চলচ্চিত্র পরিবেশক, মেরামত ও সার্ভিসিং, স্বয়ংক্রিয় বা যন্ত্রচালিত করাতকল, খেলাধুলা আয়োজক, পরিবহন ঠিকাদার, বোর্ড সভায় জোগানকারী, টেইলারিং শপ ও টেইলার্স, ভবন রক্ষণাবেক্ষণকারী সংস্থা, সামাজিক ও খেলাধুলাবিষয়ক ক্লাব ইত্যাদি। এসব সেবার ক্ষেত্রে ভ্যাট ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে।

বিমান ভাড়া বাড়বে : বিমানের টিকিটে কয়েক বছর ধরে বাড়ানো হয়নি আবগারি শুল্ক। বিদেশে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাধ্য হয়ে নয়, কাজের প্রয়োজনে অথবা ভ্রমণের জন্য যেতে হয়। ফলে বিমান টিকিটে আবগারি শুল্ক বাড়ানো প্রয়োজন। শুধু বাড়ানো নয়, কিছু ক্ষেত্রে যৌক্তিকীকরণের প্রস্তাব করা হয়েছে। সেজন্য এনবিআরের প্রতিবেদনে ‘দি এক্সাইজ অ্যান্ড সল্ট অ্যাক্ট-১৯৪৪’ এ সংশোধনী আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, অভ্যন্তরীণ রুট ও সার্কভুক্ত দেশের বিমানের টিকিটে ৫০০ টাকা হারে আবগারি শুল্ক দিতে হয়। এটা যৌক্তিকীকরণের জন্য অভ্যন্তরীণ রুটে ২০০ টাকা বাড়িয়ে ৭০০ টাকা ও সার্কভুক্ত দেশে বর্তমানের দ্বিগুণ ১ হাজার টাকা করা হচ্ছে। এছাড়া এশিয়ার দেশগুলোয় ২ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে আড়াই হাজার টাকা এবং ইউরোপের দেশগুলোয় ৩ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ হাজার টাকা করা হচ্ছে। আবগারি শুল্ক বাড়ার ফলে টিকিটের দাম বাড়তে পারে।

এছাড়া সিগারেটের চারটি স্তরে দাম ও শুল্ক- দুটিই বাড়ানো হয়েছে। আদেশে বলা হয়েছে নিম্নস্তরে ১০ শলাকা সিগারেটের দাম ৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬০ টাকা করা হয়েছে। এতে প্রযোজ্য সম্পূরক শুল্ক ৬০ শতাংশ থেকে ৬৭ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়া মধ্যমস্তরে ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৬৫.৫ শতাংশ থেকে ৬৭ শতাংশ; উচ্চস্তরে ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪০ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৬৫.৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৬৭ শতাংশ এবং অতি উচ্চস্তরের দাম ১৬০ টাকা থেকে ১৮৫ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৬৫.৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৬৭ শতাংশ করা হয়েছে। লাইম স্টোন ও ডলোমাইটে ১০ শতাংশ হারে সম্পূরক শুল্ক বসানো হয়েছে। অন্যদিকে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক লেনদেন ৩০ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকা হলেই টার্নওভার কর দিতে হতে পারে। বর্তমানে ৫০ লাখ থেকে ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত টার্নওভার কর দিতে হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভ্যাট একটি প্রত্যক্ষ কর। এটি ভোক্তা দিয়ে থাকেন বলে একে ভোক্তা করও বলা হয়। যেহেতু ভ্যাট ভোক্তা দেন কাজেই ভ্যাট বাড়ানোর অর্থই হচ্ছে তাদের ওপর করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া। বর্ধিত ভ্যাট হার কার্যকর হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেবেন। ফলে জনগণকে আগের চেয়ে বেশি দামে পণ্য কিনতে হবে। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, ভ্যাট হার বাড়ানোর ফলে জিনিসপত্রের দাম আরেক দফা বাড়বে। এ উদ্যোগ মূল্যস্ফীতিকে উসকে দেবে। এতে বিশেষ করে নিম্ন ও স্বল্প আয়ের লোকদের জীবনযাপন আরো কঠিন হয়ে পড়বে। এর আগে গত ১ জানুয়ারি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ভ্যাট-শুল্ক বৃদ্ধির এনবিআরের প্রস্তাব পাস করা হয়। জাতীয় সংসদ না থাকায় অধ্যাদেশের মাধ্যমে শুল্ক-কর বৃদ্ধিও এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

এতে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সেবার খরচও বাড়বে। মোবাইল ফোনের ব্যবহারের ওপর সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৩ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে এখন থেকে মোবাইল ফোন ব্যবহারের খরচে সম্পূরক শুল্ক, ভ্যাট ও সারচার্জ ৩৯ শতাংশের পরিবর্তে ৪২.৪৫ শতাংশের বেশি দিতে হবে। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ওপর ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্কারোপ করায় ইন্টারনেট বিলও বাড়তে পারে। ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি এমদাদুল হক বলেন, ‘এতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এমন কঠিন পরিস্থিতিতে আমরা কীভাবে টিকে থাকব, তা নিয়ে আমরা সন্দিহান। আইএসপি সেবার মান আরো খারাপ হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা সরকারকে এ ধরনের পদক্ষেপ পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানাই। কারণ এতে শুধু ব্যবসার ক্ষতি হবে না, সেবার মান কমবে এবং গ্রাহকদের খরচও বাড়বে।’

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, ‘অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে ভ্যাট ও শুল্ক বাড়ানো ‘নজিরবিহীন’। তিনি বলেন, ‘এর আগে এমন কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। যদিও অন্তর্বর্তী সরকার বলছে, এ বর্ধিত ভ্যাট ও শুল্ক কম প্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর প্রভাব ফেলবে। কিন্তু এর প্রভাব ভোক্তাদের ওপরই পড়বে।’ তিনি আরো বলেন, ‘মানুষ এমনিতেই উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে পিষ্ট। এ সিদ্ধান্ত তাদের বোঝা আরো বাড়াবে। সরকারের রাজস্ব বাড়ানোর লক্ষ্য থাকলে কর ফাঁকি ঠেকানোর দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।’ ‘কর ফাঁকি রোধ করা গেলে এ ধরনের পদক্ষেপের প্রয়োজন হতো না এবং জনগণের কষ্টও লাঘব হতো’, যোগ করেন তিনি। পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারের ব্যবসায়ীয় নেতা মো. বশির উদ্দিন জানান, ভ্যাট-শুল্ক বৃদ্ধির ফলে এসব পণ্যের দাম স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে যাবে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যে বিরূপ প্রভাব পড়বে। সরকার ভ্যাট বাড়ানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে সাধারণ জনগণের ওপর চাপ বাড়বে। ফলে এসব পণ্য ও সেবার খরচ বাড়বে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close