বিশেষ প্রতিবেদক
জিডিপির প্রবৃদ্ধি নেমেছে ১.৮১ শতাংশে
রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ব্যবসা-বাণিজ্যে শ্লথগতির কারণে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে। গত জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ১.৮১ শতাংশে নেমেছে। এর আগের বছরের একই প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৬.০৪ শতাংশ। গতকাল সোমবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসের জিডিপির তথ্য প্রকাশ করেছে।
বিবিএসের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, গত বছর জানুয়ারি থেকে টানা তিন প্রান্তিক ধরেই জিডিপির প্রবৃদ্ধি ধারাবাহিকভাবে কমেছে। কৃষি, শিল্প ও সেবা- এ তিন খাতের উপাত্ত নিয়ে জিডিপি প্রকাশ করা হয়। গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে সবচেয়ে কম প্রবৃদ্ধি হয়েছে কৃষি খাতে। এ খাতে প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র দশমিক ১৬ শতাংশ। এর মানে কৃষি খাতে নামমাত্র প্রবৃদ্ধি হয়েছে। সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র ১.৫৪ শতাংশ। আর প্রথম প্রান্তিকে শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২.১৩ শতাংশ। বিবিএসের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘অর্থবছরের এক প্রান্তিকে জিডিপি এতটা কমে গেছে যে পরের প্রান্তিকগুলোয় বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি না হলে সার্বিকভাবে বার্ষিক জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়ানো কঠিন।’
বাংলাদেশের ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৬.৭৫ শতাংশ। যদিও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মধ্যবর্তী হিসাবে ৪ শতাংশে নেমে আসার পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। রাজনৈতিক অস্থিরতার বড় প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধিতে। জুলাই-আগস্টে চাকরিতে কোটাবিরোধী ও পরবর্তী সময় আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের লক্ষ্যে যে ছাত্র-জনতার আন্দোলন হয়েছে, তা ঠেকাতে একপর্যায়ে কারফিউ জারি করা হয়। তখন চলাচল সীমিত করা হয়। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যের গতি কমে যায়। এরপর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হলে শিল্পে উৎপাদন ব্যাহত হয়।
গত মাসে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) জানায়, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড উল্লেখযোগ্যভাবে শ্লথ হয়ে পড়েছে এবং এর ফলে চলতি অর্থবছর শেষে প্রবৃদ্ধি ৩.৮ শতাংশে নেমে আসবে। তবে সংস্থাটি মনে করে যে আগামী অর্থবছর, অর্থাৎ ২০২৫-২৬ অর্থবছরে অর্থনীতি চাঙা হবে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬.৭ শতাংশে উন্নীত হবে। বিবিএসের তথ্যানুসারে, জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে দেশের ভেতরে স্থিরমূল্যে ৮ লাখ ৪ হাজার ৯৪২ কোটি টাকার মূল্য সংযোজন হয়, যা গত ৪ প্রান্তিকের মধ্যে সর্বনিম্ন। আর ১১টি উপখাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১২.৬৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে খনিজ ও পাথর উত্তোলন খাতে। নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি আর্থিক ও বিমা খাতে।
"