মো. কামরুজ্জামান লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি
লামায় কোটি কোটি টাকার গাছ লুট
* গাছসহ পিকআপ জব্দ * বেপরোয়া সন্ত্রাসী চক্র
লামা বন বিভাগের ডলুছড়ি রেঞ্জের আওতাধীন সরই বন বিট এলাকায় একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সিন্ডিকেট গড়ে তুলে গাছ কেটে কোটি টাকা মূল্যের কাঠ পাচার করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পাহাড়ি ও বাঙালি মিলে একটি সশস্ত্র দল ওই সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। তারা লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের টঙ্গঝিরি এলাকায় ব্যক্তিমালিকাধীন বাগানের এসব কাঠ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। ওই চিহ্নিত সন্ত্রাসী গ্রুপ দিনরাত গাছ কেটে গাড়িযোগে সড়ক পথে লোহাগাড়ায় পাচার করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর সঙ্গে পাহাড়ি সন্ত্রাসী ও স্থানীয় অপাহাড়ি কয়েকজন গাছ ব্যবসায়ী জড়িত বলে জানা গেছে। এই পাচার কাজে সরই বিট কর্মকর্তার যোগসাজশ রয়েছে, তার নেতৃত্বেই সিন্ডিকেট গঠন করা হয়েছে বলেও জানা গেছে। গাছ লুটের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরই এলাকায় পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষসহ আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
দেশের পটপরিবর্তনের পর সুযোগ বুঝে পাহাড়ি শ্রমিকদের ব্যবহার করে গাছ কেটে সড়ক পথে পাচার করেছে। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অভিযোগ দেওয়ার পরও ওই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর গাছ পাচার বন্ধ হয়নি। উপরন্ত আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, গাছ লুট করার জন্য বিভিন্ন মহলকে পাচারকারী চক্র বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে ম্যানেজ করেছে। গত বুধবার গভীর রাতে বন বিভাগের বিশেষ টহলদল টঙ্গঝিরি এলাকা থেকে পাচারকালে একটি কাঠভর্তি পিকআপ জব্ধ করেছে। জব্দ পিকআপের মালিক টঙ্গঝিরি এলাকার আব্দুল করিমের ছেলে শেখ আহাম্মদ প্রকাশ গুন্নু।
লামা বন বিভাগের স্পেশাল টিমের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সংবাদ পেয়ে অভিযান চালিয়ে পাচারকালে কাঠবোঝাই পিকআপ (ঢাকা ল-২১৮) জব্দ করা হয়েছে।
এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান বন কর্তৃপক্ষ। সরেজমিনে পরিদর্শনে জানা গেছে, অবৈধভাবে কাঠ পাচারকারী সিন্ডিকেট টঙ্গঝিরি ও আশপাশ এলাকার প্রায় একশত
একর জায়গার মূল্যবান কাঠ কেটে পাচার করেছে। স্থানীয় কেয়াজুপাড়া পুলিশ ফাঁড়ি আইসিসহ পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে গিয়েও সন্ত্রাসীদের গাছ কাটা বন্ধ করতে পারেনি বলে অভিযোগ। এখন পর্যন্ত কাউকে আইনের আওতায় আনা হয়নি।
ক্ষতিগ্রস্ত মালিক পক্ষ জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়সারা অভিযানের কারণে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা লাগামহীন অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। মোবাইল নেটওয়ার্ক বিড়ম্বনায় সরই বিট কর্মকর্তা ফরেস্টার তানবির আহমদ বক্তব্য চেষ্টা করেও নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ডলুছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল্লাহ জানিয়েছেন, টঙ্গঝিরি এলাকার গাছ লুটের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে, লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, অবৈধভাবে গাছ পাচারের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
"