প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

শেখ হাসিনার বিবৃতিতে সমর্থন নেই দিল্লির

দ্য হিন্দুর প্রতিবেদন

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো বক্তব্যকে সমর্থন করে না দিল্লি। এ কথা বলেছেন বাংলাদেশ সফর করে যাওয়া ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। লোকসভার পররাষ্ট্রবিষয়ক স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি কংগ্রেস নেতা শশী থারুর।

সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফর ও অন্তর্বর্তী সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক বিষয়ে ভারতীয় পার্লামেন্টের পররাষ্ট্রবিষয়ক স্থায়ী কমিটিকে ব্রিফিং দেন পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে ভারতে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো সমালোচনাকে সমর্থন করে না ভারত। মিশ্রি বলেন, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হলেও ভারত সবসময় বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। দুই দেশের সম্পর্ক কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল বা সরকারের ওপর নির্ভরশীল নয়। বিক্রম মিশ্রির এ বক্তব্য ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বহুমুখী দিক এবং রাজনৈতিক প্রভাবকে নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছে।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক ফরেন অফিস কনসালটেশনে (এফওসি) যোগ দিতে গত সোমবার ঢাকা সফর করেন বিক্রম মিশ্রি। ভারতের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে থাকা বিক্রম মিশ্রি পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং সর্বশেষ প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে ঢাকা ত্যাগ করেন। তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনা তার বক্তব্য প্রচারের জন্য ‘ব্যক্তিগত যোগাযোগমাধ্যম’ ব্যবহার করছেন এবং ভারত সরকার তাকে কোনো প্ল্যাটফরম বা সুবিধা প্রদান করেনি। ভারত কখনো অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না। এটি ভারতের ঐতিহ্যবাহী নীতির অংশ।

বিক্রম মিশ্রি বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগগুলোর যথাযথ সত্যতার অভাব নিয়ে ভারত উদ্বিগ্ন। তবে তিনি জানান, সাম্প্রতিক ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশ ৮৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে, যা একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। তিনি আরো উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত সন্ত্রাসীদের মুক্তি এবং তাদের ভারতবিরোধী বক্তব্য ভারত সরকারের জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ সরকার ভারতের গণমাধ্যমে প্রচারিত ‘ভুল তথ্য প্রচার’ নিয়ে তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।

তিনি বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম বাণিজ্য ও সংযোগ অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, তার সাম্প্রতিক সফরের পর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের দৃশ্যমান উন্নতি হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দুই দেশের মধ্যে রেল, সড়ক এবং অভ্যন্তরীণ জলপথ সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। তবে তিনি জানান, দুই দেশের মধ্যে যাত্রীবাহী রেল পরিষেবা এখনো স্থগিত রয়েছে। বৈঠকে অনেক সদস্য বাংলাদেশে ইসকন ভক্তদের গ্রেপ্তার বিষয়ে প্রশ্ন তুললেও এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি বলে জানায় দ্য হিন্দু।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close