নিজস্ব প্রতিবেদক
অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চায় ভারত
![](/assets/news_photos/2024/12/10/image-489229.jpg)
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে গভীরভাবে কাজ করতে আগ্রহী ভারত। দিল্লি আশা করছে, দুই নিকট প্রতিবেশীর সম্পর্ক একটা ইতিবাচক এবং গঠনমূলক সম্পর্কের দিকে এগিয়ে যাবে। একই সঙ্গে সংল্যাঘলুদের নিরাপত্তার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে উদ্বেগের কথাও জানিয়েছে দেশটি। গতকাল সোমবার পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকের পর এসব কথা বলেন ঢাকা সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি।
দুই দেশের সম্পর্কের টানাপড়েনের মধ্যেই ঢাকায় আসেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। দুই দেশের সম্পর্কের টানাপড়েনের মধ্যেই ঢাকায় এসেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব। সোমবার সকাল ৮টায় ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি প্লেনে ঢাকায় পৌঁছান তিনি। ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া অনুবিভাগের ডিজি ইশরাত জাহান। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হওয়ার পর মিশ্রির প্রথম ঢাকা সফর এটি।
সফরকালে পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই প্রথম ঢাকায় বাংলাদেশ-ভারত উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হলো। এর আগে জাতিসংঘ অধিবেশনের সময় নিউইয়র্কে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠক হয়েছে।
বৈঠক শেষে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সাংবাদিকদের বলেন, পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিনের আমন্ত্রণে আমি ঢাকায় এসেছি। অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মুহূর্তে আমি ঢাকায় এসেছি, বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে আলোচনা এগিয়ে নেওয়ার জন্য। এ বছর আগস্টে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরে আমাদের উভয় দেশের নেতাদের মধ্যে প্রথম কথা হয়েছে। তাদের মধ্যে টেলিফোন আলাপ হয়েছে।
বিক্রম মিশ্রি বলেন, আমার এ সফর তারই অংশ। নতুন সরকারের সঙ্গে এটা প্রথম ফরেন সচিব মিটিং। আজকের এ আলোচনা আমাদের উভয়পক্ষকে এ সুযোগটা করে দিয়েছে। আমাদের মধ্যে খোলামেলা এবং গঠনমূলক মতবিনিময় হয়েছে। আমাদের আকাঙ্ক্ষা হলো-ইতিবাচক, গঠনমূলক এবং পারস্পরিক ও লাভজনক সম্পর্ক, যেটা বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে আমরা অতীতে দেখেছি ও আমরা ভবিষ্যতেও এটা দেখতে চাই।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক উভয় দেশের মানুষকেন্দ্রিক হবে জানিয়ে মিশ্রি বলেন, এ সম্পর্ক হবে মানুষকেন্দ্রিক। এটা উভয় দেশের জনগণের উপকারে আসবে এবং এর প্রতিফলন আমাদের প্রাত্যহিক ঘটনার মধ্যে পাচ্ছি। যার মধ্যে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ, পানি, এনার্জি, উন্নয়ন সহযোগিতা, কনস্যুলার সহযোগিতা এবং সাংস্কৃতিক যোগাযোগ রয়েছে। এ বিষয়গুলোর ওপর আমাদের কাজ চালিয়ে যেতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে আকাঙ্ক্ষার কথা তুলে ধরেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব। তিনি বলেন, ভারতের আকাঙ্ক্ষা হলো- অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে গভীরভাবে কাজ করা। একই সঙ্গে আমরা সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া ঘটনাবলি আলোচনা করেছি। সংখ্যালঘু ইস্যুতে আমি আমাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছি। সংখ্যালঘুর বিষয় নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ বলেছে, বিষয়টি দেখবে।
বিক্রম মিশ্রি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের দুই দেশের মধ্যে কিছু দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে, সেগুলো নিয়েও আমরা আলোচনা করেছি। ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক এবং কূটনৈতিক বিষয়ে আক্রমণের বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আমরা সার্বিকভাবে উভয়পক্ষের মধ্যে গঠনমূলক মনোভাব চাই। অপেক্ষায় আছি, আমাদের সম্পর্ক একটা ইতিবাচক এবং গঠনমূলক সম্পর্কের দিকে এগিয়ে যাবে। সংক্ষিপ্ত সফরে সোমবার সকালে ঢাকায় আসেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব। রাতে তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন।
"