কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে ‘পাপী বান্দার’ চিঠি
কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে এবার ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা পাওয়া গেছে। এর সঙ্গে পাওয়া গেছে এক বস্তা চিঠি ও চিরকুট। এসব চিঠিতে প্রেমে সফলতা, আরোগ্য লাভ, শিক্ষায় সাফল্য, মামলা থেকে মুক্তি, ভালো স্বামী বা স্ত্রী, সন্তান কামনা করা হয়েছে। যদিও অধিকাংশ চিঠিই বানান আর ভাষাগত ভুলেভরা। ‘পাপী বান্দা’ পরিচয়ে লেখা একটি চিঠিতে সৌদি আরবের কাউকে বিয়ে করার মনোবাসনা ব্যক্ত করা হয়েছে।
সাড়ে ৩ মাসের মাথায় পাগলা মসজিদের ১১টি দানবাক্স খোলা হয় গত শনিবার। এবার ১১টি দানবাক্সে চিঠিসহ ২৯ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। এর মধ্যে এক বস্তা চিঠি ছিল। পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শওকত উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, এসব চিঠি দানবাক্সে ফেলার কারণে বাক্সের বাড়তি জায়গা দখল করে। যে কারণে অনেক সময় বাক্স ভর্তি হয়ে যায়, কাঠি দিয়ে ঘা দিয়ে দিয়ে টাকা ঢোকাতে হয়। তিনি বলেন, কারো মনোবাঞ্ছা পূরণের জন্য দোয়া করতে পারেন। চিঠি দেওয়ার কোনো অর্থ হয় না। শেষ পর্যন্ত মসজিদ কমিটির সিদ্ধান্তে এসব পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
‘তোমার পাপী বান্দা’ পরিচয়ে চিঠি লিখেছেন এক নাম প্রকাশ না করা এক নারী। তিনি চিঠিতে লেখেন, ‘হে প্রিয় পাগলা মসজিদ, আমি একজন সৌদিয়ানকে (সৌদি অ্যারাবিয়ান) ভালোবাসি। হে মহান আল্লাহ তুমি তাদের (তাকে) আমার করে দাও। আমি যেন তাকে বিবাহ করিতে পারি (আমিন)। হে আমার রব, তুমি আমাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিও না। হে রব, তুমি আমারে নবীর (হযরত মুহাম্মদ (সা.) দেশে পবিত্র মাটিতে জন্মগ্রহণ করার সৌভাগ্য দিয়েছ...। আমি যেন আবার সেই সৌভাগ্য নিয়ে তোমার পবিত্র মাটিতে মৃত্যুবরণ করিতে পারি (আমিন)। আমি যেন পড়ালেখাই ভালো হতে পারি, আমার পরিবারে যেন শান্তি বয়ে আসে (আমিন)। আমি যেন হালাল রুজি রোজগার করিতে পারি (আমিন)। হে রব, হে মহান আল্লাহ তোমার কাছে দুই হাত তুলিয়া চাহিতেছি তুমি আমাকে মক্কাবাসীর ভালো এক উত্তম, দ্বীনি, সুদর্শন লোকের সহিত বিবাহ করিয়ে দাও (আমিন)।’ পাগলা মসজিদসংলগ্ন গাইটাল এলাকার বাসিন্দা সরকারি গুরুদয়াল কলেজের সাবেক শিক্ষক মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, এসব চিঠি মানুষের মাঝে এক ধরনের হাস্যরসের পরিবেশ সৃষ্টি করে। তিনিও সবাইকে এ ধরনের চর্চা বন্ধ করার আহ্বান জানান।
"