নিজস্ব প্রতিবেদক
সব সমস্যা সমাধানে জাতীয় সংলাপের আহ্বান
ড. কামাল
গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে যৌক্তিক সময় দেওয়া ও সার্বিক সহযোগিতা করা সব রাজনৈতিক দল ও জনগণের নৈতিক দায়িত্ব। এ বিষয়ে যে জাতীয় ঐকমত্য গড়ে উঠেছে, তা শেষ পর্যন্ত ধরে রাখা প্রয়োজন। এজন্য গণতন্ত্রমনা সব রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি ও নাগরিক সমাজের মধ্যে জাতীয় সংলাপ জরুরি বলে আমি মনে করি। গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে গণফোরামের সপ্তম জাতীয় সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ড. কামাল হোসেন। ড. কামাল হোসেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিগত ১৬ বছর ধরে ফ্যাসিস্ট সরকারের বন্দিদশা থেকে জনগণ নতুন করে মুক্তিলাভ করেছে। ছাত্র-জনতা আবারও প্রমাণ করেছে যে, এই দেশ কোনো স্বৈরশাসকের নয়, এ দেশ জনগণের।
ড. কামাল বলেন, জাতীয় ঐক্য না হওয়ার কারণে দেশ ও জাতির অনেক ক্ষতি হয়েছে। আর যাতে দেশ ও জাতির ক্ষতি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ২০২৪ ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের চেতনায় বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সবাই ঐক্যবদ্ধ হই।
গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, বিগত ১৬ বছরে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো নির্লজ্জ দলীয়করণের ফলে প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়েছিল। এসব প্রতিষ্ঠান সংস্কার করতে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে যে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে, তাদের যৌক্তিক সময় ও সার্বিক সহযোগিতা করা সব রাজনৈতিক দল ও জনগণের নৈতিক দায়িত্ব। যাতে তারা অভীষ্ট সংস্কার কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়।
তিনি আরো বলেন, দীর্ঘদিন ধরে গণতন্ত্রহীনতা ও জবাবদিহিহীন এক স্বৈরশাসনের কবলে পড়ে আইনের শাসন, ন্যায়বিচার, ভোটাধিকার ও মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ অবাধে লুটপাট, অর্থপাচার, সর্বগ্রাসী দুর্নীতি ও দলীয়করণের মাধ্যমে দেশ শাসনের ফলে সর্বত্র ভয়াবহ সংকট ও অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। এরই ফলশ্রুতিতে ছাত্র-জনতার এক অবিস্মরণীয় ও ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পতন ঘটেছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিগত ১৬ বছর ধরে ফ্যাসিস্ট সরকারের বন্দিদশা থেকে জনগণ নতুন করে মুক্তিলাভ করেছে। ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার এক নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। দেশের জনগণ স্বপ্ন দেখছে এক স্বাধীন ও বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশের। কোনো অশুভ শক্তির ষড়যন্ত্র যেন এই রক্তস্নাত বিজয় ও মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাধা সৃষ্টি করতে না পারে; সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। এই অর্জনকে সাফল্যের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে হবে।
"