নিজস্ব প্রতিবেদক
উসকানিতে পা না দিয়ে ধৈর্য ধরার আহ্বান
আইনজীবী আলিফ হত্যায় কঠোর শাস্তির আশ্বাস
ইসকন নেতা চিন্ময় ব্রহ্মচারীর মুক্তি দাবিতে আন্দোলনকারীদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহতের ঘটনায় সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ছাত্র-জনতাকে কোনো ধরনের উসকানিতে পা না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
একই সঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, এপিপি আলিফ হত্যাকারীদের অবশ্যই কঠোর শাস্তি হবে। তথ্য উপদেষ্টা তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ কথা বলেন। যদিও গতকাল চট্টগ্রাম নগরের টাইগারপাস মোড়ে প্রতিবাদ সমাবেশে আলিফ হত্যায় জড়িতদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে আইনজীবী নিহত হওয়ার ঘটনায় ছাত্র-জনতাকে কোনো ধরনের উসকানিতে সাড়া না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। তিনি বলেন, রাষ্ট্রদ্রোহ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকারই যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। সবাইকে ধৈর্য ধারণ করার এবং কোনো ধরনের উসকানিতে সাড়া না দেওয়ার আহ্বান রইল।
তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ফেসবুক পোস্টে বলেন, চট্টগ্রাম আদালতে যেভাবে একজন আইনজীবীকে চিন্ময় কৃষ্ণের সমর্থকরা কুপিয়ে হত্যা করল তা নজিরবিহীন। সবাইকে ধৈর্য ধারণ ও শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দ্রুতই সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা হবে। এদিকে বিকেলে ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, হঠকারিতা, নেতিবাচকতা ও ভাঙনের মানসিকতা থেকে বের হয়ে আমাদের সৃজনশীল ও ইতিবাচক মানসিকতায় এ রাষ্ট্রকে গড়তে হবে। এ রাষ্ট্র পরিগঠন করলেই শুধু জুলাইয়ের শহীদানসহ শহীদ আলিফের রক্ত অর্থবহ হয়ে উঠবে।
এর আগে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে আরেক পোস্টে মাহফুজ আলম লিখেছিলেন, সরকার দ্রুতই সব রাষ্ট্রদ্রোহী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। গণঅভ্যুত্থান ও বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে তিনি সবাইকে শান্ত থাকার এবং নিরীহ সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। এদিকে গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম নগরের টাইগারপাস মোড়ে প্রতিবাদ সমাবেশে আলিফ নিহতের ঘটনার জড়িতদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমার ভাই সাইফুলকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ইসকনকে (ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস) সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে অবশ্যই নিষিদ্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, ইসকন কীভাবে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের সহায়তায় ভারতের প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশে অশান্তি সৃষ্টি করছে তা আমরা ভুলে যাইনি। ধর্মের দোহাই দিয়ে উগ্রবাদী সংগঠন পরিচালনা করলে বাংলাদেশে এক হাত জায়গাও দেওয়া হবে না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক বলেন, বাংলাদেশে সব ধর্মের সহাবস্থান থাকবে। সবার অধিকার রক্ষায় আমরা কাজ করব। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
সমাবেশে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেন, এ চট্টলায় ইসকনের কোনো জায়গা হবে না। আমরা ১৬ বছরের খুনি হাসিনাকে দেশছাড়া করেছি। জঙ্গি ইসকনকে দেশছাড়া করা আমাদের কাছে হাতের ময়লা। এ সময় হাসনাত আবদুল্লাহর পাশাপাশি সারজিস আলম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাসেল আহমেদ, কেন্দ্রীয় সহসমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদসহ উপস্থিত সবাই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইনজীবী হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
"