নিজস্ব প্রতিবেদক
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ
ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাজধানী ঢাকায় ৪ ও চট্টগ্রামে ৬ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। ঢাকায় শাহবাগসহ তিনটি এলাকায় টহল দিচ্ছে বিজিবি। গতকাল মঙ্গলবার সকালে এ তথ্য জানিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, রাজধানীর শাহবাগ, মৎস্য ভবন ও হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল এলাকায় ৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। একইসঙ্গে চট্টগ্রাম মহানগরীতেও ৬ প্লাটুন বিজিবি সদস্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে দায়িত্ব পালন করবেন। আগের দিন সোমবার যাত্রাবাড়ী-ডেমরা এলাকায় ৬ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়। ওইদিন দুপুরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ এবং ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের (ডিএমআরসি) শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। রাজধানীর ডেমরা-যাত্রাবাড়ী এলাকায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন স্থানীয় লোকজনও। রবিবার পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালান মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ কলেজের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু ভুল চিকিৎসার কারণে হয়েছে- এমন অভিযোগের জেরে ওই হামলা চালানো হয়েছিল। এ ঘটনার পর দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। ব্রিফিংয়ে দেশে পরিকল্পিতভাবে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে জানিয়ে তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, বড় ধরনের পরিকল্পনা না থাকলে এক দিনে (সোমবার) এতগুলো ঘটনা কাকতালীয় না। সরকার মনে করছে, এখানে নানা পক্ষের পরিকল্পনা আছে। সরকার সফলভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করুক, এটা হয়তো অনেকেই চাইছে না। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার নানাভাবে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। পরিকল্পিতভাবে অস্থিরতা তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে। এতে বলা হয়, পরিকল্পিতভাবে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে বলে মনে করে সরকার। গত দুদিনে ঢাকা শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বিশৃঙ্খলা-ভাঙচুরের যেসব ঘটনা ঘটেছে, তা বড় ধরনের পরিকল্পনার অংশ বলেই ভাবছে সরকার। হামলা, ভাঙচুর ও মারধরের ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে সরকার। এ ধরনের কার্যক্রম সহ্য করা হবে না।
এ হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় কারো ইন্ধন আছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, অনেক ধরনের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। তবে সুষ্ঠু তদন্ত করার আগপর্যন্ত কোনো কিছুই বলা যাবে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীর বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পুলিশের দুর্বলতা ছিল। দুর্বলতা ছিল দেখেই তো আসলে ঘটনা সংঘর্ষের দিকে গেছে। পুলিশ একটি পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার ভেতরে আছে। সেই জায়গায় যখন এত এত শিক্ষার্থী নেমে এসেছে, পুলিশ যদি শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি অবস্থানে যেত, তাহলে সেটি আরো বেশি খারাপ দিকে যেতে পারত। এ কারণ হয়তো পুলিশ প্রাথমিকভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে, কিন্তু শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়নি। পরে অবশ্য পুলিশ ও সেনাবাহিনী সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। পুলিশকে আরো সক্রিয় করার জন্যই একটি রদবদল করা হয়েছে এবং এ রদবদল অব্যাহত থাকবে। যেখানে ব্যর্থ হচ্ছে সেখানে পরিবর্তন করা হবে।
ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে আটকের বিষয়েও প্রশ্ন করা হয়। এর জবাবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) জানাবে। তবে তারা যেটা জানেন, তাকে আটক করা হয়েছে এবং তার নামে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা আছে।
"