মেহেদী হাসান

  ২৭ নভেম্বর, ২০২৪

ভেতরে সিন্ডিকেট বাইরে ভারত

হুট করেই বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে আলু-পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। দেশটিতে উৎপাদিত আলু ও পেঁয়াজ অন্য দেশে সরবরাহ করবে না বলে গতকাল মঙ্গলবার রপ্তানিতে স্লট বুকিং বন্ধ করে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। এতে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আলু ও পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে। আমদানি বন্ধের খবরে দেশে বেড়ে গেছে সব ধরনের আলু ও পেঁয়াজের দাম। একদিকে দেশের ভেতরে অতিমুনাফালোভী সিন্ডিকেট, অন্যদিকে প্রতিবেশী দেশ ভারত রপ্তানি বন্ধ করায় নিত্যপ্রয়োজনীয় এই দুই পণ্যের মূল্যে ফের অস্থিরতার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার সক্ষমভাবে সিন্ডিকেট মোকাবেলা করতে না পারলে আলু-পেঁয়াজের দাম আকাশছোঁয়া হতে পারে।

দেশে বর্তমানে পাইকারি বাজারে ভারতীয় আলু ৭০ টাকায়, দেশি আলু ৭৫ টাকায় এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে ঢাকাসহ সারাদেশে দেশি পেঁয়াজ ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা এবং আমদানি করা পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারতের রপ্তানি বন্ধের ঘোষণায় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আলু-পেঁয়াজের কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বাড়তে পারে।

গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে হিলি বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি হয়নি, তবে আগের বুকিং করা দুই ট্রাক আলু আমদানি হয়েছে। প্রতিকেজি আলু ৭০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে বন্দরে। যদিও একদিনের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে আলুর দাম, তবে স্বাভাবিক রয়েছে পেঁয়াজের দাম। সবশেষ রবিবার ১৪ ট্রাকে ৩৯৬ টন পেঁয়াজ ও ৭২ ট্রাকে ২ হাজার টন আলু আমদানি হয়েছে এ বন্দর দিয়ে। এরপরই রপ্তানিতে স্লট বুকিং বন্ধ করে দেয় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। আমদানি বন্ধের খবর পেলেই বাংলাদেশের আলু-পেঁয়াজ সিন্ডিকেট সুযোগের সদ্ব্যবহার করে। বাজার থেকে লুটে নেয় শত শত কোটি টাকা।

পেঁয়াজ সিন্ডিকেট : পেঁয়াজ উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় থাকা বাংলাদেশ পণ্যটি আমদানিতেও রয়েছে ১ নম্বরে। চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম হওয়ায় কিছুটা আমদানিনির্ভরতা পণ্য পেঁয়াজ। আর সেই সুযোগে সরবরাহ চেইনে সামান্য কমবেশি হলেই সুযোগ নেয় ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। কৃষক ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি নেই। আগাম এন৫৭ জাতের পেঁয়াজ বাজারে আসায় খুব বেশি প্রভাব পড়বে না। ভোক্তার সচেতনতা অনেকটাই পরিস্থিতি পাল্টে দিতে পারে।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) হিসাবে, পেঁয়াজ উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। তথ্যমতে, দেশে পেঁয়াজের নিট উৎপাদন ২২ লাখ থেকে ২৩ লাখ টন। অন্যদিকে চাহিদা রয়েছে ৩০ লাখ থেকে ৩২ লাখ টন। তাই অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ও বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানির পরও চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না সিন্ডিকেটের কারণে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য বলছে, ২০২২ সালে ৭ লাখ ২৭ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করে বাংলাদেশ। ওই বছর বিশ্বের আর কোনো দেশ বাংলাদেশের চেয়ে বেশি পেঁয়াজ আমদানি করেনি। ২০২৩ সালের ১১ মাসে পেঁয়াজের আমদানি হয় ৮ লাখ ৬৪ হাজার টন। পরবর্তীতে এই সংখ্যা ছাড়িয়ে যায়।

ভারত সরকার ২০২৩ সালের ৭ ডিসেম্বর এক ঘোষণায় পেঁয়াজ রপ্তানি চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত নিষিদ্ধ করে। এতে ওইসময় দাম বেড়ে গিয়ে ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে দাঁড়ায়। রমজান উপলক্ষে দেশে পেঁয়াজের চাহিদা মেটাতে ও দামের ঊর্ধ্বগতি রোধে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতকে অনুরোধ জানালে তাতে সাড়া দেয় দেশটি। এরপর ২ মার্চ ভারত থেকে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পায় বাংলাদেশ। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভারতীয় রপ্তানিকারকরা ৩১ মার্চ পর্যন্ত এ পেঁয়াজ বাংলাদেশে রপ্তানির অনুমতি পায়। কিন্তু বছর শেষ হওয়ার আগেই মঙ্গলবার পেঁয়াজ ও আলু রপ্তানি বন্ধ করল ভারত সরকার। ফলে দেশের বাজারে আলু-পেঁয়াজের দাম ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

চলতি বছরের মার্চের শেষে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। অথচ মার্চের মাঝামাঝিতে পেঁয়াজের কেজি ৫০ থেকে ৫৫ টাকার মধ্যে ছিল। অর্থাৎ এক রাতের ব্যবধানে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়ে যায় সিন্ডিকেটের কারণে। দেশের বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের বাজার চট্টগ্রামের চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট কেজিপ্রতি ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয় পেঁয়াজের দাম।

আলু সিন্ডিকেট: বছরজুড়েই অস্থির রয়েছে আলুর বাজার। চলতি বছরের এপ্রিলে একলাফে কেজিতে ১৫-২০ টাকা বেড়ে দাম হাফসেঞ্চুরি পার করে আলু। এর নেপথ্যে কাজ করে বৃহৎ সিন্ডিকেট। হিমাগারের নিয়োগ করা এজেন্টরা ভরা মৌসুমে জমি থেকেই কেনেন প্রান্তিক কৃষকের আলু। এরপর হিমাগারে রাখা, বাজারজাত করা, কী দামে কেনা হবে, কী দামে বিক্রি হবে- সবই নিয়ন্ত্রণ করেন এজেন্টরা। মধ্যস্বত্বভোগী, মজুদদার, আড়তদার ও হিমাগার মালিক এবং এজেন্টদের কারণেই মূলত আলুর বাজার বছরজুড়ে টালমাটাল।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রান্তিক কৃষকের আলু হিমাগার মালিক ও এজেন্টদের হাতে তুলে দেন বড় চাষিরা। হিমাগার মালিকদের যোগসাজশে আলু হিমায়িত হয়। তারা হাজার হাজার বস্তা আলু মজুদ করে রাখেন। এরপর হিমাগার থেকে আলু মধ্যস্বত্বভোগী বা ফড়িয়ার মাধ্যমে যায় মোকামে। মোকাম থেকে উঠে আড়তে। সেখান থেকে কেনেন পাইকারি বিক্রেতা। সর্বশেষ সেখান থেকে যায় খুচরা পর্যায়ে বিক্রির জন্য। এভাবে ছয়হাত ঘোরার পর ক্রেতার হাতে আসে আলু। ফলে বাড়তি দামে বিক্রির জন্য তদারকিও করেন মধ্যস্বত্বভোগী, মজুদদার, আড়তদার ও হিমাগার মালিক। তারা কৃত্রিম সংকট কিংবা দাম বৃদ্ধির অজুহাতে হাতিয়ে নেন বিপুল পরিমাণ অর্থ। সরকারের বিভিন্ন মহল এ সিন্ডিকেট ভাঙার উদ্যোগ নিলেও তাতে সফল হয়নি। বারবার অভিযান চালিয়েও ভাঙতে পারেনি সিন্ডিকেট, উল্টো বন্ধ রাখতে হয়েছে অভিযান। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরও সেই পুরনো সিন্ডিকেট ‘দারুণ খেল’ দেখাতে থাকে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, দেশে বর্তমানে বছরে আলুর চাহিদা ৯০ লাখ টন। সবচেয়ে বেশি আলু উৎপাদন হয় মুন্সীগঞ্জ, রংপুর, বগুড়া ও জয়পুরহাটে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪ লাখ ৬২ হাজার হেক্টর জমিতে। এতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১ কোটি ১৬ লাখ ২২ হাজার টন। তবে মৌসুম শেষে ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমি থেকে ১ কোটি ৯ লাখ ৫৪ হাজার ৫০২ টন আলু উৎপাদন হয়। বছর শেষে যা উৎপাদন পাওয়া যায় তা আগামী মৌসুমের লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ধরা হয়। গত মৌসুমে হেক্টরে ফলন হয় ২৩.৯০ টন। এর মধ্যে উচ্চফলনশীল আলু আবাদ করা হয় ৩ লাখ ৯৩ হাজার হেক্টর জমিতে। আর স্থানীয় আলু আবাদ করা হয় ৫৬ হাজার ৫০৫ হেক্টর জমিতে।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) হিসাবে, দেশে উৎপাদিত আলুর প্রায় ২৫ শতাংশ বিভিন্ন কারণে নষ্ট হয়ে যায়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, গত অর্থবছরে দেশে আলুর উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ৪ লাখ ৩১ হাজার টন। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে ১ কোটি ১ লাখ ৪৪ হাজার ৮৩৫ টন এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ৯৮ লাখ ৮৭ হাজার ২৪২ টন আলু উৎপাদন হয়। সংশ্লিষ্টদের হিসাব অনুযায়ী উৎপাদন মৌসুম পরবর্তী পচন ও বিনষ্টের কারণে প্রতিবছর দেশে প্রায় ২৬-২৭ লাখ টন আলু নষ্ট হয়ে যায়। এরপরও দেশে আলুর উৎপাদনের তুলনায় চাহিদা পূরণ সম্ভব।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারওয়ানবাজারের এক পাইকারি আলু ব্যবসায়ী প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, আলুর এত দাম সিন্ডিকেটের কারণে। বাজারে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করেন তারাই। মোকামে আলু নিতে গেলে বলেন দাম বেশি। দাম বেশি করে সাপ্লাই চেইনে থাকা স্টোরেজ আর বড় বড় ব্যবসায়ী। আমরা পাইকারিতে বিক্রি করছি ৪৮-৫০ টাকা কেজি। খুচরায় কোথাও কোথাও ৬০ টাকা আবার কোথাও ৭৫ টাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারওয়ানবাজারের এক পাইকারি আলু বিক্রেতা বলেন, বেপারিরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। আমাদের কিছু করার নেই। কৃষকের ২৫ টাকা কেজির আলু ঢাকায় ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নতুন আলু ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হতে পারে। বাজারে অভিযান হয় কিন্তু হিমাগার কিংবা মোকামে অভিযান হয় না। হাজার টাকা মণ আলু কিনে ২ হাজার টাকা মণ বিক্রির সঙ্গে কারা আছে মোকামে গেলেই জানতে পারবেন।

বাংলাদেশ কোল্ডস্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন বা হিমাগার সমিতি বছরের শুরুতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিল, এবার বছরব্যাপী প্রতিকেজি আলু ৫০ টাকার ওপরে কিনতে হবে। অথচ এ ভবিষ্যদ্বাণী করার পর মৌসুম শেষ হতে না হতেই পঞ্চাশে ঠেকে আলুর দাম। বছর শেষে আবার আলুর মৌসুম আসলেও কমেনি দাম। বরং বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়।

বাংলাদেশ কোল্ডস্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে সারাদেশের কোল্ডস্টোরেজে ২২ লাখ টন আলু মজুদ ছিল। চলতি বছরে আরো ২ লাখ টন আলু বেশি মজুদ হওয়ার সম্ভাবনা জানায় তারা। ফলে ২৫ লাখ টনের বেশি আলু মজুদ ছিল হিমাগারে। তবে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) সূত্র জানিয়েছিল, সেসময় অনেক কোল্ডস্টোরেজ ফাঁকা ছিল। ফলে এবার আলুর দাম ৮০ টাকার ওপরে উঠে যাওয়ার ভয়ে আমদানির অনুমতি দিয়েছিল সরকারি সংস্থা- যাতে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। সাধারণত মে-জুন-জুলাই মাসে আলু কোল্ডস্টোরেজ থেকে বের হয়। কিন্তু এবার মে মাসে কোল্ডস্টোরেজ খুলে দেওয়ার দাবি জানালে তা দাম বাড়ার শঙ্কায় সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি তৎকালীন সরকার। ফলে একচেটিয়া সিন্ডিকেটের হাতে বাজার তুলে দেয় হাসিনা সরকার। উপরন্তু আওয়ামী সরকার আমদানি করে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেছে কিন্তু দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণতা নিয়ে ততটা মাথা ঘামায়নি।

বাংলাদেশ কোল্ডস্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, এবার কৃষকের কাছ থেকেই বেশি দামে আলু বাজারে এসেছে। কৃষকরা জমি থেকে ২৫ টাকা থেকে আলু বিক্রি শুরু করেন। এখন ৪০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। হিমাগারে রাখা আলুর দামও বেশি পড়েছে। এছাড়া গত বছর আলুর যে সংকট হয়েছিল তা কাটিয়ে ওঠার জন্য বাড়তি যে উৎপাদন দরকার ছিল, সেটা হয়নি।

খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি, দেশে এখনো আলু-পেঁয়াজের সংকট নেই। আমদানি ও দেশে উৎপাদিত আলু-পেঁয়াজের বিশাল মজুদ রয়েছে বিভিন্ন গুদামে। স্বল্প সময়ের জন্য মজুদ করলেও তা প্রভাব ফেলে বাজারে। ব্যবসায়ীদের হিসাবে, বর্তমানে দেশে পেঁয়াজের চাহিদা বছরে প্রায় ৩৬ লাখ টন। তবে সরকারি হিসাবে ২৫ লাখ টনের কিছু বেশি। সে হিসাবে একদিনে দেশের বাজারে গড়ে প্রায় ৯০ থেকে ৯৮ লাখ কেজি পেঁয়াজের লেনদেন হয়। ফলে প্রায় ১ লাখ কেজি পেঁয়াজ বাজারে কমবেশি করতে পারলেই দাম ওঠানামা করানো যায়। আলু রোপণ মৌসুম শুরু হওয়ায় আলুর দাম বেশি। তবে নতুন আলু বাজারে আসলে দাম কমে যাবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন রপ্তানিকারক বলেন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় হঠাৎ করে পেঁয়াজ ও আলুর দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে রাজ্য সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমাদের যেসব গাড়ি লোডিং অবস্থায় রয়েছে সেগুলোর স্লট বুকিং না দিলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো। এ বিষয়ে আমরা আলোচনা করব।

হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন শিল্পী বলেন, ভারত থেকে পণ্য আমদানি করতে পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সরকারের স্লট বুকিং নিতে হয়, যা অনলাইন সিস্টেমে। হঠাৎ করে রবিবার অনলাইন সিস্টেম বন্ধ করে দিয়েছে বলে জানান ভারতের রপ্তানিকারকরা। ফলে স্লট বুকিং দিতে পারছে না তারা। যার কারণে পেঁয়াজ ও আলু আমদানিতে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি হয়নি, তবে আগের বুকিং করা আলু সোমবার এসেছে দুই ট্রাক। স্লট বুকিং খুলে না দিলে আজ থেকে আলু ও পেঁয়াজ বন্দর দিয়ে আমদানি হবে না।

এ বিষয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, বাজারে নতুন আলু আসতে শুরু করেছে। ভোক্তা নতুন আলু কিনতে শুরু করলে পুরাতন আলুর চাহিদা এমনিতেই কমে আসবে। আমরা আলুর বীজের দাম ও সারের যোগান বিষয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। খেয়াল রাখতে বলেছি কৃষকরা যেন খাওয়ার আলু বীজ হিসেবে রোপণ শুরু না করে। এছাড়া জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে মিটিং করে করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close