প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

ইসলামাবাদ অভিমুখে গণযাত্রা থেকে ৪০০০ গ্রেপ্তার

ইমরান খানের মুক্তি দাবি

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কারামুক্তি ও বর্তমান সরকারের পদত্যাগ দাবিতে ফের উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজধানী ইসলামাবাদ। গতকাল সোমবার ইসলামাবাদ অভিমুখে গণযাত্রা থেকে ইমরানের দল পিটিআইর ৪ হাজার কর্মী-সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এছাড়া ইসলামাবাদে লকডাউন জারি করে বিক্ষোভ-সমাবেশ নস্যাতের চেষ্টা চালাচ্ছে শাহবাজ সরকার। খবর বিবিসি ও আলজাজিরার।

ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) ও সমর্থকদের দাবি, নির্বাচনে জালিয়াতি করে ক্ষমতায় এসেছেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও তার শরিকরা। তাই তাদের পদত্যাগ করতে হবে। ইমরান খানসহ পিটিআই দলের যে নেতারা বন্দি আছেন, তাদের সবাইকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। ইমরানের মুক্তির দাবিতে পিটিআই সারা দেশ থেকে ইসলামাবাদ অভিমুখে গণযাত্রা ও রাজধানীতে সমাবেশের ডাক দেয়। তবে সমাবেশ ভণ্ডুল করতে ইমরানের হাজারো সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পাঞ্জাব প্রদেশের নিরাপত্তা কর্মকর্তা শাহিদ নওয়াজ জানান, সোমবার এক দিনে অন্তত ৪ হাজার জনকে আটক করা হয়ছে। গ্রেপ্তারদের মধ্যে পিটিআই দলের পাঁচ পার্লামেন্ট সদস্যও আছেন।

লাহোরেও পুলিশ পিটিআইয়ের প্রচুর কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ জানায়, যেকোনো ধরনের জমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। নিরাপত্তার কারণে ইসলামাবাদের অনেক জায়গায় ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখোয়া থেকে ইসলামাবাদে আসার সব রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী ও ইমরানের ঘনিষ্ঠ নেতা আলি আমিন গান্দাপুর ভিডিওবার্তায় বলেন, মানুষ যেন শহরের ডি চকে জমায়েত হন। যতক্ষণ পর্যন্ত দাবি পূরণ না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত ওখানে অবস্থান করার জন্য ইমরান খান নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিকে পুলিশের অভিযোগ, গোলযোগ সৃষ্টির জন্যই এ বিক্ষোভ ডাকা হয়েছে।

ইমরানের দলের নেতাদের দাবি, অন্যায়ভাবে তাদের নেতাকে জেলে বন্দি করে রাখা হয়েছে। ২০২২ সালের এপ্রিলে পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাবে হেরে গিয়ে ক্ষমতা হারাতে হয় ইমরান খানকে। ২০২৩ থেকে থেকে তিনি জেলে বন্দি। তার তিন বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গত ডিসেম্বরে ইমরানকে জামিন দেওয়া হয়। কিন্তু আইনি জটিলতায় তিনি মুক্তি পাননি। ইমরানের বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১৫০টির মতো ফৌজদারি মামলা করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও পাকিস্তানে তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয়। তার সমর্থকদের দাবি, ইমরানের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মামলা করা হয়েছে। ইমরান অবশ্য তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

খাইবার পাখতুনখোয়ায় শিয়া-সুন্নি সহিংসতায় ৮০ জন নিহত : পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়ার উপজাতীয় জেলা কুররামে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় তিন দিনে অন্তত ৮০ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরো ১৫৬ জন। সর্বশেষ সোমবার সেখানকার বিবদমান গোষ্ঠীগুলো সাত দিনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। সেখানকার কর্তৃপক্ষই এ আলোচনায় মধ্যস্থতা করেছে। এ সহিংসতার প্রতিবাদে লাহোরসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রতিবাদ মিছিলের খবর পাওয়া গেছে। আফগান সীমান্তের কাছে কুররামে সহিংসতার সূচনা হয়েছিল গত বৃহস্পতিবার। শিয়া মুসলিমদের একটি গাড়ি বহরে একজন বন্দুকধারীর হামলার পর সহিংসতা শুরু হয়। এতে অন্তত ৪০ জন নিহত হওয়ার পর শুরু হয় প্রতিশোধমূলক পাল্টা হামলা। সেখানকার শিয়া ও সুন্নি মুসলিমদের মধ্যে কয়েক দশক ধরে ভূমি নিয়ে বিরোধের জেরে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হয়ে আসছে।

মধ্যস্থতার পর সরকারি মুখপাত্র মুহাম্মদ আলী সাইফ বলেন, শিয়া ও সুন্নি উভয় সম্প্রদায়ের নেতারা সহিংসতা বন্ধ করতে একমত হয়েছেন। স্থানীয় প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘সংঘর্ষ ও গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় ২১ নভেম্বর থেকে তিন দিনে মারা গেছেন ৮২ জন ও আহত হয়েছেন ১৫৬ জন। তিনি আরো বলেন, নিহতদের মধ্যে ১৬ জন সুন্নি সম্প্রদায়ের। অন্যরা শিয়া মুসলিম। পাকিস্তানের ওই অঞ্চলে প্রায়ই সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে ভূমিসংক্রান্ত বিরোধের কারণে এসব সহিংসতা বেশি হয়ে থাকে। তবে কুররাম এলাকাটির সঙ্গে আফগানিস্তানের কয়েকটি প্রদেশের সীমান্ত আছে। আফগানিস্তানেরও ওই এলাকাটিতে শিয়াবিরোধী জঙ্গি গোষ্ঠীর অবস্থান রয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close