নিজস্ব প্রতিবেদক
সরকার পতনে ৫০০ কোটি টাকা দিয়েছি : ইলিয়াস খান
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫০০ কোটি টাকা জোগাড় করে দেওয়ার বক্তব্য দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল বিএনপি নেতা ইলিয়াস খান। কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এ নেতা গত বৃহস্পতিবার রাতে শেরপুরের নালিতাবাড়ী শহরের আড়াইআনী বাজারে দলীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এমন বক্তব্য দেন। তার এ বক্তব্যের ভিডিও মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড পেজে ছাত্র আন্দোলনে ৫০০ কোটি টাকা জোগাড় করে দেওয়ার এই বক্তব্যটি আপলোড করা হয়। এটি নিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের নানা ধরনের নেতিবাচক মন্তব্য করতে দেখা গেছে।
সাবেক যুবদল নেতার এমন বক্তব্যেও ফলে স্থানীয় কেন্দ্রীয় বিএনপির অনেকেই বিরূপ মন্তব্য করছেন। নেতাকে হাইব্রিড ও অতি উৎসাহী আখ্যা দিয়ে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরাও সামাজিকমাধ্যমে ট্রল করছেন। তার এমন বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের ব্যাখ্যা চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও সাধারণ জনতা। ইলিয়াস খানের বক্তব্যটি আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রচার করায় সাধারণ মানুষের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
ওই ভিডিও বক্তব্যে ইলিয়াস আরো বলেন, দীর্ঘ ৩০ বছরে আমি এই দলে (বিএনপিতে) ৩০০ কোটি টাকা ব্যয় করেছি। আমরা বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে কথা বলেছি এবং বিভিন্ন জায়গায় লোকদের সঙ্গে কথা বলেছি, আন্দোলনে আমাদের টাকা লাগবে, আমরা সেই টাকা সংগ্রহ করেছি। টাকা দিয়ে ইলিয়াস খানকে ডিজিএফআই-এনএসআই কখনো কিনতে পারে নেই, পারবে না।
এদিকে ইলিয়াস খানের এমন বক্তব্যে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিব্রতবোধ করছেন জানিয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক গোলাম কিবরিয়া মাকসিম বলেন, এমন অপরিপক্ব বক্তব্যে দলকে ছোট করা হয়েছে, যা অপ্রত্যাশিত। ইলিয়াস খানের এমন বক্তব্যের নিন্দা জানাই। নালিতাবাড়ী উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক প্রফেসর নুরুল আমিনের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে ফোন কেটে দেন।
ইলিয়াস খান দলের (বিএনপির) কেউ নয় জানিয়ে শেরপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বলেন, তিনি (ইলিয়াস খান) আমাদের জেলা ও উপজেলা বিএনপির কেউ নয়। সুতরাং এ বক্তব্য এটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। জেলা বিএনপি এমন বক্তব্যের দায় নেবে না।
সভায় নালিতাবাড়ী উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক প্রফেসর নুরুল আমিনসহ অন্যান্য নেতা উপস্থিত ছিলেন। এ ব্যাপারটা জানেন কিনা জানতে চাইলে অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়টা নিয়ে আমরা কথা বলেছি। আমরা আর ইলিয়াসের কো সভায় যাব না। ইলিয়াস খান কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহআন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন কিনা জানতে চাইলে সিরাজুল ইসলাম বলেন, কবে কোন কমিটিতে ছিল এটা আমরা জানি না। এটা সে-ই ভালো বলতে পারবে। এ বিষয়ে জানতে ইলিয়াস খানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেনি।
জানা গেছে, ইলিয়াস খান যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী, তার বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট উপজেলার দারা ইউনিয়নের চাঁদশ্রী গ্রামে। বাসা ময়মনসিংহে। তিনি প্রায় দুই যুগ পরে দেশে এসেছেন। এখন বিএনপির নেতা পরিচয়ে শেরপুরের ২ নম্বর আসনে (নকলা-নালিতাবাড়ী) সভাসমাবেশ ও গণসংযোগ করছেন বলে জানা গেছে। স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেত্রী মতিয়া চৌধুরী এ আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন। এখন এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন নেওয়ার চেষ্টায় আছেন ইলিয়াস খান।
"