নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৭ নভেম্বর, ২০২৪

বেসরকারি দুই হজ প্যাকেজ ঘোষণা

সম্প্রতি আগামী বছরের জন্য হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। তারা দাবি করেছে, এবার সরকারি দুটি প্যাকেজে গত বছরের চেয়ে ১ লাখ টাকার বেশি খরচ কমেছে। তবে সরকারের এ হজ প্যাকেজ প্রত্যাখ্যান করে ৪৫ হাজার এবং প্রায় ১ লাখ ২৪ হাজার টাকা বেশিতে পৃথক হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন সাধারণ হজ এজেন্সির মালিকরা। গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে সাধারণ হজ এজেন্সির মানিকদের ব্যানারে ‘বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ প্যাকেজ ২০২৫ ঘোষণা’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পাল্টা এ প্যাকেজ ঘোষণা করেন তারা।

সরকার ‘সাধারণ হজ প্যাকেজ-১’ ও ‘সাধারণ হজ প্যাকেজ-২’ নামে দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছ। এ প্যাকেজগুলোর মূল্য ধরা হয়েছে যথাক্রমে ৪ লাখ ৭৮ হাজার ২৪২ এবং ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা। আর এজেন্সি মালিকরা যে দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন তার মধ্যে ‘সাধারণ প্যাকেজ’ ৫ লাখ ২৩ হাজার টাকা আর ‘বিশেষ প্যাকেজ’ ৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। সংবাদ সম্মেলনে মালিকরা জানান, সরকার যে হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে এতে শুভঙ্করের ফাঁকি রয়েছে। এতে হাজিদের খরচ কমবে না, বরং বাড়বে। হাবের সাবেক মহাসচিব ফারুক আহমেদ সরদার বলেন, হাজিদের সুবিধার্থে আমরা দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করছি। এর মধ্যে একটি সাধারণ, অন্যটি বিশেষ। আমাদের প্যাকেজে সেবার মান উন্নত করা হয়েছে। সবার সামর্থ্যরে মধ্যে রেখেই সাধারণ প্যাকেজটির মূল্য ধরা হয়েছে। এ প্যাকেজে সৌদি অংশের খরচ ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। এর মধ্যে থাকবে মক্কা-মদিনায় বাসা ভাড়া, জমজম পানি, সার্ভিস চার্জ, খাওয়া খরচ ইত্যাদি। আর বাংলাদেশ অংশের খরচ ধরা হয়েছে ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে রয়েছে বিমান ভাড়া ১ লাখ ৬৭ হাজার ৮২০ টাকা, হজযাত্রীদের কল্যাণ তহবিল, প্রশিক্ষণ ফি, হজ গাইড ফি ইত্যাদি।

তিনি আরো জানান, সাধারণ প্যাকেজে থাকবে- হজ ভিসা ও সৌদি আরবে যাওয়া-আসার বিমান টিকিট সরবরাহ, মক্কায় মসজিদুল হারামের বাইরের চত্বর থেকে সর্বোচ্চ ৩ কিলোমিটার এবং মদিনায় মসজিদে নববী থেকে সর্বোচ্চ দেড় কিলোমিটারের মধ্যে মারকাজিয়া এরিয়ার বাইরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হোটেল বা বাড়ি। প্রতি রুমে সর্বোচ্চ ৬ জনের আবাসন; মিনায় তাঁবুতে ম্যাট্রেস, চাদর, কম্বল ও বালিশের ব্যবস্থা; আরাফায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত তাঁবুর ব্যবস্থা; মিনা ও আরাফাতে মোয়াল্লেমের মাধ্যমে খাবার পরিবেশন; মক্কা-মিনা-আরাফাত-মুজদালিফায় যাতায়াতের জন্য বাসের ব্যবস্থা; হজযাত্রী ও গাইডদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ; হজ ও ওমরাহ নির্দেশিকা, আইডি কার্ড ও লাগেজ ট্যাগ সরবরাহ; দেশে ফেরার পর বিমানবন্দর থেকে হজযাত্রীকে ৫ লিটার জমজম পানি সরবরাহ। কমবেশি ৪৬ হজযাত্রীর জন্য ১ জন গাইড থাকবে এবং এজেন্সির সঙ্গে আলোচনা করে অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করে রুম আপগ্রেডেশন করা যাবে।

হজযাত্রীকে কোরবানি বাবদ প্রায় ৭৫০ সৌদি রিয়াল সঙ্গে নিতে হবে এবং কোরবানি নিজ দায়িত্বে সম্পন্ন করতে হবে। সৌদি আরবে সর্বনিম্ন ৩০ দিন ও সর্বোচ্চ ৪৮ দিন অবস্থান করা যাবে। মদিনায় ৫ থেকে ৮ দিন অবস্থান করা যাবে। মুজদালিফায় নিজ ব্যবস্থাপনায় অবস্থান করতে হবে। নিয়মিত সেবন করতে হয় এমন ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী (ব্লাডসুগার টেস্টের স্ট্রিপ, নিডল, ইনসুলিন, ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ) চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রসহ কমপক্ষে ৫০ দিনের ওষুধপত্র সঙ্গে নিতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, কোনো এয়ারলাইনস এ বছর ডেডিকেটেড ফ্লাইট ছাড়া শিডিউল ফ্লাইটে কোনো হজযাত্রী বহন করতে পারবে না। প্যাকেজ ঘোষণার পর সৌদি সরকার কোনো খাতে খরচ বাড়ালে তা প্যাকেজ মূল্য হিসেবে গণ্য হবে এবং হজযাত্রীকে পরিশোধ করতে হবে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রত্যেক হজযাত্রী ন্যূনতম ৩ লাখ টাকা জমা দিয়ে নিবন্ধিত হতে পারবেন। হজ প্যাকেজের বাকি টাকা আগামী ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে অবশ্যই নিজ নিজ এজেন্সির ব্যাংক হিসাবে বা এজেন্সির অফিসে জমা দিয়ে মানি রিসিট গ্রহণ ও সংরক্ষণ করতে হবে। কোনোভাবেই মধ্যস্বত্বভোগীদের মাধ্যমে কোনো লেনদেন করা যাবে না। এ বছর ৬৫ বা এর বেশি বয়সিরাও হজে যেতে পারবেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close