প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২০ অক্টোবর, ২০২৪

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ড্রোন হামলা

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বাসভবন লক্ষ করে লেবানন থেকে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, ঘটনার সময় নেতানিয়াহু বা তার স্ত্রী ঘটনাস্থলের কাছে ছিলেন না; কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি এবং বাড়িটির কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কিনা তাও জানা যায়নি। হামলার পরই ওই বাড়ির দিকে যাওয়ার সড়কে কড়া পাহারা বাসিয়েছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। গতকাল শনিবার উত্তর ইসরায়েলের সমুদ্রতীরবর্তী শহর সিজারিয়ায় হামলা চালানো হয়। খবর টাইমস অব ইসরায়েল, আলজাজিরার।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ড্রোনটি লেবানন থেকে এসেছে। একইসঙ্গে আরো দুটি ড্রোন ইসরায়েলের সীমান্ত অতিক্রম করেছিল। সেগুলো ধ্বংস করতে সমর্থ হয়েছে তারা। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে এবং এটি ইসরায়েলের সতর্কতা ব্যবস্থার ব্যর্থতা কিনা তাও ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এদিকে, লেবাননের আল-মায়াদিন নিউজ চ্যানেল আইডিএফকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, শনিবার তিনটি ড্রোনের মধ্যে দুটি ড্রোন শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে এবং আটকানো গেছে। তবে তৃতীয় ড্রোনটি নেতানিয়াহুর বাসভবনে আঘাত হেনেছে। ড্রোনটি আঘাত হানার আগে প্রায় একঘণ্টা ধরে ওই বাসভবনের আশপাশে ঘোরাফেরা করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ড্রোনটি আঘাত হানার পর সেখানে বড় ধরনের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। হামলার পরপরই পুলিশ ও আইডিএফ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এ সময় তেল আবিব ও গিলিলত সামরিক ঘাঁটিতে সতর্কতামূলক সাইরেন বেজে ওঠে। তবে আইডিএফ পরবর্তীতে জানায়, ড্রোনগুলো গিলিলত ঘাঁটি এলাকায় আসেনি।

সিজারিয়া শহরের একজন বাসিন্দা টাইমস অব ইসরায়েলকে বলেন, আমরা আমাদের ওপর দিয়ে হেলিকপ্টার উড়তে দেখেছি। কিন্তু কোনে সাইরেন বাজেনি। তাই আমরা খুব চিন্তিত ছিলাম না। কিন্তু তারপর হঠাৎ একটি বড় বিস্ফোরণ শোনা যায় এবং এটি ড্রোনের কিনা তা আমাদের কাছে পরিষ্কার নয়। অবশ্য এটি পরিষ্কার কোনো পূর্ব সতর্কতা ছিল না। এটি খুব উদ্বেগজনক ছিল, ভাগ্যক্রমে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

এদিকে, সিজারিয়ায় তার বাড়ি লক্ষ করে ড্রোন হামলার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় হিব্রু এবং ইংরেজিতে পোস্ট করা ভিডিওতে, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জোর দিয়ে বলেন, কোনো কিছুই আমাকে বাধা দেবে না। ইসরায়েল এই যুদ্ধে জয়ী হতে চলেছে। ইহুদিদের বিশ্রামের দিন শাবাতে এই ভিডিও বিবৃতিতে তিনি সরাসরি ড্রোন হামলার কথা বলেননি। এ সময় তিনি সানগ্লাস এবং একটি কালো পোলো শার্ট পরে একটি পার্কে হাঁটছিলেন।

নেতানিয়াহু বলেন, দুদিন আগে হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে নির্মূল করেছি। এটি অস্তিত্বের যুদ্ধ এবং আমরা শেষ পর্যন্ত চালিয়ে যাব। আমি আমাদের সেনাদের জন্য গর্বিত, কমান্ডারদের জন্য গর্বিত এবং আমি গর্বিত তোমাদের জন্য, ইসরায়েলের নাগরিকরা।

এর আগে শুক্রবার দখলদার ইসরাইলের বিরুদ্ধে অভিযানের নতুন ধাপ শুরু করার ঘোষণা দেয় হিজবুল্লাহ। ওইদিনই লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান অভিযানে নিহত হন ৫ ইসরায়েলি সেনা কর্মকর্তা ও সদস্য। এছাড়া আহত হন আরো একজন সেনা কর্মকর্তা ও তিনজন সেনাসদস্য। আইডিএফ শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে নিশ্চিত করেছে এ তথ্য। নিহত সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যদের নাম-পরিচয় উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে। এরা হলেন নিহত ইসরায়েলি সেনারা হলেন মেজর ওফেক বাচার, ক্যাপ্টেন ইলাদ সিমান তোভ, স্টাফ সার্জেন্ট এলায়াশিভ এইতান ওইদার, স্টাফ সার্জেন্ট ইয়াকোভ হিলেল এবং স্টাফ সার্জেন্ট ইয়েহুদা দিরোর ইয়াহালম। নিহতদের মধ্যে মেজর ওফেক বাচার ইসরায়েলের নেস জিওনা, ক্যাপ্টেন ইলাদ সিমান তোভ তিজোফিম স্টাফ সাজেন্ট এলায়াশিভ এইতান ওইদার জেরুজালেম, স্টাফ সার্জেন্ট ইয়াকোভ হিলেল জেরুজালেম এবং স্টাফ সার্জেন্ট ইয়েহুদা দিরোর ইয়াহালম হেবরনের বাসিন্দা ছিলেন। নিহত এবং আহতদের সবাই ইসরায়েলের স্থলবাহিনীর গোলানি ব্রিগেডের সদস্য ছিলেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে আইডিএফ। এর আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর বৈরুতে ইসরায়েলের হামলায় হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close