নিজস্ব প্রতিবেদক
দুই ঈদে ছুটি ১১ দুর্গাপূজায় ২ দিন
আগামী বছরের (২০২৫) সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এতে আগামী বছর পবিত্র ঈদুল ফিতরে ৫ দিন ও ঈদুল আজহায় ৬ দিন সরকারি ছুটি নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া শারদীয় দুর্গাপূজার ছুটি দুদিন করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক। পরে সাংবাদিকদের কাছে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
ঘোষিত ছুটির তালিকা অনুযায়ী, আগামী বছর ১২ দিন সাধারণ ছুটি এবং ১৪ দিন নির্বাহী আদেশে ছুটি থাকবে। অবশ্য ১২ দিন সাধারণ ছুটির মধ্যে পাঁচ দিনই সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে। আর ১৪ দিন নির্বাহী আদেশের ছুটির মধ্যে চার দিনই সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে। এর মানে হলো বছরে ২৬ দিন ছুটি থাকলেও এর মধ্যে ৯ দিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে। ছুটির অনুমোদিত তালিকা অনুযায়ী- দুই ঈদে সাধারণ ছুটি এক দিন করে। সম্ভাব্য সময় অনুযায়ী পবিত্র ঈদুল ফিতর হতে পারে আগামী বছরের ৩১ মার্চ (চাঁদ দেখা সাপেক্ষ ঠিক হয়)। এদিন সাধারণ ছুটি থাকবে। এর সঙ্গে ঈদের আগের দুদিন (২৯ ও ৩০ মার্চ) এবং পরের দুদিন (১ ও ২ এপ্রিল) নির্বাহী আদেশে ছুটি থাকবে। আগামী বছরের পবিত্র ঈদুল আজহা হতে পারে ৭ জুন (চাঁদ দেখা সাপেক্ষ)। ওইদিন সাধারণ ছুটি থাকবে। এর সঙ্গে আগের দুদিন (৫ ও ৬ জুন) এবং পরের তিন দিন (৮, ৯ ও ১০ জুন) নির্বাহী আদেশে ছুটি হবে। শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে সাধারণ ছুটি থাকবে বিজয়া দশমীর দিন। সম্ভাব্য সময় অনুযায়ী আগামী বছরের ২ অক্টোবর বিজয়া দশমী হতে পারে। তার আগে নবমীর দিন (সম্ভাব্য সময় ১ অক্টোবর) নির্বাহী আদেশে ছুটি থাকবে। বর্তমানে ঈদের ছুটি তিন দিন। তবে কোনো কোনো বছর নির্বাহী আদেশে তা বাড়ানো হয়েছিল। এছাড়া এ বছর পূজা উপলক্ষে বর্তমান সরকার নির্বাহী আদেশে ছুটি এক দিন বাড়িয়েছিল। এরকম পরিস্থিতিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ছুটির বাড়ানোর প্রস্তাব করে। এটি অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ।
অন্য যেসব দিনে ছুটি থাকবে : পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা এবং দুর্গাপূজা ছাড়াও আগামী বছর যেসব দিবসে ছুটি থাকবে, সেগুলো হলো- ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, ২৮ মার্চ জুমাতুল বিদা, মে দিবস (১ মে), ১১ মে বুদ্ধপূর্ণিমা (বৈশাখী পূর্ণিমা), ১৬ আগস্ট জন্মাষ্টমী, ৫ সেপ্টেম্বর ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.), ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস এবং ২৫ ডিসেম্বর যিশুখ্রিষ্টের জন্মদিন (বড়দিন)। এছাড়া শবেবরাত, শবেকদর, বাংলা নববর্ষ (পহেলা বৈশাখ), পবিত্র আশুরা উপলক্ষেও ছুটি থাকবে। আর ধর্মীয় পর্ব উপলক্ষে ঐচ্ছিক ছুটি নেওয়ার ব্যবস্থাও আছে।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৪ এর খসড়াও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অনুমোদিত ছুটির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত বিষয় হলো- ক. জাতীয় দিবস ও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান উপলক্ষে ১২ দিন সাধারণ ছুটি। এর মধ্যে ৫টি ছুটি সাপ্তাহিক ছুটির দিন পড়েছে (৩টি শুক্রবার ও ২টি শনিবার)। খ. বাংলা নববর্ষ ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় পর্ব উপলক্ষে ১৪ দিন নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি; এর মধ্যে ৪টি ছুটি সাপ্তাহিক ছুটির দিন পড়েছে (২টি শুক্রবার ও ২টি শনিবার)। গ. ধর্মীয় পর্ব উপলক্ষে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বছরে অনধিক ৩ দিনের এচ্ছিক ছুটি। ঘ. পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকা ও এর বাইরে কর্মরত বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত কর্মচারীদের প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবি বা অনুরূপ সামাজিক উৎসব উদযাপন উপলক্ষে ২ দিন ঐচ্ছিক ছুটি। এ ছুটির মধ্যে একটি সাপ্তাহিক ছুটির দিন পড়েছে (একটি শনিবার)। ঙ. ১২ দিন সাধারণ ছুটি ও ১৪ দিন নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণার প্রস্তাব করা হয়েছে, অর্থাৎ প্রস্তাবিত মোট ছুটি ২৬ দিন। উল্লেখ্য, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দের অনুমোদিত মোট ছুটি (২ দিনের সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার ছাড়া) ছিল ২২ দিন।
"