নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৫ অক্টোবর, ২০২৪

প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে শাহবাগে অবস্থান

সরকারি চাকরিতে প্রবেশে বয়স বাড়ানোর ঘোষণা শিগগিরই

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ছেলেদের ক্ষেত্রে ৩৫ ও মেয়েদের ৩৭ বছর করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের পর্যালোচনা কমিটি। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পর্যালোচনা কমিটির প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী এ তথ্য জানান। এদিকে কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, অবিলম্বে প্রজ্ঞাপনের দাবিতে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি চালাচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা। গতকাল সকালে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। পরে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে আন্দোলনকারীরা এসে তাতে শামিল হন।

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান সাবেক সচিব আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীকে প্রধান করে গত ৩০ সেপ্টেম্বর সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা পর্যালোচনায় একটি কমিটি গঠন করা হয়। এক সপ্তাহ পর সরকারের কাছে সুপারিশ দিয়েছে তারা। এতে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরির আবেদনে পুরুষের বয়স হবে সর্বোচ্চ ৩৫, আর নারীদের ৩৭ বছর। সচিবালয়ে সাংবাদিকদের আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী বলেন, মেয়েদের একটু আলাদা করে বেশি বয়স দেওয়া হয়েছে। মেয়েদের আমরা এ কারণে দিয়েছি, মেয়েদের ছেলেদের মতো ওই বয়সে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয় না। ফ্যামিলি অব্লিগেশন্স থাকে, বিয়ে হয়ে যায়, বাচ্চা হয়। তাই তারা যেন আসতে পারেন। এছাড়া আমাদের নারী কর্মকর্তার সংখ্যা তুলনামূলক কম। কোটা আছে, কিন্তু অতটা ফুলফিল হয় না এখনো। আরো বেশিসংখ্যক নারী যেন চাকরিতে আসতে পারেন, সেজন্য তারা এ সুপারিশ করেছি। দেশের শিক্ষাব্যবস্থা, পরীক্ষার ধরন ও কর্মসংস্থানের সুযোগের বিষয়টি আমলে নিয়েছে পর্যালোচনা কমিটি। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে। তবে অবসরের বয়সসীমা ৫৯ বছরই সুপারিশ করেছে পর্যালোচনা কমিটি। সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবি প্রায় এক যুগের। এ ইস্যুতে বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন হয়েছে রাজপথে। বর্তমানে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ বছর। তবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হলে ৩২ বছর। সরকারি সূত্রগুলো বলছে, শিগগিরই চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হবে। চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা বাড়ানোর ঘোষণা আসবে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে।

প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে শাহবাগে অবস্থান : চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা স্থায়ীভাবে পুরুষের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৩৫ এবং তা শর্তসাপেক্ষে উন্মুক্ত করে দ্রুত প্রজ্ঞাপনের দাবিতে ৩৫ প্রত্যাশী চাকরিপ্রার্থীরা শাহবাগে অবস্থান নিয়েছে। সোমবার সকালে শাহবাগ জাদুঘরের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচির শুরু হয়। এর আগে রবিবার তিন দিনের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারির আলটিমেটাম দিয়েছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা। চাকরিতে বয়সসীমা ৩৫ করা নিয়ে আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সমন্বয়ক এম এ আলী বলেন, আজ (সোমবার) আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি দিনব্যাপী চলবে। সরকার যদি আমাদের দাবি মেনে না নিয়ে প্রজ্ঞাপন দ্রুত জারি না করে, তাহলে আমাদের কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হব। তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে সরকারের যে বৈঠক হয়েছে, সেখানে আমরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। এর মধ্যে আমরা ছেলেদের ক্ষেত্রে চাকরিতে বয়সসীমা ৩৫ এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৩৭ করার জন্য দাবি জানিয়েছি। আর কিছু কিছু ক্ষেত্রে শর্তসাপেক্ষে উন্মুক্ত করার কথা বলেছি। সেটা সরকার বিবেচনা করবে।

আন্দোলনকারীদের আরেক সমন্বয়ক মামুন রশিদ রতন বলেন, আমরা দীর্ঘ ১২ বছর ধরে চাকরিতে বয়সসীমা বৃদ্ধির পক্ষে আন্দোলন করেছি। স্বৈরাচার সরকার আমাদের বিভিন্ন সময় মারধর করেছে। আমরা ১৪৪ ধারা ভেঙে এ আন্দোলন করেছি। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের দাবি-দাওয়া অনুযায়ী একটি কমিশন গঠন করে ছেলেদের ক্ষেত্রে ৩৫ ও মেয়েদের ক্ষেত্রে ৩৭ বছর চেয়ে একটি সুপারিশ করেছে। রাষ্ট্র এটা মেনে নিলে সাধুবাদ জানাই, কিন্তু যদি এর এক দিনও (বয়সসীমা) কম হয়, তাহলে বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ তা মেনে নেবে না।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close