মেহেদী হাসান
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ছাগল উন্নয়ন প্রকল্প
রডের বদলে বাঁশ
৪৭ কোটি টাকার বেশিরভাগই লোপাট * ৮০ শতাংশ ডিজির সুপারিশে নিয়োগ * কাগজে-কলমে ৫৮ হাজার ৮০০ বাস্তবে পেয়েছেন ১ হাজার * বেছে বেছে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্টদের নিয়োগ
ছাগলের জাত উন্নয়ন নামের প্রকল্পে কর্মকর্তা উন্নয়ন করেছেন নিজের পকেট। দুর্নীতি-অনিয়মের মাধ্যমে খামারিদের প্রশিক্ষণ, প্রদর্শনী খামার স্থাপন, সরকারি ছাগল খামারের সংস্কার ও উন্নয়নে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের মাধ্যমে লুট করেছেন কোটি কোটি টাকা। ছাগল খামারের সংস্কারকাজে কাঠামোর কলাম তৈরিতে নতুন রডের বদলে ব্যবহার করা হয়েছে পুরোনো জংধরা রড ও বাঁশের ফালি, সর্বোৎকৃষ্ট ইটের বদলে ইটভাটার পরিত্যক্ত এবং শেওলাপড়া ইট। গাঁথুনিতে নামমাত্র সিমেন্ট ও নিম্নমানের বালু দিয়ে সারা হয়েছে উন্নয়নকাজ। লুটপাটের এসব অভিযোগ উঠেছে সাবেক প্রকল্প পরিচালক ও বর্তমানে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের খামার শাখার উপপরিচালক শরিফুল হকের বিরুদ্ধে।
তথ্য বলছে, সরকারি খামারগুলো থেকে উপজেলা পর্যায়ে খামারিদের ছাগল পালনে প্রয়োজনীয় সেবার জন্য প্রকল্প হাতে নেয় তৎকালীন সরকার। সেজন্য বিদ্যমান সাতটি সরকারি ছাগল খামারের সংস্কার ও উন্নয়নে মৎস্য এবং প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগল উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্প’ অনুমোদন দেওয়া হয়। সম্পূর্ণ জিওবি অর্থায়নে ২০১৮ সালে গৃহীত প্রকল্পটির প্রথম সংশোধিত অনুমোদিত প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। প্রকল্পটির কাজ শেষ হয় ২০২২ সালের জুনে। সম্প্রতি শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বেরিয়ে আসতে শুরু করে সমাপ্ত এই প্রকল্পের নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের তথ্য।
সমাপ্ত প্রকল্পেরতথ্য বলছে, প্রাণিসম্পদ খাতে জিডিপিতে ১ দশমিক ৯০ শতাংশ, জিডিপি প্রবৃদ্ধির হারে ৩ দশমিক ১০ শতাংশ, প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থানে ৫০ শতাংশ এবং পরোক্ষ কর্মসংস্থানে ২০ শতাংশ সাফল্য দেখিয়েছে দপ্তর।প্রকল্পের আওতায় প্রান্তিক পর্যায়ের ছাগল খামারিদের তিনদিনের আবাসিক ব্যবস্থাপনায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ১ হাজার ৫৭০ জন খামারিকে একটি করে বিজ্ঞানসম্মত মাচাযুক্ত ছাগলের মডেল শেড/ঘর, ছাগলের বাচ্চার পুষ্টি নিশ্চিতকরণে মিল্ক রিপ্লেসার (ফর্টিফায়েড মিল্ক পাউডার), কৃমিনাশক ও অতিপ্রয়োজনীয় ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে। জাত উন্নয়নের জন্য প্রান্তিক খামারিদের মধ্যে বিদ্যমান পাঁঠার মধ্য থেকে সঠিক কৌলিকমানসম্পন্ন ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের পাঁঠা চিহ্নিত করে প্রতি উপজেলায় একজন পাঁঠা পালনকারীকে একটি করে বিজ্ঞানসম্মত মাচাযুক্ত ছাগলের মডেল শেড/ঘর দেওয়া হয়েছে। এসব পাঁঠার ব্রিডিং রেকর্ড সংরক্ষণ করা হয়েছে। কাগজে-কলমে এসব উন্নয়ন হলেও বাস্তবে মেলেনি প্রমাণ। অথচ অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে অনিয়ম আর দুর্নীতির তথ্য। খামারি কিংবা ছাগল পালনের সঙ্গে যুক্ত না হওয়া সত্ত্বেও প্রশিক্ষণের আওতায় নেওয়া হয়েছে সাধারণ মানুষের নাম।যাকে-তাকে তালিকার অন্তর্ভুক্ত করেবরাদ্দের টাকা নয়-ছয় করা হয়েছে।দলীয় ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে গট ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্কার (জিডব্লিউডি) ও কন্টাক্ট গ্রোয়িং ফার্মার (সিজিএফ) নিয়োগ ও ইনপুট সহায়তার অর্থ লোপাট করা হয়েছে। এছাড়া ঠিকাদারের সঙ্গে আঁতাত করে নিম্নমানের কাজ করিয়ে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন প্রকল্প পরিচালক শরিফুল হক।
নির্মাণকাজে অনিয়ম : অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজশাহীর রাজাবাড়ীহাট ছাগল উন্নয়ন খামারসহ বাকি ৬টি খামারের সংস্কার ও উন্নয়নকাজে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি করা হয়েছে। রাজাবাড়ীহাট ছাগল খামারের উন্নয়নকাজে অনিয়মের কয়েকটি ভিডিও, ছবি ও অডিও প্রতিদিনের সংবাদের হাতে আছে। তা থেকে দেখা যায়, সুমন নামে এক রাজমিস্ত্রি রডের খাঁচা তৈরি করছেন পুরোনো ও জংধরা রড দিয়ে। ছবিতে দেখা যায়, মূল ফটক তৈরিতে কলাম তৈরিতে দেখা যায়, রডের পরিবর্তে বাঁশের ফালি আটকানো রয়েছে। আরেক জোগালি (মিস্ত্রির সহকারী) সিমেন্ট-বালু মেশাচ্ছেন, যাতে সিমেন্টের পরিমাণ দেখা যায় নামমাত্র। গাঁথুনির ইটে দেখা যায়, সবুজ শেওলা ও নিম্নমানের ইট, যা কাজের উপযোগী নয়। ঢালাইয়ের খোয়া করা হচ্ছে সবচেয়ে নিম্নমানের ইট দিয়ে, যা ঢালাইয়ের কাজে অনুপযুক্ত।
প্রকল্পের আওতায় কাজ করা মিস্ত্রি সুমন বলেন, প্রকল্প পরিচালক যেভাবে কাজ করতে বলেছেন, সেভাবে কাজ করেছি। আমাদের কিছুই করার নেই। আমরা ভালো মানের জিনিস পেলে যেমন কাজ করি,খারাপ মানের জিনিস দিলে সেটা দিয়েও কাজ করি, করার কিছু থাকে না। আমাকে এসবের মধ্যে জড়াবেন না বলে অনুরোধ করেন তিনি।আরেক মিস্ত্রি জামিরুল ইসলাম বলেন, এসব বিষয়ে কথা বলা যাবে না। কেমন কাজ হয়েছে সেটি নিয়ে আসলে বলার কিছু নেই। আমাকে যা এনে দিচ্ছে, তাই দিয়ে কাজ করছি। জামিরুলের সঙ্গে কাজ করা নূর আলমও একই কথা বলেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খামারের এসব অনিয়মের কাজের তদারকি করেছেন তৎকালীন রাজাবাড়ীহাট ছাগল খামারের পরিচালক সিরাজুল ইসলাম। সিরাজুল ইসলাম অবসরে গেছেন গতবছর।
জানতে চাইলে তিনি জানান, প্রকল্প পরিচালক যেভাবে কাজ করিয়ে নিয়েছেন, সেভাবেই হয়েছে। ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত কীভাবে কাজ হয় তা আপনি জানেন। ডিএলএস থেকে প্রকল্প পরিচালক যেভাবে কাজের হুকুম দিয়েছিলেন, সেভাবেই কাজ হয়েছে। আপনার সঙ্গে চা খেতে খেতে কথা বলব। আপনি আমার সঙ্গে দেখা করেন।প্রকল্পের কাজ শেষ সময়ে তড়িঘড়ি করে শেষ দেখানো হয়। চলমান থাকার তথ্য মিলেছে প্রকল্প সমাপ্তির দিকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ২০২১ সালের আগস্ট মাসের ৩৩...১৬/২২৬ নম্বর স্মারকে। সেখানে দেখা যায়,রাজশাহী ও সিলেটে ছাগল খামারের নির্মাণ ও সংস্কারকাজ এবং ৫টি খামারের ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট নির্মাণ চলমান। ৩০১টি (কন্টাক্ট গ্রোয়িং ফার্মার) সিজিএফদের ইনপুট সহায়তা বাবদ উপজেলা পর্যায়ে ১ কোটি ৭৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা ছাড় হয়েছে। যেই টাকার বেশিরভাগই কর্মকর্তাদের পকেটে ঢুকেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনায় পুকুরচুরি : ছাগল পালনের আধুনিক পদ্ধতি সম্পর্কে খামারিদের পর্যাপ্ত জ্ঞানের অভাব রয়েছে। এজন্য গ্রামীণ পর্যায়ে সঠিক প্রজনন সেবা নিশ্চিত করা, ছাগল পালনে আধুনিক পদ্ধতি সম্পর্কে খামারিদের প্রশিক্ষণ, প্রদর্শনী খামার স্থাপন, দক্ষ জনবল তৈরি, জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য এই প্রকল্প নেওয়া হলেও যারা প্রশিক্ষণ পেয়েছেন, তাদের ৬০ শতাংশের বেশিই খামারি নন।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রকল্পের এক কর্মকর্তা জানান, এ প্রকল্পের আওতাভুক্ত প্রতিটি উপজেলায় নির্বাচিত ছাগল পালন খামারি, পাঁঠা পালনকারী ও ছাগল উন্নয়নকর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। প্রশিক্ষণে অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকরা ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালনে করণীয়, রোগপ্রতিরোধ, টিকা, ছাগলের বিকল্প দুধ হিসেবে মিল্ক রিপ্লেসার তৈরি করে খাওয়ানোর নিয়মাবলি, প্রাকৃতিক প্রজনন সেবাসহ ছাগল পালনের বিভিন্ন বিষয়ে হাতে-কলমে শেখানোর কথা বলা হয়। কিন্তু এর বেশিরভাগই খামারি ছিল না। প্রশিক্ষণে তাদের মাত্র একটি ব্যাগ, সার্টিফিকেট ও এক হাজার করে টাকা দেওয়া হয়।প্রকৃত খামারিরা এই প্রকল্পের কোনো সুফল পাননি। অনেক সাধারণ মানুষ খামারি সেজে প্রকল্পের সুবিধা নিয়েছেন। তাদের সহযোগিতা করছেন প্রকল্পের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা। বিনিময়ে পকেট গরম হয়েছে কর্মকর্তাদের।অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রকল্পের৫০ জন কন্টাক্ট গ্রোয়ার ফার্মারকে (সিজিএফ)১৩ থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ৩৩...১৫/৬৬৩ ও ৬৬২ নম্বর স্মারকে ২৫ জন করে ৫০ জন প্রশিক্ষণ ও অনুদানের মনোনয়ন পান। এইতালিকা ধরে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনুদান পাওয়া কয়েকজন ব্যক্তির খামার নেই, আবার অনেকেই ছাগলই পালন করেন না। নূ্যূনতম৫টি ছাগল পালন করা খামারিদের প্রশিক্ষণে মনোনয়ন পেয়েছেন মাত্র একটি ছাগল থাকা ব্যক্তি। আবার ২৫টির বেশি ছাগল পালনকারী খামারি জানতেই পারেননি প্রশিক্ষণের বিষয়ে।
তালিকা অনুযায়ী কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার দক্ষিণ শশীদল গ্রামের মোর্শেদা বেগম প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু মোর্শেদার স্বামী মো. রেহানুল ইসলাম প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, কোনো প্রশিক্ষণে অংশ নেননি তার স্ত্রী। রেহানুলের ২৫টি ছাগল থাকলেও পাননি প্রশিক্ষণের ডাক। উল্টো প্রকল্পের পক্ষ থেকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কয়েকজন লোক এসে ২৫টি ছাগলকে ভ্যাকসিন করে। পরের দিন ১২টি ছাগল মারা যায়। ভয়ে বাকি ছাগলগুলো তড়িঘড়ি করে বিক্রি করে দেন রেহানুল। বর্তমানে তার খামার নেই। জেলার চান্দিনা উপজেলার পূর্ব রামচন্দ্রপুর গ্রামের আবুল বাশার জানান, তার ২টা ছাগল আছে। কিন্তু তিনিও ওইপ্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছিলেন। পেয়েছেন এক হাজার টাকার আর একটা ব্যাগ। কোনো ঘর, ওষুধ কিংবা ছাগলের খাদ্য পাননি তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রাণিসম্পদের এক কর্মকর্তা জানান, প্রকল্পে ছাগলের ঘর, দুধ ও ওষুধ বাবদ প্রতিটি সিজিএফ খামারির জন্য ৬০ হাজারটাকা বরাদ্দ ছিল। বাণিজ্যিকভাবে ছাগল পালনকে আরো লাভজনক ও উৎসাহব্যঞ্জক করতে প্রকল্পে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে জিডব্লিউডি, বাক রিয়ারিং ইউনিট করে ১০ জন সিজিএফ নির্বাচন করা হয়। প্রকল্পের আওতায় ১৫৭টি উপজেলায় সব ইউনিয়ন পরিষদে একজন করে ১৯৭০জন সিজিএফ নির্বাচন করে প্রকল্প পরিচালক। প্রত্যেক সিজিএফকে একটি প্যাকেজের আওতায় সাইনবোর্ড, টিকা, ক্রিমিনাশক, ভিটামিন, মিনারেল প্রিমিক্স, মিল্ক রিপ্রেশার, খাদ্য ও ছাগলের ঘর দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বেশিরভাগ খামারি পাননি প্রকল্পে থাকা এসব সুবিধা। কয়েক কোটি টাকা পকেটে ঢুকিয়েছেন প্রকল্পে থাকা কর্মকর্তারা।
কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার কাপ্তান বাজার এলাকার ইয়াছমিন আক্তার নিয়েছিলেন প্রশিক্ষণ। ইয়াছমিনের স্বামী সেলিম আহম্মেদ জানান, এখন তাদের কোনো ছাগল নেই। সার্টিফিকেট, একটা ব্যাগ এবং ১ হাজার টাকাপেয়েছিলের সেসময়। কোনো ঘর পাইনি। দুই কেজি দুটা দুধের প্যাকেট দিয়েছিল আর কিছু ছাগলের খাদ্য। আর কিছু পাইনি। ওই তালিকায় থাকা বুড়িচং এলাকার এক খামারি জানান, তিনিপ্রকল্প থেকে কী কী পেয়েছেন, তা জানাতে নিষেধ করেছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে। যদি কেউ ঢাকা থেকে জানতে চান কী কী পেয়েছেন, মুখ খুলবেন না।
সুপারিশের ভিত্তিতে ৮০ শতাংশ নিয়োগ : ছাগল উন্নয়ন প্রকল্পে প্রকল্পভুক্ত ২৩ জেলার ১৯৭ উপজেলায় ১ জন করে ১৯৭ জন গট(ছাগল) ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্কারের (জিডব্লিউডি) ৮০ শতাংশ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে সুপারিশের ভিত্তিতে। ২০১৯ সালের ২০ মার্চ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ইস্যু করা ৩৩...১৮/২৫৯ নম্বর স্মারকে দেখা যায়, ১৭ জনের মধ্যে ১১ জনের কোনো অভিজ্ঞতা নেই। অথচ প্রকল্পে নিয়োগের শর্তের মধ্যে যোগ্য ও অভিজ্ঞ প্রার্থীদের অগ্রাধিকারের কথা রয়েছে। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ৩৩...১৮/০২ নম্বর স্মারকে জিডব্লিউডি নির্বাচনের মানদ- অনুযায়ী মহাপরিচালকের নির্বাচন কমিটির ৮ম দফায় ১০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগ পাওয়া ১০ জনের মধ্যে ৮ জনই সুপারিশের ভিত্তিতে নিয়োগ পেয়েছেন। মাত্র দুজন অভিজ্ঞতা ও সুপারিশ ছাড়াই নিয়োগ পান। অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া এক জিডব্লিউডি জানান, স্বজনপ্রীতি আর নিজস্ব লোক ছাড়া প্রকল্পে নিয়োগ হয়নি। অনভিজ্ঞ লোক নিয়োগ দিয়ে প্রকল্পের আসল উদ্দেশ্য কখনোই পূরণ সম্ভব নয়। তারপরও দলীয় পরিচয় ছাড়া অন্যরা সুযোগ পান না। অনভিজ্ঞ লোক দিয়ে টিকাদান বিপজ্জনক। কয়েক জায়গায় ছাগল মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আসলে এ বিষয়ে কোনো কথা বলা নিরাপদ মনে করছি না। আমাকে এসবে জড়াবেন না।
সরেজমিনে গিয়ে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক প্রকল্প পরিচালক এবং খামার শাখার পরিচালক শরিফুল হক বলেন, প্রকল্পের পরিচালক আমি হলেও সবাই মিলে কাজটা করা হয়েছে। কাজ কীভাবে হয় আপনি জানেন।কোনো অনিয়ম থাকলে সেটির জন্য আমি একা দায়ী হব কেন? আপনি আমার এখানে বসেন ‘লাঞ্চ’ করে তারপর যাবেন। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. বয়জার রহমান বলেন,‘আপনি যেসব বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন, সেটি নিয়ে প্রকল্প পরিচালক শরিফুল হকের সঙ্গে কথা বলব। এসব অনিয়ম ও সরকারি অর্থ লোপাটের ঘটনা প্রমাণিত হলে তদন্ত করে কঠোরব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
"