নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

আশ্বিন মাসেও বর্ষাকালের আবহ

জলজট-যানজটে স্থবির ঢাকা ভোগান্তি চরমে

মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সৃষ্ট লঘুচাপে আশ্বিন মাসেও বর্ষাকালের আবহ তৈরি হয়েছে রাজধানীসহ সারা দেশে। ভোরের আলো ফোটার আগেই বিরতিহীনভাবে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় ঝরেছে আশ্বিনের বৃষ্টি। কখনো মুষলধারে, কখনো ঝিরিঝিরি বৃষ্টিতে সকাল থেকেই ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরীর কর্মজীবী ও খেটে খাওয়া মানুষ। বিশেষ করে অফিসগামী মানুষ বেশি বিপত্তিতে পড়েছেন। মগবাজার, মালিবাগ, মৌচাকের আশপাশের এলাকা ঘুরে ও গুগল ম্যাপের ট্রাফিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এমন চিত্র দেখা যায়। এসব এলাকার অনেক স্থানে বৃষ্টির পানিতে সড়ক ডুবে থাকতে দেখা গেছে। মূল সড়ক ও বিভিন্ন অলিগলিতে পানি থাকায় সড়কে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। এতে স্কুল-কলেজ ও অফিসগামী মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।

এই বৃষ্টিতে মৌচাক মোড় থেকে মগবাজার ওয়ারলেস পর্যন্ত সড়কে পানিতে তলিয়ে যায়। এ সড়কটি স্বাভাবিক অবস্থাতেই যানজটপ্রবণ। পানি জমার প্রভাবে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হয়েছে।

মগবাজার মোড় থেকে গাড়ির লাইন সিদ্ধেশ্বরী কলেজ এবং মৌচাক মোড়ের জ্যাম মালিবাগ মোড় ছাড়িয়ে শান্তিনগর পর্যন্ত পৌঁছেছে। সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়তে হয়েছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী মানুষ।

সকালে সিদ্ধেশ্বরী কলেজের শিক্ষার্থী ফয়সাল বলেন, যানজটের কারণে মৌচাক মোড়ে নেমে গেছি। কিন্তু গাড়ি থেকে নেমেই দেখি পুরো সড়ক পানির নিচে। এ অবস্থায় পায়ের জুতা খুলে সড়ক পার হয়ে ফুটপাতে উঠেছি। মাঝে আরো কয়েক দফা পানিতে নামতে হয়েছে।

বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ায় মহানগরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে তীব্র যানজট দেখা গেছে। এই সুযোগে রিকশাচালকরা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করছেন। বাধ্য হয়ে অনেককেই ভিজে ভিজে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। মগবাজার মোড় থেকে বাংলামোটরে রিকশার স্বাভাবিক ভাড়া ২০ টাকা। বাংলামোটর অংশে পানি জমায় ভাড়া ৫০ টাকা চাচ্ছেন রিকশাচালকরা।

ওমর ফারুক নামে এক যাত্রী বলেন, ‘আমার অফিস হাতিরপুলে। সাধারণত মগবাজার থেকে রিকশায় বাংলামোটরে যাই। এরপর সড়ক পার হয়ে হেঁটে অফিসে যাই। অফিস টাইমে তারা ৩০ টাকা ভাড়া দাবি করেন। কিন্তু আজ ৫০ টাকার কমে কেউ যাবেন না। এ দেশে সুযোগ পেলেই সবাই জালিম হয়ে যায়।’

মালিবাগ এলাকা থেকে গুলশানের অফিসে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী হেদায়েতুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে বৃষ্টি, বাসেই উঠতে পারছিলাম না। ঠাসাঠাসি করে খুব ভোগান্তি নিয়ে অফিসে এলাম। রাস্তায় কোথাও জলাবদ্ধতা হয়েছে আবার কোথাও যানজট। এ ছাড়া সঙ্গী বিরতিহীন বৃষ্টি। সব মিলে দিনটা ভোগান্তি দিয়ে শুরু হয়েছে।’

সারোয়ার আলম নামের আরেক কর্মজীবী বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিসগামীরা। বাস কম, জলাবদ্ধতা, যানজট এই সুযোগে রিকশা, সিএনজিওয়ালারা বেশি ভাড়া নিচ্ছেন। যে রাস্তা দিয়ে এলাম পুরো রাস্তায় ছাতা মাথায় মানুষ দাঁড়িয়ে আছেন।’

গাবতলী থেকে মহাখালী হয়ে নতুন বাজার আসা রইস বাসের চালক এখলাছুর রহমান বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে সড়কে গণ-পরিবহনের সংখ্যা কম, আবার কোথাও যানজটও আছে। বাস থামালেই যাত্রীরা ঠাসাঠাসি করে বাসে উঠছেন। যেহেতু বৃষ্টির মধ্যে সবাই সড়কে দাঁড়িয়ে আছেন, তাই যতজনকে পেরেছি বাসে নিয়েছি।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close