নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

জনবান্ধব পরিবেশ গড়তেই সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা

জানালেন জনপ্রশাসন সচিব

দেশে একটি জনবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন সচিব মোখলেস উর রহমান। বিধির মধ্যেই সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে জনপ্রশাসন সচিব বিধিগুলো ভালোভাবে দেখে নিতে সবাইকে অনুরোধ করেন। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এসব কথা বলেন।

সেনাবাহিনীকে বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়েছে সরকার। এ ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। গ্রেপ্তার ও বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার মতো সুযোগ দিয়ে সেনাবাহিনীকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের এ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনীকে এ ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মঙ্গলবারের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ফৌজদারি কার্যবিধির (সিআরপিসি) ১৭টি ধারা প্রয়োগের ক্ষমতা পেয়েছেন সেনা কর্মকর্তারা। ধারাগুলো হলো ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫ (২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেশত্যাগী হওয়ার পর থেকে সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিভিন্ন সংস্থাসহ সবাই কাজ করছে জানিয়ে জনপ্রশাসন সচিব বলেন, ৫ তারিখের আগে আমি যাব না, সে ব্যাখ্যা আমি দিতে চাই না। সেখানে অনেক ডিসপিউট আছে। আপনারা জানেন, ল এনফোর্সাররা কী ব্যবহার করেছে, ম্যাসাকার করেছে। তিনি বলেন, এখন আরো যাতে জনবান্ধব পরিবেশে মানুষ চলাফেরা করতে পারে, মানুষ যাতে নিরাপদ ফিল করে, মানুষের মাঝে যেন আস্থা থাকে সব বাহিনী একসঙ্গে, একই ছাতার নিচে কাজ করছে, এ মেসেজটার জন্যই এ ধরনের ক্ষমতা...। সরকার পতনের এক মাসেরও বেশি সময় পর কেন সেনাবাহিনীকে এ ক্ষমতা দেওয়া হলো- জানতে চাইলে জনপ্রশাসন সচিব বলেন, সরকার মনে করছে, এ পরিস্থিতিতে যেহেতু মাঠের বিস্তৃত পর্যায়ে আমাদের সেনাবাহিনী বিভিন্ন লেভেলে কাজ করছে। সরকার মনে করেছে, এটা হলে পারপাস অব দ্য গভর্নমেন্ট ইজ সিকিউর দ্য সিটিজেনস, অ্যান্ড উই আর নাউ সার্ভিং দ্য স্টেট। এজন্যই এখন ফিল করা হলো যে, এ মুহূর্তে এটা (সেনাবাহিনীর ক্ষমতা) দরকার এবং টার্গেট বেঁধে দেওয়া হয়েছে অনলি ফর সিক্সটি ডেইজ। সাধারণ প্রশাসন ক্যাডারদের সঙ্গে সেনাবাহিনীকে দেওয়া ক্ষমতার সাংঘর্ষিক বিষয় আছে কি না- এমন প্রশ্নে জনপ্রশাসন সচিব বলেন, এটা কোনো ক্যাডারের ক্ষমতা না, এটা রাষ্ট্রের ক্ষমতা। সাংঘর্ষিক কিছু হবে না। সবাই মিলে এক রাষ্ট্র, সরকার, এক জনগণ। জনস্বার্থে আপনি কাজ করেন, আমি কাজ করি। সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করলে ভালো ফল আসবে।

ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী সেনাবাহিনীর কমিশন পাওয়া কর্মকর্তাদের সারা দেশে দুই মাসের জন্য বিশেষ এ ক্ষমতা দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে। ফৌজদারি কার্যবিধির যে ১৭ নম্বর ধারায় সেনা কর্মকর্তাদের বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, সেখানে এ নির্বাহী হাকিমরা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, অর্থাৎ জেলা প্রশাসকের অধীনে থাকার কথা বলা আছে। এসব ধারায় গ্রেপ্তার ও গ্রেপ্তারের আদেশ, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করা, তল্লাশি পরোয়ানা জারি, অসদাচরণ ও ছোট-খাটো অপরাধের জন্য মুচলেকা আদায়, মুচলেকা থেকে অব্যাহতি, বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ, স্থাবর সম্পত্তি ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে বাধা অপসারণ এবং জনগণের ক্ষতির আশঙ্কা করলে সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ বিভিন্ন ক্ষমতা পাবেন বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close