প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

কমলা-ট্রাম্পের অগ্নিগর্ভ বিতর্ক দেখল বিশ্ব

কমলা হ্যারিসের মুখোমুখি হয়ে যেন থৈ পেলেন না ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রথম প্রেসিডেন্ট বিতর্কে বিভিন্ন ইস্যুতে কমলার সাঁড়াশি আক্রমণে ট্রাম্পকে অনেক সময় দেখা গেছে রক্ষণাত্মক অবস্থানে। তবে একে অন্যকে ছাড় দিয়েছেন কমই, যে জন্য এই বিতর্ককে বলা হচ্ছে ‘ফায়ারি ডিবেট’। খবর বিবিসি ও সিএনএনের।

আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেট পদপ্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশ সময় গতকাল বুধবার ভোর ৭টায় (ওয়াশিংটন সময় মঙ্গলবার রাত ৯টা) প্রথম টেলিভিশন বিতর্কে মুখোমুখি হন। ফিলাডেলফিয়ায় এবিসি টেলিভিশনের আয়োজনে দুজনের প্রথম বিতর্কে কমলা এবং ট্রাম্প একে অন্যকে দুর্বল ও মিথ্যুক বলে অভিযুক্ত করেছেন। কেউ কাউকে এক চুল ছাড় না দেওয়ায় এ বিতর্কে বলো হচ্ছে, ফায়ারি ডিবেট বা অগ্নিগর্ভ বিতর্ক।

মার্কিন অর্থনীতি, অভিবাসন, গর্ভপাত, ক্যাপিটল হিলে হামলা, হামাস-ইসরায়েল ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন ইস্যুতে একে অন্যের বিরুদ্ধে সমানতালে অভিযোগ করেছেন দুজন। মার্কিন অর্থনীতি ও কর ইস্যুতে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস মার্কিন ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, ট্রাম্পের কোনো পরিকল্পনা নেই আপনাদের জন্য। ট্রাম্প শুধু ধনীদের জন্য করছাড় দিয়েছেন। তিনি সব সময় সুবিধাবাদী অর্থনীতির পক্ষে ছিলেন।

জবাবে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, কমলা একটি খালি কলসির মতো, যার আওয়াজ বেশি। তার দেশের অর্থনীতি নিয়ে কোনো পরিকল্পনাই নেই। বাইডেনের ফর্মূলাই পরিবেশন করে যাচ্ছেন তিনি।

ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ ইস্যুতে কমলা বলেন, গাজায় যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। সেখানে সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি দরকার। তিনি বলেন, আমাদের দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পথে যাওয়া উচিত। তাতে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন উভয়ের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।

এ সময় ট্রাম্প বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট হলে ওই যুদ্ধই হতো না। কমলা প্রেসিডেন্ট হলে ইসরায়েল নামে কোনো দেশ থাকবে না। আমি প্রেসিডেন্ট হলে সব ঠিক করে ফেলব।’

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্প দাবি করেন, ‘আমি এ যুদ্ধ বন্ধ করতে চাই। আমি মানুষের জীবন বাঁচাতে চাই। বাইডেন প্রশাসন ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন হতে দিয়েছে।’ আপনি কী চান, ইউক্রেন যুদ্ধে জিতুক? ট্রাম্প এ প্রশ্ন পাশ কাটিয়ে যান।

কমলার অভিযোগ, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে তিনি পুতিনকে ইউক্রেন দখল করে নিতে দেবেন। কমলা বলেন, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে পুতিন এতক্ষণে কিয়েভে বসে থাকতেন। তার নজর থাকত বাকি ইউরোপের দিকে। কমলা বলেন, ‘ইউরোপীয় নেতারাও চান না, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হন।’

ট্রাম্প বলেন, ‘ক্যাপিটলের ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমাকে ওরা একটা ভাষণ দিতে বলেছিল, এইটুকুই।’

তার সমর্থকরা ক্যাপিটলে ঢোকার আগে ট্রাম্প ভাষণ দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘ফাইট লাইক হেল’। তিনি সে সময় তার সমর্থকদের শান্তিপূর্ণভাবে ক্যাপিটলে যেতে বলেছিলেন।

ট্রাম্প এই কথা বলতে অস্বীকার করেন যে তিনি অনুতপ্ত। হ্যারিস বলেন, ‘মনে করে পাতা উল্টে দেখুন। ওইদিন কী হয়েছিল।’

ট্রাম্পের বয়সের প্রতি ইঙ্গিত করে কমলা বলেন, লোকরা খুব দ্রুতই ট্রাম্পের সমাবেশ ত্যাগ করে, কারণ তারা ক্লান্ত হয়ে গেছে।

সমাপনী বক্তব্যে কমলা বলেন, ‘আমরা আর পেছনে তাকাতে চাই না। আমরা ভবিষ্যতের দিকে মনোনিবেশ করছি। নতুন পথে হাঁটতে চাই আমরা।’

অন্যদিকে ট্রাম্প এ সময় যুক্তরাষ্ট্রকে বাইডেন প্রশাসনের অধীনে ‘একটি ব্যর্থ জাতি’ বলে অভিহিত করেন। ট্রাম্প বলেন, কমলা বাইডেন প্রশাসনের অঙ্গ। কমলার এখনই সরে দাঁড়ানো উচিত।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close