ঝালকাঠি ও কুমিল্লা প্রতিনিধি
ঝালকাঠিতে ক্ষমা চাওয়ার পরপরই কুপিয়ে হত্যা
কুমিল্লায় কুপিয়ে খুনের পর হাত বিচ্ছিন্ন
ঝালকাঠি ও কুমিল্লায় দুজনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল শনিবার ঝালকাঠি সদর উপজেলায় খুন হয়েছেন সাঈদুর রহমান স্বপন (৫৪)। অন্যদিকে কুমিল্লার দাউদকান্দিতে খুন হয়েছেন মহিউদ্দিন নামে এক যুবক। ঝালকাঠি সদর উপজেলায় নিহত সাঈদুর রহমান স্বপন শেখেরহাট ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের প্রয়াত মতিউর রহমানের ছেলে। তিনি ডাকাতি ও হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তবে অনেক দিন ধরে তিনি জামিনে ছিলেন। গতকাল স্থানীয় এক ব্যক্তির জানাজায় অংশ নিয়ে সবার কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন জামিনে থাকা যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি স্বপন। তার আধাঘণ্টা পরই তাকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। সদর থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম জানান, শনিবার সকাল ১০টায় উপজেলার শেখেরহাট বাজারে তাকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য স্বপন খান বলেন, একই ইউনিয়নের শিরযুগ গ্রামের হারুণ-অর রশীদ শুক্রবার বরিশাল হাসপাতালে মারা যান। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় গ্রামের মাজার প্রাঙ্গণে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সাঈদুর রহমান স্বপন সেখানে অংশ নিয়ে উপস্থিত সবার কাছে নিজের জীবনের ভুল-ত্রুটির জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করেছিলেন। জানাজা শেষে তিনি সকালের নাশতা করার জন্য শেখেরহাট বাজারে যান।
ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, সকালে শেখেরহাট বাজারে কয়েকজন দুর্বৃত্ত সাঈদুর রহমান স্বপনের ওপর হামলা চালায়। দুর্বৃত্তরা তাকে উপর্যুপরি কুপিয়ে ও চার হাত-পায়ের রগ কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। দুপুর সাড়ে ১২টায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
কুপিয়ে হত্যার পর বিচ্ছিন্ন হাত নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা : কুমিল্লার দাউদকান্দিতে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার পর বিচ্ছিন্ন ডান হাত নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার বেলা ১১টায় উপজেলার ওলানপাড়া গ্রামে মসজিদের কাছে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান দাউদকান্দি থানার গৌরীপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক রোমেন বড়ুয়া। নিহত মো. মহিউদ্দিন (৩৫) ওই গ্রামের বাসিন্দা এবং পেশায় দিনমজুর ছিলেন।
স্থানীয়দের বরাতে ওসি জানান, মহিউদ্দিন গৌরীপুর বাজার থেকে বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথে বসতবাড়িসংলগ্ন মসজিদের কাছে একদল দুর্বৃত্ত তাকে কুপিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা এসে তাকে উদ্ধার করে গৌরীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক জান্নাতুল নাঈম জানান, মহিউদ্দিনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। তার ডান হাত কনুইয়ের ওপর থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল; এছাড়া তার মাথা-পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে।
নিহতের বড় ভাই মো. মহসীন বলেন, মহিউদ্দিন দিনমজুর হিসেবে যখন যা কাজ পেতেন, করতেন। তিনি রাজনৈতিক কোনো দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল না। তার কোনো শক্রও ছিল না। কিন্তু কে বা কারা দিনদুপুরে হত্যা করে তার হাত বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে গেছে আমরা জানি না। মহিউদ্দিনের মা মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই। খুনিদের ফাঁসি চাই।’
পরিদর্শক রোমেন বড়ুয়া বলেন, মাদকসংক্রান্ত বিরোধে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তদন্তের পর বিষয়টি নিশ্চিত বলা যাবে। তিনি আরো বলেন, মরদেহের প্রাথমিক সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের ধরতে চেষ্টা করছে পুলিশ।
"