নিজস্ব প্রতিবেদক
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি
পাচারের অর্থ পুনরুদ্ধারে নাগরিকের পরামর্শ প্রার্থনা
পাচার বন্ধ এবং অবৈধ অর্থ পুনরুদ্ধারে করণীয় নিয়ে নাগরিকের পরামর্শ চায় অর্থনৈতিক অবস্থার ওপর শ্বেতপত্র প্রণয়নের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গঠন করা করা কমিটি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কমিটির পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি কয়েকটি বিষয়ে জনগণের মতামত ও পরামর্শ আহ্বান করছে।
বিষয়গুলো হচ্ছে সরকারি পরিসংখ্যানের যথার্থতা ও নির্ভরযোগ্যতা; সামষ্টিক অর্থনীতির বর্তমান চ্যালেঞ্জসমূহ; জিডিপি প্রবৃদ্ধির পর্যালোচনা; মূল্যস্ফীতির ধারা এবং তার অভিঘাত; দারিদ্র্য, অসমতা ও বিপন্নতা; অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ; সরকারি ব্যয় বরাদ্দে অগ্রাধিকার মূল্যায়ন; বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্য।
এ ছাড়া ঋণ ধারণ ক্ষমতা, মেগা-প্রকল্পগুলোর মূল্যায়ন, ব্যাংকিং খাতের প্রকৃত অবস্থা; জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের পরিস্থিতি; ব্যবসা-পরিবেশ এবং বেসরকারি বিনিয়োগ; অবৈধ অর্থ ও তার পাচার; শ্রমবাজারের গতিশীলতা এবং যুব কর্মসংস্থান; বৈদেশিক শ্রমবাজার ও প্রবাসী শ্রমিকদের অধিকার বিষয়েও পরামর্শ চায় এ কমিটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যে কেউ [email protected] এই ই-মেইলের মাধ্যমে পরামর্শ পাঠাতে পারবেন। ফেসবুক ও লিঙ্কডইন পেজের মাধ্যমেও এই কমিটির কার্যক্রম সম্বন্ধে জানা যাবে।
ফেসবুক পেইজ www.facebook.com/whitepaperbd2024 ও লিঙ্কডইনের www.linkedin.com/company/ whitepaperbd2024 এই পেইজের মাধ্যমে তথ্য পাওয়া যাবে এবং পাঠানোও যাবে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে কমিটির কার্যালয়ে (ব্লক ৪, নিচতলা) একটি পরামর্শ বাক্স রাখা থাকবে বলেও তথ্য দিয়েছে শ্বেতপত্র কমিটি। লিখিতভাবে এখানেও পরামর্শ ও দলিলপত্রাদি জমা দেওয়া যাবে।
কমিটির তরফে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনক্রমে গত ২৯ আগস্ট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে অর্থনীতিবিদ, এসডিজি বাস্তবায়নে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে প্রধান করে বাংলাদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার ওপর শ্বেতপত্র প্রণয়নের লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। এই কমিটিতে পরবর্তীতে দেশের ১১ জন স্বনামধন্য বিশেষজ্ঞ সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। এরই মধ্যে কমিটির সদস্যরা তাদের কার্যক্রম শুরু করেছেন।
পরিকল্পনা কমিশনে শ্বেতপত্র কমিটির কার্যালয়ে ২৯ আগস্ট এবং ৩ সেপ্টেম্বর দুটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। কমিটি কী কী বিষয়ে কাজ করবে এবং কীভাবে তারা তথ্য-উপাত্তের বিশ্লেষণের মাধ্যমে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার সংশ্লেষ ঘটাবে, সে বিষয়ে সর্বশেষ সভায় সিদ্ধান্ত হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে আগ্রহী ব্যক্তিদের বর্ণিত মাধ্যমের সহায়তায় কমিটির কাছে তাদের পরামর্শ এবং সুপারিশ দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে জ্বালানি খাতসহ বিগত বছরগুলোতে হওয়া বৈদেশিক ঋণ চুক্তিগুলো খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছিলেন শ্বেতপত্র তৈরির দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। গত মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনে কমিটির দ্বিতীয় বৈঠক শেষে এ কথা জানান তিনি।
দেবপ্রিয় বলেন, ইস্যুগুলো নিয়ে আমরা ঢাকা, ঢাকার বাইরে ও বিদেশেও যারা বিশেষজ্ঞ আছেন তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হবে। আগামী দুই মাসের মধ্যেই কার্যক্রম গুছিয়ে আনা হবে। তিনি বলেন, খাতওয়ারি যেমন জ্বালানি, প্রাতিষ্ঠানিক, ব্যাংক, রাজস্ব খাত, অর্থ পাচার, বৈষম্য ও দারিদ্র্যবিমোচনসহ বিভিন্ন বিষয় সদস্যদের মধ্যে ভাগ করা হবে।
গত ২১ আগস্ট দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে প্রধান করে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গঠনের ঘোষণা দেয় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির বাকি ১১ সদস্য হলেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন, বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এ কে এনামুল হক, বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বেগম, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) নির্বাহী পরিচালক ইমরান মতিন, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো কাজী ইকবাল, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ম. তামিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার তাসনিম সিদ্দিকী।
"