নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকায় গণপিটুনিতে চারজনকে হত্যা
যাত্রাবাড়ীতে দুই তরুণ * ওয়ারীতে দুই ভাই নিহত
ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে দুই তরুণ এবং ওয়ারীতে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহতরা হলেন সাইদুল ইসলাম ইয়াসিন (১৯), সাইদ আরাফাত শরীফ (২০), আল আমিন ভূঁইয়া (৪২) ও নুরুল আমিন ভূঁইয়া (৩৫)। শেষ দুজন সহোদর। এদের মধ্যে আল-আমিন ভূঁইয়া ওয়ারী থানার ৪১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আর যাত্রাবাড়ীতে নিহত ইয়াসিন ধলপুরের বউবাজার এলাকার শাখাওয়াত হোসেন ও মা শিল্পি আক্তারের ছেলে। তিনি কুতুবখালী এলাকার একটি মাদরাসার শিক্ষার্থী ছিলেন। অপরজন শরিফের বাবার নাম কবির হোসেন। তার সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যাযনি। গতকাল বুধবার এদের মৃত্যু হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, যাত্রাবাড়ী থানা এলাকায় গতকাল দুজনকে গণধোলাই দেওয়া হয়। পরে ঢামেক হাসপাতাল নিয়ে আসা হয়। মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি যাত্রাবাড়ী থানাকে জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, সায়েদাবাদ এলাকায় বুধবার সকালে তাদের পিটিয়ে ফেলে রাখা হয়। পরে কে বা কারা তাদের যাত্রাবাড়ী থানায় এনে রেখে চলে যায়। সেখানে পড়ে থাকতে দেখে কয়েকজন ছাত্র তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
এদিকে ওয়ারীতে নিহত আল আমিন ও নুরুল আমিন ওয়ারীর ২নম্বর কে এম দাস লেনের শামসুদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে।
নিহতদের বড় ভাই রুহুল আমিন বলেন, আল আমিন ওয়ারী থানা বিএনপি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও নুরুল আমিন পাঠাও মোটরবাইক চালক ছিলেন। দুই ভাইকে কে বা কারা কুপিয়ে গুরুতর আহত করে হাটখোলা এলাকায় রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রেখে গেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে তাদের ঢাকা মেডিকেলে নিলে চিকিৎসক জানান- তারা আর বেঁচে নেই। কারা আমার দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করেছে এ বিষয়ে আমরা এখনো কিছু বলতে পারছি না।
রুহুল আমিন আরো বলেন, মঙ্গলবার রাতে আসিফ, ইকবাল, ফয়সাল ও টুটুল ডেকে আমার ভাই আল আমিনকে ডেকে নিয়ে হত্যার হুমকি দেয়। তারা সবাই কাউন্সিলর আলোর লোক ছিল। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় বাসা থেকে দুই ভাই বের হয়। পরে সাড়ে ১১টায় খবর পাই আমার দুই ভাইকে কে বা কারা কুপিয়ে ফেলে রেখে চলে গেছে। আমরা ধারণা করছি, আসিফ ইকবাল ফয়সাল ও টুটুল কাউন্সিলর আলোর ইন্ধনে আমার দুই ভাইকে হত্যা করেছে।
নিহত আল-আমিন ভূঁইয়ার স্ত্রী মুনমুন বলেন, মঙ্গলবার রাত ১২টায় আমার আসিফ ইকবাল ফয়সাল ও টুটুলের সঙ্গে আমার স্বামীর কথা কাটাকাটি হয়। এসময় তারা আমার স্বামীকে হত্যার হুমকি দেয়। সকালে কেউ একজন আমার স্বামীকে ফোন করে নিচে নামতে বলে। আমার নিষেধ সত্ত্বেও সে নিচে নামে। এর কিছুক্ষণ পর জানতে পারি কে বা কারা আমার স্বামীকে কুপিয়ে ফেলে রেখে গেছে।
মুনমুন আরো বলেন, ক্লাসিক ডেভেলপার কোম্পানির মালিক রিপনের সঙ্গেও আমাদের দ্বন্দ্ব চলছিল। কে বা কারা তাদের হত্যা করেছে, সে বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, মরদেহ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে।
"