বিশেষ প্রতিবেদক

  ১৩ আগস্ট, ২০২৪

জাতীয় স্বার্থে অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতার আশ্বাস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি, জামায়াত, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। জাতীয় স্বার্থে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতার কথা জানিয়েছেন এসব রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা। তারা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরির সময় দেওয়ার বিষয়ে তাদের সহমতের কথা তারা জানিয়েছেন। পাশাপাশি তারা বলেছেন সাম্প্রদায়িকতার ধোঁয়া তুলে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের তিন দিন পর প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে প্রথমবারের মতো বৈঠকে বসেন রাজনৈতিক দলের নেতারা। গতকাল সোমবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় প্রবেশ করে বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরাম। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রায় আধা ঘণ্টা বৈঠক করেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের সঙ্গে।

বিএনপির সঙ্গে বৈঠক শেষে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধান উপদেষ্টা। জামায়াতের আমিরের নেতৃত্বে, নায়েবে আমির, সহকারী সেক্রেটারি, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের আমিরসহ ১১ সদস্যদের প্রতিনিধি দলের বৈঠক হয় চলমান রাজনৈতিক পরিবেশ নিয়ে। বিএনপি এবং জামাতের পর, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বসেন এবি পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদের নেতারা।

বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা বলিনি। আগেও বলেছি, এটার জন্য কিছু সময় লাগবে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে। আমরা তাদের অবশ্যই সেই সময় দিচ্ছি। আমরা তাদের সব বিষয়কে সমর্থন দিচ্ছি।’

মির্জা ফখরুল আরো বলেন, আমরা একটা কথা খুব পরিষ্কারভাবে বলেছি, বর্তমানে দেশে যে অস্থিরতার চেষ্টা, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা, সাম্প্রদায়িকতার ধোঁয়া তোলা হচ্ছে, এগুলোতে জনগণ যাতে বিভ্রান্ত না হন। জনগণ যাতে আগের মতো ধর্মীয় সম্প্রীতি অক্ষুণ্ণ রেখে, জনগণের নিরাপত্তাকে অক্ষুণ্ণ রেখে সরকারকে সহায়তা করেন। আমরা পুরোপুরিভাবে সেভাবে সহায়তা করছি।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা তাদের মতবিনিময়ের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। গণতন্ত্র হত্যাকারী, ফ্যাসিস্ট সরকার মানুষের ওপর দীর্ঘদিন অত্যাচার, নির্যাতন চালিয়ে মানুষকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে তার থেকে মুক্তি পেয়ে মুক্ত পরিবেশে সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম বসেছেন বিএনপির নেতাদের সঙ্গে। বর্তমান পরিস্থিতিতে কী কী করা যায়, সে বিষয়ে তারা মতামত দিয়েছেন। সরকারও তাদের মতামত জানিয়েছে।

এখন মনে করি সরকারকে সহায়তা করা প্রতিটি দেশপ্রেমিক মানুষের একমাত্র কর্তব্য এমন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে সে মহলটি, যারা মানুষের অধিকার হরণ করেছিল, তারা আবার বাইরে থেকে, এখান থেকে পালিয়ে গিয়ে ভারতে অবস্থান নিয়ে, সেখান থেকে বাংলাদেশের বিজয় নস্যাৎ করার চক্রান্ত করছে।

আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, দুর্ভাগ্যজনক, এত হত্যা-নির্যাতনের পরও সেই দলটি আবারও বিভিন্ন রকম কথা বলছে। তিনি মনে করেন এ বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। সব দলের সঙ্গে সরকারের কথা বলা প্রয়োজন, কিন্তু হত্যাকারীর সঙ্গে নয়। অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরির সময় দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে জনগণের বিজয় নষ্ট করার ষড়যন্ত্র করছে বলেও জানান তিনি। গণমাধ্যমে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা চলছে ভারত থেকে। ছাত্র আন্দোলন ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতেই জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলেন জানান এই ইসলামী দলের নেতা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close