বিশেষ প্রতিনিধি
পদত্যাগ করে দেশ ছাড়লেন শেখ হাসিনা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে একটাই দাবি ছিল- সরকারের পদত্যাগ। এই এক দফা দাবি আদায়ে গতকাল সোমবার দুপুরে ছাত্র জনতা যখন রাস্তায় রাস্তায়, মুখে মুখে স্লোগান, ঘর থেকে বের হচ্ছিলেন আরো মানুষ। রাজপথ থেকে গলিপথে শুধুই জনতার ঢল। তখন রটে গেল বার্তা- পদত্যাগ করেছেন শেখ হাসিনা। জনদাবির মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে তিনি পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগ করে বেলা আড়াইটার দিকে থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টার শেখ হাসিনাকে নিয়ে যাত্রা করে। তার সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা। হেলিকপ্টারটি ভারতের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। তারপরই পথে পথে নামে আনন্দ মিছিল। এই মিছিল যেন আর শেষ হয় না। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন গত ১১ জানুয়ারি। তার প্রায় ছয় মাসের মাথায় নজিরবিহীন ছাত্র জনতার বিক্ষোভের মুখে তিনি গতকাল পদত্যাগ করে হেলিকপ্টারযোগে দেশ ছাড়েন। তার আগে ১৯৯৬ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদে নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, শেখ হাসিনা ভারতে পৌঁছেছেন। তার সঙ্গে তার বোন শেখ রেহানা ছাড়াও পরিবারের অন্য সদস্যরাও রয়েছেন। ভারতের আগরতলার উদ্দেশে তিনি রওনা হন। অন্য দেশে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ‘সেফ প্যাসেজ’ দেবে ভারত সরকার। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসও শেখ হাসিনার ভারত পৌঁছানোর খবর নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, শেখ হাসিনা গণভবন ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার আগে একটি বক্তব্য রেকর্ড করতে চেয়েছিলেন। জানা গেছে, সামরিক একটি হেলিকপ্টারে করে শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যরা ভারতের উদ্দেশে রওনা দেন।
দুপুরে সব বাধা উপেক্ষা করে গণভবনে ঢোকে সাধারণ মানুষ। বিকেল ৩টায় তারা ছিলেন উল্লসিত। তার আগে গণভবনের সব ধরনের নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয়। গতকাল লং মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচিতে রাজধানীর রাজপথ দখলে নেন আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা। দুপুর ২টার পর শাহবাগ, সায়েন্সল্যাব, যাত্রাবাড়ী, রামপুরা, বাড্ডা, খিলগাঁও, মোহাম্মদপুর, মহাখালী, গাবতলীসহ ঢাকার সব গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখলে নেয় আন্দোলনকারীরা।
"