নিজস্ব প্রতিবেদক
বঙ্গবন্ধু মুজিব চিরঞ্জীব
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দৈহিকভাবে হত্যা করা হলেও তার মৃত্যু নেই। তিনি চিরঞ্জীব। কেননা একটি জাতিরাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা এবং স্থপতি তিনিই। যতদিন এ রাষ্ট্র থাকবে, ততদিন অমর তিনি। সমগ্র জাতিকে তিনি বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রেরণায় প্রস্তুত করেছিলেন ইংরেজ আমল পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে এবং পাকিস্তানের প্রায় ঔপনিবেশিক শাসক-শোষক ও পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে তিনি বাংলাদেশের মানুষকে সাহস জুগিয়ে ছিলেন। এ কারণে চিরঞ্জীব তিনি, বাঙালি ও দেশের মুক্তিকামী মানুষের রাজনৈতিক চেতনায়।
বঙ্গবন্ধু কেবল একজন ব্যক্তি নন, এক মহান আদর্শের নাম। যে আদর্শে উজ্জীবিত হয়েছিল গোটা দেশ। বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র আর ধর্মনিরপেক্ষ দর্শনে দেশের সংবিধানও প্রণয়ন করেছিলেন স্বাধীনতার স্থপতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শোষক আর শোষিতে বিভক্ত সেদিনের বিশ্ববাস্তবতায় বঙ্গবন্ধু ছিলেন শোষিতের পক্ষে।
পাকিস্তানি শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ২৪ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতার যে ডাক দিয়েছিলেন তা অবিস্মরণীয়। সেদিন তার বজ্রকণ্ঠে উচ্চারিত ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম/এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ অমর এ আহ্বানেই স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল নিপীড়িত কোটি বাঙালি। সেই অসীম সাহসী ঘোষণায় বাঙালি হয়ে উঠেছিল লড়াকু, বীরের জাতি।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট রাতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে নিজ বাসভবনে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে বুলেটের বৃষ্টিতে ঝাঁঝরা করে দিয়েছিল স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি ও তাদের সঙ্গে হাতমিলানো দেশের শত্রুরা।
মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত অপশক্তির ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি। তারা আবারও সক্রিয় হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে কমপক্ষে ২০ বার হত্যা করতে চেয়েছে তারা। কিন্তু সফল হয়নি। এখন কোটা সংস্কার আন্দোলনে কমলমতি শিক্ষার্থীদের ঘাড়ে ভর করেছে সেই একাত্তরের ঘাতক এবং ১৯৭৫ সালের ঘাতকের নতুন প্রজন্মের জঙ্গি ও মৌলবাদী খুনিরা। এদের প্রতিহত করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অসাম্প্রদায়িকতা ও নারী মুক্তির পক্ষে দাঁড়াতে হবে দেশবাসীকে। এ সেক্যুলার চেতনা সারা জীবন লালন করে গেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। সে স্বপ্নের আলোকেই তিনি গড়তে চেয়েছিলেন সমাজ। সেই স্বপ্ন আজও জগরুত আছে বাংলাদেশের হৃদয়ে।
"