বিশেষ প্রতিবেদক
সড়ক পরিবহনে এবার সার্ভিস চার্জের ফন্দি!
সড়ক ও মহাসড়কের ৭৩টি স্থান থেকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন সার্ভিস চার্জ আদায় করতে চায়। এজন্য ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সম্প্রতি চিঠি দিয়েছেন। তবে এই চিঠি পাওয়ার পর পুলিশ কঠোরভাবে চাঁদাবাজি দমন করার ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানা গেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই চিঠির মাধ্যমে চাঁদাবাজির কোনো অনুমতি দেওয়া হবে না।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তালিকাসহ চিঠিটি পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এই চিঠি নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা অবশ্য প্রশ্ন তুলেছেন। তিন বছর আগে পরিবহন নেতারাই ঘোষণা দিয়েছিলেন সড়ক বা মহাসড়কে চাঁদাবাজি করা যাবে না। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের অধীনে প্রায় আড়াইশ শ্রমিক ইউনিয়ন রয়েছে। ফেডারেশন এসব ইউনিয়নের সদস্যদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা পায়। তদুপরি সার্ভিস চার্জ সংগ্রহের জন্য দেশের ৬৪ জেলার ৭৩টি স্থান নির্ধারণ করে একটি তালিকা তৈরি করেছে ফেডারেশন। ফেডারেশন চিঠির সঙ্গে এই তালিকাও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী প্রতিদিনের সংবাদকে গতকাল বিকেলে বলেছেন, পরিবহন শ্রমিকদের কল্যাণের জন্যই এই সার্ভিস চার্জ নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ খোকন গতকাল সোমবার দুপুরে প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে তা মূলত পরিবহনে ডিজিটাল চাঁদাবাজি শুরুর উদ্দেশ্যেই। এটা আমরা সমর্থন করি না। এই চিঠি শ্রম আইন ও সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর পরিপন্থি। শ্রম আইনে বেসিক ইউনিয়নের তার সদস্যদের কাছ থেকে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের নিবন্ধনকৃত সংবিধান মোতাবেক মাসিক চাঁদা আদায় করার এখতিয়ার আছে। ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত ইউনিয়ন ফেডারেশনকে মাসিক ৫০০ টাকা হারে চাঁদা দেবে এটা আইনসম্মত। বিভিন্ন ইউনিয়ন ফেডারেশনকে তো চাঁদা দিচ্ছে। এবার তাহলে ফেডারেশন কেন সার্ভিস চার্জের নামে চাঁদাবাজির ফন্দি করছে?
অবশ্য বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বলছেন, তার চিঠিতে যে সার্ভিস চার্জের কথা বলা হয়েছে তাকে চাঁদাবাজি বলা সমীচীন নয়। পরিবহন মালিক বা শ্রমিকদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থ তোলা হবে।
পরিবহন শ্রমিকদের কল্যাণের জন্য সার্ভিস চার্জের অর্থ ব্যয় করা হবে জানিয়ে ওসমান আলী বলেছেন, পরিবহন শ্রমিকদের চিকিৎসা, বিয়ে ছাড়াও কোনো দুর্ঘটনা বা ঘটনায় কোনো শ্রমিক মারা গেলে তার পরিবারকে তারা অর্থসহায়তা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রসঙ্গত গত বছরের ১৯ এপ্রিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বৈঠকে মহাসড়কে কোনো ধরনের অবৈধ যানবাহন চলতে পারবে না ও যানবাহন আটক করে চাঁদা আদায় করা যাবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়াও সিদ্ধান্ত হয়েছিল শ্রমিক নেতাদের নামে গাড়ি থেকে অর্থ তোলা যাবে না।
"