প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৮ নভেম্বর, ২০২৩

গাজায় অনাহারে বাসিন্দারা মিলছে না একটা রুটিও

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বলেছে, গাজার বেসামরিক নাগরিকরা অনাহারে ভুগছেন। কারণ সেখানে একেবারে প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পানি পাওয়া যাচ্ছে না। একটি মাত্র রুটিও জুটছে না অনাহারে থাকা নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের ভাগ্যে। এমনি অবস্থা বিরাজ করছে ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের গাজা এলাকায়। খবর বিবিসি, আলজাজিরা ও এএফপির।

সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক সিন্ডি ম্যাককেইন এক বিবৃতিতে বলেন, শীত দ্রুত ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে অনিরাপদ ও জনাকীর্ণ বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের চরম ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ফলে গাজার বেসামরিক নাগরিকদের বেশিরভাগ সময় অনাহারে থাকতে হচ্ছে। খাদ্যের অভাবে ভীষণ কষ্ট পাচ্ছে নবজাতক ও অবুঝ শিশুরা। মা-বাবারাও পারছেন না অবুঝ শিশুদের মুখে কিছু দিতে। গাজায় সপ্তাহ ধরেই প্রয়োজনীয় খাবারের অভাব বৃদ্ধির বিষয়ে সতর্ক করে এ সংস্থা বলেছে, সেখানে এখন একটি রুটিও দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে বা রুটির দেখাই মিলছে না। শুধু একটি সীমান্ত ক্রসিং দিয়ে আসা খাদ্যসামগ্রী দিয়ে গাজার মানুষের বর্তমান ক্ষুধার চাহিদা মেটানো একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তারা বলেছে, গাজায় খাদ্যসামগ্রী আনার জন্য দ্বিতীয় নিরাপদ পথ দ্রুত খোলা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ডব্লিউএফপি বলেছে, জ্বালানির অভাব খাদ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করছে। মঙ্গলবার মিশর থেকে আসা ট্রাকগুলো অপর্যাপ্ত জ্বালানির কারণে বেসামরিক লোকদের কাছে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিতে পারেনি। গাজায় পাঠানো খাদ্যের চাহিদার তুলনায় পরিমাণ ‘একেবারেই অপর্যাপ্ত’। সংস্থাটি সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, এসব খাদ্যসামগ্রী দিয়ে গাজার জনগণের ন্যূনতম দৈনিক ক্যালোরি চাহিদার মাত্র ৭ শতাংশ পূরণ করা সম্ভব।

গাজার দক্ষিণের শহর খালি করতে লিফলেট : গাজায় যুদ্ধ শুরুর প্রাক্কালে উত্তরাঞ্চলের ১১ লাখের বেশি বাসিন্দাকে ঘরবাড়ি ছেড়ে দক্ষিণে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল ইসরায়েল। এবার সেই দক্ষিণের খান ইউনিসের চারটি শহর খালি করার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এ নিয়ে লিফলেট ফেলেছে তারা। ইসরায়েলি বাহিনী গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিস এলাকার চারটি শহরের লোকজনকে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বলেছে। ইসরায়েলি বাহিনী গত বুধবার রাতে চারটি শহরে লিফলেট ফেলেছে। শহরগুলো হচ্ছে, বনি শুহাইলা, খুজা, আবাসান ও কারারা।

খান ইউনিস হলো দক্ষিণ গাজার বৃহত্তম এলাকা, যেখানে গাজা সিটিসহ উত্তর গাজা থেকে লোকজন পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে। খান ইউনিসে গত অক্টোবরের আগে ৪ লাখ মানুষের বাস ছিল। উত্তর গাজার লোকজন পালিয়ে দক্ষিণে আশ্রয় নেওয়ায় সেখানে এখন সেখানে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ১০ লাখের বেশি। লাখ লাখ বাস্তুচ্যুত মানুষ এখন খান ইউনিসের অস্থায়ী ক্যাম্প, হাসপাতাল ও স্কুল মাঠে বসবাস করছে। এরই মধ্যে লিফলেট ফেলেছে ইসরায়েলি বাহিনী। লিফলেটে বলা হয়, নিজেদের নিরাপত্তার জন্য অবিলম্বে বাড়িঘর খালি করে আশ্রয়কেন্দ্রে যাও।

শিগগিরই ওই অঞ্চলে হামলা জোরদারের ইঙ্গিত দিয়ে লিফলেটে আরো বলা হয়, কেউ সন্ত্রাসবাদীদের অবস্থান বা তাদের ঘাঁটির কাছাকাছি থাকলে তাদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। কেননা সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত প্রতিটি বাড়ি লক্ষ্যবস্তু করা হবে। মাস খানেক আগে ইসরায়েল গাজার উত্তরে স্থল হামলা শুরু করার আগে একই ধরনের লিফলেট ফেলেছিল। গত ৭ অক্টোবর থেকে উত্তর গাজায় নির্বিচার বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এর দুই সপ্তাহের মাথায় সেখানে স্থল হামলাও শুরু করেছে ইসরায়েলি ট্যাংক ও সেনা। ইসরায়েলি হামলায় গত দেড় মাসে গাজার উত্তরে ১২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৩১ হাজার। হতাহতদের মধ্যে নারী ও শিশুই বেশি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close