প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৭ নভেম্বর, ২০২৩

জাতিসংঘে রোহিঙ্গা প্রস্তাব গৃহীত

বাংলাদেশের মানবিক সহায়তার প্রশংসা

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে ‘মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক একটি প্রস্তাব গত বুধবার (১৫ নভেম্বর) রাতে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। প্রস্তাবটি যৌথভাবে উত্থাপন করে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।

জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, প্রস্তাবটিতে ১১৪টি দেশ সহপৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করেছে যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় উঠে এসেছে। ১.২ মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের উদারতা এবং মানবিক সহায়তার ভূয়শী প্রশংসা করা হয়েছে এতে। ভাসানচর প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা হয়েছে।

গৃহীত প্রস্তাবে মিয়ানমারের অবনতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। রোহিঙ্গা সংকটের মূল কারণগুলো উদ্ঘাটন এবং মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের স্বপ্রণোদিত, নিরাপদ এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনে রাখাইনে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান রয়েছে ওই প্রস্তাবে।

জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন জানায়, প্রস্তাবে সাধারণ পরিষদের সদস্যদের মিয়ানমারে সব ধরনের সহিংসতার অবসানের দাবি জানাতে বলা হয়েছে। এতে বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করতে আসিয়ানের পাঁচ দফা ঐকমত্যের দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলার অগ্রগতি এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের কৌঁসুলির তদন্তকে স্বাগত জানানো হয়েছে। সর্বোপরি, এবারের প্রস্তাবে ‘রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড বার্ডেন শেয়ারিং’ (দায় ও বোঝা ভাগাভাগি) নীতির আওতায় জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো যাতে বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখে সে বিষয়ে জোরালো আহ্বান জানানো হয়েছে।

প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়ার পর জাতিসংঘে বাংলাদশ স্থায়ী মিশনের প্রতিনিধি বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি ছোট দেশ। আমাদের ভূখণ্ডে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘস্থায়ী উপস্থিতির কোনো সুযোগ নেই। তাদের অবশ্যই নিজ মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে।’

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের আগ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অংশীদারদের কাছে থেকে পর্যাপ্ত অর্থায়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের প্রতিনিধি। বক্তব্যে তিনি আসিয়ানসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন জানায়, চলমান বিভিন্ন বৈশ্বিক সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে, প্রস্তাবটিতে জাতিসংঘের অসংখ্য সদস্য রাষ্ট্রের সহপৃষ্ঠপোষকতা এক অনন্য সফলতার ইঙ্গিত বহন করে। রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় এটি বিশ্বব্যাপী সংহতির একটি জোরালো বার্তা।

রেজুলেশনটি গৃহীত হওয়ার পর জাতিসংঘে বাংলাদশ স্থায়ী মিশনের প্রতিনিধি তার বক্তব্যে বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি ছোট দেশ যেখানে জনসংখ্যার উচ্চ ঘনত্ব এবং খুব সীমিত সম্পদ রয়েছে। আমাদের ভূখণ্ডে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘস্থায়ী উপস্থিতির কোনো সুযোগ নেই। তাদের অবশ্যই তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে।’

মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের স্বপ্রণোদিত, নিরাপদ এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমার সরকারের রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতির উন্নতির প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে বাংলাদেশের প্রতিনিধি এ ব্যাপারে আসিয়ানসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের পূর্ব পর্যন্ত, তিনি অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে, বাংলাদেশে অস্থায়ী ক্যাম্পে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক অংশীদারদের কাছ থেকে পর্যাপ্ত অর্থায়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close