নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৬ নভেম্বর, ২০২৩

দেশজুড়ে কড়া নিরাপত্তা

১৮১ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন * বেড়েছে গোয়েন্দা নজরদারি * আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য করলে পুলিশ কঠোর হবে

তফসিল ঘোষণা-পরবর্তী বিশৃঙ্খলা হলে তা ঠেকাতে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নাশকতা ও বাসে আগুন দেওয়া ঠেকাতে পুলিশের পক্ষ থেকে ওড়ানো হবে ড্রোন। ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশের পক্ষ থেকে মাঠপর্যায়ের সদস্যদের এসব বার্তা দেওয়া হয়েছে।

গোয়েন্দারা মনে করছেন, তফসিল ঘোষণা-পরবর্তী চোরাগোপ্তা হামলা হতে পারে। হামলা রোধে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে। তফসিল ঘোষণা ঘিরে পুলিশকে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। সে অনুযায়ী মাঠে আরো সতর্ক অবস্থানে পুলিশ।

বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উপপরিচালক (প্রকল্প-প্রশিক্ষণ) ও গণসংযোগ কর্মকর্তা (অতি. দায়িত্ব) মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ঠেকাতে সারা দেশে আনসার সদস্য মোতায়েন রয়েছে। অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে একযোগে কাজ করবে তারা।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, বুধবার পোশাক কারখানার নিরাপত্তা জোরদারে ঢাকা ও আশপাশের জেলায় ৩৩ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৮১ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন রয়েছে।

ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অপারেশন্স) বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, তফসিল ঘোষণা সামনে রেখে ঢাকা শহরের নাগরিকদের ও জানমালের নিরাপত্তায় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির চেষ্টা করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ ও নির্দিষ্ট স্থানে ওড়ানো হবে ড্রোন।

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, তফসিল ঘোষণার সময় কিংবা তফসিল-পরবর্তী সময়ে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছি। র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও সারা দেশের ১৫টি ব্যাটালিয়ন নাশকতা এড়াতে কাজ করে যাচ্ছে। এ ছাড়া যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় র‌্যাবের হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এদিকে, আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য করলে পুলিশ কঠোর অবস্থান নেবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান। গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, টোটাল সিকিউরিটি দেখার জন্য আমি এখানে এসেছিলাম এবং সবার সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করলাম। টোটাল সিকিউরিটি সিস্টেম দেখা মূল উদ্দেশ্য ছিল। তফসিল ঘোষণাকে ঘিরে পুলিশ কী ধরনের প্রস্তুতি রাখছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন ও নগরবাসী নিরাপত্তা বিধানের জন্য যেসব কাজ পুলিশের করা দরকার, বিশেষ করে আমাদের সিকিউরিটি চেকআপ (নিরাপত্তা তল্লাশি) এবং অন্য যেসব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা আছে, সেগুলোর নিরাপত্তা দেখা।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আন্দোলন যদি নিয়মতান্ত্রিক হয়, পুলিশ তাদের সেই আন্দোলন যাতে সুন্দরভাবে হয় সেগুলোর জন্য নিরাপত্তা বিধান করবে। কিন্তু যদি কোনো নৈরাজ্য হয়, শান্তিশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী কোনো কিছু হয়, সেখানে পুলিশ অবশ্যই কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবে।

অন্যদিকে, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ জানিয়েছেন, তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে যাতে কোনো নৈরাজ্য না হয় সেজন্য সারা দেশে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

হারুন অর রশিদ বলেন, তফসিল ঘিরে কেউ নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করলে নির্বাচন কমিশনের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্বার্থানেষী মহল কোথায় বসে অনলাইনে নাশকতার নির্দেশনা দিচ্ছে তা গোয়েন্দা পুলিশ জানে। তাদের শিগগিরই গ্রেপ্তার করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close