নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

তারুণ্যের রোডমার্চ

ভোট চুরির পাঁয়তারা হচ্ছে : ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ মানুষের ভোটের অধিকার চুরি করেছে। ২০১৪ সালে ভোট চুরি করেছে, ২০১৮ সালে ভোট চুরি করেছে এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনেও ভোট চুরির পাঁয়তারা করছে। কিন্তু জনগণ এবার আর ভোট চুরি করতে দেবে না। গোটা বিশ্ব এখন বিশ্বাস করে, বাংলাদেশে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে প্রহসনের নির্বাচন হয়েছে। রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টায় বগুড়া শহরতলির এরুলিয়া বাজারে রাজশাহী বিভাগের ‘তারুণ্যের রোডমার্চ’ কর্মসূচি উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এদিকে নাটোরে একটি মাইক্রোবাস আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ আগুনের ঘটনা সম্পর্কে স্থানীয় নেতারা পরস্পরবিরোধী মতপ্রকাশ করেছেন। সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বিএনপির তিন অঙ্গ সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল এ কর্মসূচির আয়োজন করেছে। রোডমার্চ উপলক্ষেবগুড়ায় আয়োজিত সমাবেশে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বক্তব্য দেন জেলা বিএনপি, কেন্দ্রীয় যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতারা। সাড়ে ১১টার পর বক্তব্য শুরু করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার বক্তব্যের পরই রাজশাহীর উদ্দেশে নেতাকর্মীদের গাড়িবহর যাত্রা শুরু করে।

আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থ দাবি করে সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘চাল, ডাল, তেল, লবণ প্রতিটি জিনিসের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে বলে কথা দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। এখন চালের কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা। মা-বোনেরা তাদের ছেলেমেয়েদের পাতে ডিম দিতে পারে না। তেলের দাম, বিদ্যুতের দাম তিন থেকে চার দফা বেড়েছে। সরকারের সেদিকে খেয়াল নেই। বিএনপির তিন অঙ্গ সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল সবক’টি বিভাগে ‘তারুণ্যের রোডমার্চ’ কর্মসূচির আয়োজন করছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার চুরি করে দেশকে ফোকলা করে দিয়েছে। চুরি করে সম্পদ বিদেশে পাঠায়। বিদেশে বাড়ি করে। সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ভোটচোরদের মধ্যে আছে আওয়ামী লীগের দুর্বৃত্তরা, প্রশাসনের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা, লুটেরারা। এদের কাউকে ছাড় দেওয়া যাবে না। এদের ওপর চোখ রাখতে হবে। জেলায় জেলায় তালিকা করতে হবে।

সমাবেশে যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন ওরফে টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানী, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, বিএনপির রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার, বগুড়া জেলা বিএনপি সভাপতি ও বগুড়া পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম বাদশাহ বক্তব্য দেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে রাজশাহীর উদ্দেশে রওনা হয় তারুণ্যের রোডমার্চের গাড়িবহর। বগুড়া ছাড়াও নাটোর ও সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, জয়পুরহাটের নেতাকর্মীরাও যোগ দেন। সমাবেশ শেষে মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে গাড়িবহর রাজশাহী অভিমুখে রওনা দেয়। বগুড়ার রোডমার্চ থেকে পর্যায়ক্রমে আদমদীঘি, সান্তাহার, নওগাঁর নওহাটা মোড়, মান্দা ফেরিঘাট ও কেশরহাটে পথসভা করে রাজশাহী নগরের লালন শাহ মুক্তমঞ্চণ্ডসংলগ্ন রাস্তায় সমাবেশের মধ্য দিয়ে তারুণ্যের রোডমার্চ শেষ হয়েছে। সমাবেশে রাজশাহী, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের নেতাকর্মীরাও যোগ দেন।

নাটোরে মাইক্রোবাসে আগুন : নাটোর সদর উপজেলার নাটোর-বগুড়া মহাসড়কে একটি মাইক্রোবাস আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলার দিঘাপতিয়া টেক্সটাইল মিলের সামনে মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে। জেলা বিএনপির নেতারা দাবি করেছেন, ওই মাইক্রোবাসে করে বিএনপি নেতাকর্মীরা বগুড়ায় রোডমার্চ কর্মসূচিতে অংশ নিতে যাচ্ছিলেন। তবে এ নেতাকর্মীদের নামণ্ডপরিচয় জানাতে পারেননি তারা। পুলিশ মাইক্রোবাস পোড়ানোর ঘটনা সত্য বলে জানালেও কারা, কেন পুড়িয়েছেন, তা জানাতে পারেননি।

নাটোর সদর থানার পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ছয় থেকে আট যুবক মোটরসাইকেল নিয়ে টেক্সটাইল মিলের সামনে অবস্থান নেয়। এ সময় নাটোর থেকে বগুড়া অভিমুখী একটি মাইক্রোবাস সেখানে পৌঁছালে ওই যুবকরা মাইক্রোবাসটি থামিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। মাইক্রোবাসের ১০-১২ আরোহী দ্রুত নেমে গিয়ে জীবন রক্ষা করেন। যাত্রীরা মাইক্রোবাস থেকে নেমে যাওয়ার সময় ওই যুবকরা তাদের এলোপাতাড়ি মারধর করেন। স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে নাটোর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এবং সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভায়।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক (ভারপ্রাপ্ত) শহিদুল ইসলাম জানান, ওই মাইক্রোবাসে লালপুর উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা বগুড়ায় দলীয় মহাসচিবের রোডমার্চ কর্মসূচিতে অংশ নিতে যাচ্ছিলেন। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা মাইক্রোবাসটি থামিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের কুপিয়ে জখম করে এবং মাইক্রোবাসটি পুড়িয়ে দেয়। আহত ব্যক্তিরা জীবনরক্ষার জন্য অজ্ঞাত স্থানে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে দাবি তার। তিনি মাইক্রোবাসের আরোহীদের পরিচয় জানাতে পারেননি।’

জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মালেক শেখ বলেন, মাইক্রোবাসে আগুন লাগানোর ঘটনায় আওয়ামী লীগের কেউ জড়িত ছিল না। বিএনপির অভিযোগ সত্য নয়। নাটোর সদর থানার ওসি নাসিম আহম্মেদ ঘটনাস্থল থেকে বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে মাইক্রোবাসটিকে দাউদাউ করে পুড়তে দেখেছি।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close