আবু সুফিয়ান
এশিয়া কাপ ফাইনাল
শ্রীলঙ্কাকে গুঁড়িয়ে শিরোপা ভারতের
রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপের ফাইনালে দুদলের মিলিয়ে খেলা হলো স্রেফ ২১.১ ওভার। ১৫.২ ওভারে মাত্র ৫০ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা। ওই রান তুলতে ৩৭ বলের বেশি খেলতে হয় ইশান কিশান আর শুভমান গিলের। ভারত ম্যাচ জিতেছে ১০ উইকেটে। ফাইনালের উত্তেজনা মাটি হয়ে গেল প্রথম পাঁচ ওভারে মধ্যেই। মোহাম্মদ সিরাজ আর জাসপ্রিত বুমরাহর সামনে অসহায় শ্রীলঙ্কা পড়ল বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। হার্দিক পান্ডিয়াও ঝাঁজ দেখালে স্বাগতিকদের ইনিংস থামল পঞ্চাশ ছুঁয়েই। ভারত মাত্র ৬.১ ওভারে আনুষ্ঠানিকতা সেরে জিতে নিল এশিয়া কাপে রেকর্ড অষ্টম শিরোপা। এ কেমন ফাইনাল ম্যাচ নেই কোনো উত্তাপ, নেই কোনো রোমাঞ্চ। অনেকে হয়তো অফিস করে বাসায় এসে এশিয়া কাপে ফাইনাল ম্যাচ খেলা দেখার জন্য টিভি সামনে বসেন কিন্তু একি শুরুর আগে শেষ হয়ে গেল এশিয়া কাপের ফাইনাল। যা দেখে ক্রিকেটপ্রেমীদের মাঝে হতাশ ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। এমন ফাইনাল কারো কাম্য ছিল না। তাসের ঘরও বুঝি এর চেয়ে মজবুত হয়। শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং দেখে যে কেউ তাই বলবে।
যে ম্যাচে কোনো দল ৫০ রানে গুটিয়ে যায় সেই ম্যাচে ব্যাটিং নিয়ে লেখার আসলে কিছু নেই। কাজটা করেছেন সিরাজ, তাকে সংগত করেছেন বুমরাহ আর হার্দিক। ৭ ওভার বল করে মাত্র ২১ রানে ৬ উইকেট নেন সিরাজ, প্রথম উইকেট কেবল নিয়েছিলেন বুমরাহ। শেষের তিন উইকেট আবার তুলেছেন হার্দিক, তাও মাত্র ৩ রান দিয়ে। এশিয়া কাপের আসরে এটিই কোনো দলের সর্বনিম্ন পুঁজি, সব মিলিয়ে নবম সর্বনিম্ন আর লঙ্কানদের নিজেদের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। দাসুন শানাকার দল এরকম বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ল ভরা গ্যালারির সামনে। ফাইনাল রাঙানোর আশা নিয়ে স্বাগতিক দর্শকরা এসেছিলেন বিপুল উৎসাহে। তাদের হতে হয়েছে চরম হতাশ। অথচ টস জিতে ব্যাটিং বেছে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পেতে চেয়েছিল শ্রীলঙ্কা। দারুণ সুইং বোলিংয়ে তাদের সেই স্বপ্নে শুরুতেই ধাক্কা দেন বুমরাহ। তার বেরিয়ে যাওয়া বল খোঁচা মেরে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন কুশল পেরেরা। এরপর মঞ্চে আসেন সিরাজ। চতুর্থ ওভারে তিনি হয়ে ওঠেন বিধ্বংসী। দুই দিকেই সুইং পাচ্ছিলেন, তবে লঙ্কানদের ব্যাটিংও হয়নি জুতসই। বাইরের বল তাড়া করে তারাও ডেকে এনেছেন বিপদ। পাথুম নিশানকা ড্রাইভ খেলে ক্যাচ দেন পয়েন্টে, চারিথা আসালাঙ্কাও তা-ই। সাদেরা সামারাবিক্রমা কাবু হন ভেতরে ঢোকা বলে। ধনঞ্জয়া ডি সিলভা বাইরের বল তাড়া করে দেন ক্যাচ। দাসুন শানাকা ফ্লিকের মতো খেলে বোল্ড। এক ওভারে ৪ উইকেট, পরের ওভারে আরেকটি নিয়ে। ১০ বলের মধ্যে ৫ উইকেট হয়ে যায় তার। ১২ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে সর্বনিম্ন রানে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে তারা।
স্রোতের বিপরীতে দুই অঙ্কে যান কুশল মেন্ডিস। যদিও টিকতে পারেননি বেশি। ৩৪ বলে ১৭ রান করে সিরাজের ভেতরে ঢোকা বলে হন বোল্ড। লঙ্কানদের স্কোর পঞ্চাশ পার হয় নয়ে নামা দুশন হেমন্তের কারণে। ১৫ বলে ১৩ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। শেষ উইকেটগুলো টপাটপ নিয়ে নেন হার্দিক। মামুলি রান তাড়ায় নিজে না নেমে গিলের সঙ্গে ইশানকে পাঠান রোহিত শর্মা। ইশান-গিল শুরু থেকেই খেলতে থাকেন আগ্রাসী। যে পিচে খানিক আগে লঙ্কনরা ধসে গেলেন, সেখানে তারা খেলেছেন অতি সাবলোলভাবে। অবশ্য মাথার ওপর ছিল না কোন চাপ। ১৮ বলে তিন চারে ২৩ রানে অপরাজিত থাকেন ইশান। ১৯ বলে ৬ চারে ২৭ করেন গিল।
শ্রীলঙ্কা : ৫০/১০ (১৫.২ ওভার)
ভারত : ৫১/০, (৬.১ ওভার)
ম্যাচসেরা : মোহাম্মদ সিরাজ
টুর্নামেন্ট সেরা : চায়নাম্যান কুলদ্বীপ; ফল : ভারত ১০ উইকেটে জয়ী
"