নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

দেশের অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে

জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী : মানুষ যেন আবার ভোট দেয় সেই আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করুন

দেশের অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে, উন্নয়ন যেন কেউ নষ্ট করতে না পারে, সে জন্য জনপ্রতিনিধিসহ দেশবাসীকে সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আমরাও এটা চাই যে, আজকে যে উন্নয়ন, সেটি দীর্ঘদিনের কষ্টের ফসল, এটি যেন কেউ আর নষ্ট করতে না পারে। ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল- বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রা সেটি যেন অব্যাহত থাকে। আমাদের বাংলাদেশ, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি এগিয়ে যাবে। আমরা সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করব, ইনশাআল্লাহ দেশের কোনো মানুষ দরিদ্র থাকবে না।

এ সময় মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সারা দেশের জনপ্রতিনিধিদের সোচ্চার হওয়ার পাশাপাশি তাদের তৃণমূলের মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন এবং মানুষ যেন আবার ভোট দেয়, সেই পরিবেশ তৈরি করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সরকারি বাসভবন গণভবনে প্রথমবারের মতো আয়োজিত ‘জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস-২০২৩’ উপলক্ষে সারা দেশের স্থানীয় সরকারের পাঁচটি স্তরের আট হাজারের বেশি জনপ্রতিনিধির বিশাল মিলনমেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সারা দেশ থেকে আগত জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা তৃণমূলের মানুষ জনগণের ভোটে নির্বাচিত, জনগণের সেবক। জনগণের কল্যাণে কাজ করা আপনার আমার সবারই দায়িত্ব। আর এই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে মানুষের সেবা করে এবং মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করে আপনারা এগিয়ে যাবেন। মানুষ একবার যখন আপনাদের ভোট দিয়েছে তারা যেন আবার ভোট দেয়, জনগণের সেই আস্থা ও বিশ্বাস আপনাদের অর্জন করতে হবে।

সরকারপ্রধান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সারা দেশেই যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রভূত উন্নয়ন করেছে। আবার ক্ষমতায় এলে কোন গ্রামে কোন রাস্তা কাঁচা রয়েছে, সেগুলো আর কাঁচা থাকবে না।’ স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের অঙ্গীকারের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন ঘোষণা দিয়েছি আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ করব। আমাদের যেটুকু সম্পদ আছে, এই সম্পদ নিয়েই আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সেভাবেই সবাইকে কাজ করার অনুরোধ জানাই।

জনপ্রতিনিধিদের প্রতি নিজ নিজ এলাকায় ফিরে গিয়ে জনগণের কাছে তার শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা একটানা তিনবার সরকারে এসেছি। ২০০৯ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে একটা স্থিতিশীল পরিবেশ রেখে আমরা উন্নয়নের কাজ করতে পেরেছি। গণতান্ত্রিক ধারাটা বজায় রাখতে পেরেছি। যার জন্য আমরা একেবারে গ্রাম পর্যন্ত উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখনো আমি জানি অনেক গ্রামে কাঁচা রাস্তা আছে। সেগুলো আল্লাহর রহমতে থাকবে না। ইনশাআল্লাহ আবার যদি জনগণের সেবার সুযোগ পাই, নিশ্চয়ই আমরা সেগুলোও পাকা করে দেব। কারণ প্রত্যেকটা গ্রাম শহরের মতো গড়ে উঠবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইবরাহিম স্বাগত বক্তব্য দেন। আরো বক্তব্য দেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, রাজশাহী সিটি করপোরেশন মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, খুলনা সিটি করপোরেশন মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, সিলেট সিটি করপোরেশন মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীসহ স্থানীয় সরকারের পাঁচটি স্তর তথা জেলা পরিষদ, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানরা বক্তব্য দেন।

তৃণমূলের অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রাখতে আগামী নির্বাচনে নৌকার বিজয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি নির্বাচনের পর আবারও এমন মিলনমেলায় ডাকার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আরেকবার দাওয়াত দিন, আমরা আমাদের অনেক সমস্যার কথা আপনাকে প্রাণখুলে জানাতে চাই।

সারা দেশের তৃণমূল থেকে আসা নির্বাচিত জনপ্রতিধিদের বক্তব্য দীর্ঘ সময় ধরে মনোযোগ দিয়ে শোনেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠান শেষে সারা দেশ থেকে আসা আট হাজারেরও বেশি জনপ্রতিনিধিকে মধ্যাহ্নভোজে আপ্যায়িত করেন প্রধানমন্ত্রী।

সরকার প্রতি বছর ২৫ ফেব্রুয়ারিকে ‘জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। ‘সেবা ও উন্নতির দক্ষ রূপকার, উন্নয়নে-উদ্ভাবনে স্থানীয় সরকার’ এই স্লোগান নিয়ে দিবসটি উদযাপন করা হচ্ছে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহি, কর্মতৎপরতা, গুরুত্ব ও সর্বোপরি জনসচেতনতা তৈরি এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়াতে দিবসটি উদযাপন করছে সরকার। এ বছর প্রথম বর্ষ হিসেবে এ কর্মসূচি ১৪ সেপ্টেম্বর পালিত হলো।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close