নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৫ জুন, ২০২৩

পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত

পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। বাজারে পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সীমিত আয়ের ও শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট লাঘবসহ সব ভোক্তার স্বার্থরক্ষায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।

সোমবার (৫ জুন) থেকেই পেঁয়াজ আমদানি শুরু করা যাবে। রবিবার (৪ জুন) কৃষি মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম ভূইয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এদিকে, ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে প্রায় প্রতি বছরই পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল করে তোলেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। নিজেরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দেন ইচ্ছামতো। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ঈদুল আজহার এক মাস আগেই বাজারে পেঁয়াজের দাম আকাশচুম্বী। এরই মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ভালো মানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি প্রায় এক শ টাকা।

মাত্র দেড় মাস আগে রমজানে এক কেজি পেঁয়াজ ৩৫ টাকায় পাওয়া গেলেও এখন তা বেড়ে প্রায় তিন গুণ হয়েছে। সবশেষ দুদিনের ব্যবধানে কেজিতে দাম বেড়েছে ১৫ টাকা। রবিবার (৪ জুন) রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকায়।

এদিকে, পেঁয়াজের দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ক্রেতাদের অভিযোগ, প্রতি বছরই কোরবানির ঈদ সামনে রেখে অসাধু বিক্রেতারা পেঁয়াজ নিয়ে সিন্ডিকেট করেন। তবে বিক্রেতাদের দাবি, মূলত ভারত থেকে আমদানি না হওয়ায় পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। এমনটা চলতে থাকলে আসন্ন কোরবানির ঈদে পেঁয়াজের বাজার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।

কৃষকের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে চলতি বছরের ১৫ মার্চ থেকে পেঁয়াজের আইপি (ইমপোর্ট পারমিট) বন্ধ করে দেয় সরকার। ফলে পরদিন ১৬ মার্চ থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকেই ধীরে ধীরে দাম বাড়তে থাকে রান্নায় অতিপ্রয়োজনীয় মসলাজাতীয় পণ্যটির।

রাজধানীর সেগুনবাগিচা, শান্তিনগর, ফকিরাপুল, মালিবাগ বাজার, মালিবাগ রেলগেট বাজার, খিলগাঁও বাজার এবং এসব এলাকার খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি পেঁয়াজ (দেশি কিং) বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। এ ছাড়া দেশি (পাবনা) বিক্রি হচ্ছে ৯৫ টাকা কেজি। দেশি ও চায়না রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, আদা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা প্রতি কেজি।

পেঁয়াজ কিনতে খিলগাঁও বাজারে এসেছেন আয়েশা খাতুন। দুদিন আগেও তিনি ৮০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ কিনেছেন, রবিবার ৯৫ টাকা চাইছেন বিক্রেতারা।

আয়েশা বলেন, দুদিনের ব্যবধানে কীভাবে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১৫ টাকা বেড়ে যায়? দুদিন আগে কিনেছিলাম, আজ আবার কিনতে এলাম। কিন্তু বাজারে এসে দাম শুনেই হতবাক।

একই কথা জানান আরেক ক্রেতা বোরহান উদ্দিন। তিনি বলেন, কোরবানির ঈদের এখনো প্রায় এক মাস দেরি, এর মধ্যেই দাম বেড়েছে অনেক। রোজায় ৩৫ টাকা দরে পেঁয়াজ কিনেছি, এখন দাম প্রায় তিন গুণ। এখনই সরকারিভাবে অভিযান পরিচালনা করে পেঁয়াজ মজুদদারদের সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে। এটা না হলে কোরবানি আসতে আসতে ২০০ টাকায় পেঁয়াজ কেনা লাগবে।

তবে ক্রেতাদের অভিযোগের সঙ্গে একমত নন মালিবাগ রেলগেট বাজারের খুচরা বিক্রেতা নাজমুল হোসেন। তিনি বলেন, দেশে পেঁয়াজের ঘাটতি থাকে, আমদানির মাধ্যমে তা মেটানো হয়। ফলে আমদানি বন্ধের পর দাম ধীরে ধীরে পাইকারিতে বাড়তে থাকে। এখন আমদানি উন্মুক্ত হলে দাম আবার কমে আসতে পারে।

হাসান নামের অপর এক বিক্রেতা বলেন, আমরা খুচরা বিক্রি করি, দর-দাম নিয়ে মাথাব্যথা নেই। পাইকারি বাজারে দাম বাড়লে আমরা সেভাবে বিক্রি করি। আবার পাইকারিতে দাম কমলে খুচরায়ও কমে যায়। তবে বর্তমানে যেভাবে দাম বাড়ছে, এভাবে চলতে থাকলে আসন্ন কোরবানির ঈদে পেঁয়াজের বাজার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

প্রসঙ্গত, কৃষকের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে চলতি বছরের ১৫ মার্চ থেকে পেঁয়াজের আইপি (ইমপোর্ট পারমিট) অর্থাৎ আমদানি অনুমতি বন্ধ করে দেয় সরকার। ফলে পরদিন ১৬ মার্চ থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। আর, এরপর থেকেই ধীরে-ধীরে দাম বাড়তে থাকে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close