নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
রূপগঞ্জে তেলের জাহাজে বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৮
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে একটি তেলবাহী জাহাজের ইঞ্জিনরুমে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। রবিবার (৪ জুন) রাত দেড়টার দিকে রূপগঞ্জে গাজী সেতু সংলগ্ন দড়িকান্দি ডকইয়ার্ডে ওটি সাংহাই-৮ নামে জাহাজে এ বিস্ফোরণ ঘটে। এ সময় আগুনের শিখা ২০ থেকে ৩০ ফুট উচ্চতায় ওঠে। খবর পেয়ে কাঞ্চন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জাহাজের আগুন নেভায়। এ ঘটনায় দগ্ধ হয়েছেন আটজন। তাদের মধ্যে পাঁচজনকে রাজধানীর জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্ল্যাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।
রূপগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউর রহমান জানান, শনিবার রাত দেড়টার দিকে উপজেলার গাজী সেতুর পাশে দড়িকান্দি ডকইয়ার্ডে নিজস্ব জেটিতে নোঙর করে রাখা ওটি সাংহাই-৮ তেলবাহী ট্যাংকারটিতে বিস্ফোরণ ঘটে। বন্দরে তেল খালাস করার পর খালি জাহাজটি ঘাটে নোঙর করা ছিল। রাতে ট্যাংকারের ভেতরে জমে থাকা গ্যাস থেকে বিস্ফেরণ ঘটে। মুহূর্তেই জাহাজে আগুন ধরে গেলে শ্রমিক ও কর্মচারীরা দগ্ধ হন। তবে কারও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় দগ্ধরা হলেন- জাহাজটির স্টাফ আবদুুল মান্নান রাহাদ (২৩), হুমায়ুন কবির (৫৪), তাজুল ইসলাম লিমন (২৪), ইমতিয়াজ আহমেদ (৪২), রুবেল (৩৮), সোহেল (৩৮), নাজমুল (৩৩) ও রাকিব (২৪)।
জাহাজটির দগ্ধ শ্রমিক আবদুল মান্নান রাহাদ জানান, তারা জাহাজে করে চট্টগ্রাম থেকে নরসিংদীতে তেল নিয়ে যান। সেখানে তেল আনলোড করে তারা জাহাজটি নিয়ে রূপগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের ডকইয়ার্ডে ভেড়ান। ট্যাংকারে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হওয়ার পরপরই জাহাজে আগুন ধরে যায়। এ সময় জাহাজের অনেকেই শীতলক্ষ্যা নদীতে লাফিয়ে পড়েন। পরে সহকর্মীদের সহযোগিতায় সাঁতরে তারা তীরে ওঠেন। এরমধ্যেই কয়েকজন দগ্ধ হন। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আলমগীর হোসেন বলেন, ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। জাহাজের তেলবাহী খালি ট্যাংকারে জমা গ্যাস থেকে বিস্ফোরণ হয়ে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি তদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে।
এ বিষয়ে ইছাপুরা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান জানান, ঘটনার পর থেকে জাহাজের ম্যানেজার আকবর আলী পলাতক রয়েছেন।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্ল্যাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক মো. তরিকুল ইসলাম জানান, জাহাজে আগুনের ঘটনায় আটজনকে বার্ন ইনস্টিটিউটে আনা হয়েছিল। তাদের মধ্যে পাঁচজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন। দগ্ধ তাজুলের শরীরের ৬৭ শতাংশ, হুমায়ুনের ৩০, ইমতিয়াজের ৩০, রুবেলের ৪৫, সোহেলের ৪৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাদের সবার শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। এ ছাড়া রাকিব, রাহাদ ও নাজমুলকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
গত বছরের ১৬ নভেম্বর এই জাহাজটির মেরামতের কাজ করার সময় ট্যাংকার বিস্ফোরণে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল।
"