নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০১ এপ্রিল, ২০২৩

ষষ্ঠ-সপ্তমের পাঠ্যসূচির গাইড বইয়ের দৌরাত্ম্য

বহু চেষ্টার পরও থামানো যাচ্ছে না গাইড বইয়ের দৌরাত্ম্য। বাজারে মিলছে নতুন শিক্ষাক্রমের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির সহায়ক বই। এদিকে নতুন শিক্ষাক্রমও মুখ থুবড়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) বলছে, গাইড বইয়ের সঙ্গে মূল্যায়ন পদ্ধতির কোনো মিল থাকবে না।

শিক্ষার্থীরা করে করে শিখবে, দক্ষ হবে। এতেই কমবে মুখস্থ করার প্রবণতা। থাকবে না কোচিং বা গাইড বইয়ের দৌরাত্ম্য। চালু হওয়া নতুন কারিকুলাম নিয়ে এমনটা বলা হলেও বছরের পৌনে তিন মাসের মাথায় বাজারে মিলছে ষষ্ঠ-সপ্তম শ্রেণির নতুন পাঠ্যসূচির গাইড বা সহায়ক বই।

রাজধানীর বইয়ে দোকানগুলো ছেয়ে গেছে এমন গাইড বইয়ে। এর ফলে নতুন কারিকুলাম মুখ থুবড়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন শিক্ষকরা। উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ জহুরা বেগম জানান, গাইড বইয়ের কারণে সেই পুরনো পথেই রয়ে যাবে শিক্ষাব্যবস্থা।

‘সহায়ক বই’ নামে গাইডে বাজার সয়লাব। ‘একের ভেতর সব’ নাম দিয়ে তৈরি এসব গাইড এখন বিক্রিও হচ্ছে বেশ। স্কুলে-স্কুলে এসব গাইডের সৌজন্য কপিও পাঠানো হচ্ছে। পাঁচ খণ্ডের এক সেট বইয়ের দাম নেওয়া হচ্ছে এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা।

তাহলে কি নতুন কারিকুলামে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের আস্থা নেই- এমন প্রশ্ন উঠলেও নকল করতে পারে এমন শঙ্কায় গাইড বইয়ের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে সামষ্টিক মূল্যায়ন পদ্ধতির বিষয়টি এখনো স্পষ্ট করছে না এনসিটিবি।

এনসিটিবির সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমের গাইড বই অবৈধ। এ ধরনের বই পড়ে কোনো লাভ হবে না। আমাদের মূল্যায়নের বড় অংশ হবে ধারাবাহিক মূল্যায়ন। ধারাবাহিক মূল্যায়নে গাইড বই কোনো প্রভাব রাখতে পারবে না। ষষ্ঠ-সপ্তম শ্রেণির সামষ্টিক মূল্যায়নের (পরীক্ষা) নির্দেশনা আমরা কৌশলগত কারণে দিইনি, যাতে কেউ গাইড না তৈরি করতে পারে। গাইড প্রকাশকরা গত বছর থেকে এই নির্দেশনার জন্য ঘুরছে। আমাদের এ নির্দেশনা প্রস্তুত থাকলেও আমরা প্রকাশ করিনি।

মো. মশিউজ্জামান আরো বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমের গাইড অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা। এসবের মাধ্যমে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের কোনো লাভ হবে না। শুধু শুধু টাকা ও সময়ের অপচয় হবে।

আর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, এ ধরনের গাইড আসার কথা নয়। শিক্ষা আইন না থাকার কারণে, অনেক উদ্যোগই নেওয়া যাচ্ছে না। তবে উচ্চ আদালতের নির্দেশ ও ১৯৮০ সালের আইনে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত গাইড নিষিদ্ধ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close