নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৫ মার্চ, ২০২৩

চড়া দামেও জমজমাট ইফতার বাজার

দুপুর গড়িয়ে যেতেই জনবহুল স্থান এমনকি পাড়া-মহল্লায় খাবারের দোকানে ও রাস্তার পাশে খাবার সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা

পবিত্র রমজান মাসেই প্রথম দিনেই জমে উঠেছে ইফতার বাজার। শুক্রবার (২৪ মার্চ) পহেলা রমজানে রাজধানী ঢাকার সর্বত্রই ইফতারির বাহারি খাবারের পসরা দেখা গেছে। দুপুর গড়িয়ে যেতেই জনবহুল স্থান এমনকি পাড়া-মহল্লায় খাবারের দোকানে ও রাস্তার পাশে খাবার সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি ইফতারির দোকানে কয়েকটি খাবার আছেই আর তা হলো- মুড়ি, পিঁয়াজু, ছোলা ভাজি, চপ, বেগুনি, জিলাপি, বুরিন্দা। এলাকাভেদে এগুলোর সঙ্গে আরো মুখরোচক খাবারের আয়োজনও দেখা গেছে। তবে কোনো খাবারের দামই কম নয়, বরং চড়া। তারপরও প্রথম রোজায় ইফতারির থালা সাজানোর জন্য এসব দোকান থেকে খাবার কিনেছেন নগরবাসী। বিকেল গড়িয়ে বেলা পড়ে আসতেই প্রায় প্রতিটি দোকানে ভিড় লেগে যায়। আর সেই ভিড় ছিল উল্লেখ করার মতো। ফলের দোকানগুলোতেও ক্রেতার ভিড় দেখা গেছে।

রাজধানীর মিরপুরে শুক্রবার ইফতার বাজার ছিল জমজমাট। দিনটি সাপ্তাহিক ছুটি হওয়ায় দুপুরে গড়িয়ে বিকেল হতেই মানুষ ভিড় করেছেন ইফতারসামগ্রী বিক্রির দোকানগুলোতে। ইফতারের রকমারি খাবার বিক্রিতে দম ফেলার সময় পাচ্ছিলেন না বিক্রেতারা। সরেজমিনে দেখা যায়, দুপুরের পর থেকেই মিরপুর সাড়ে ১১ নম্বর সংলগ্ন বিভিন্ন অভিজাত রেস্তোরাঁয় ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে থাকে। বিকেল ৩টায় আকস্মিক বৃষ্টিতে কিছু সময়ের জন্য বিক্রি কম হলেও ৪টার পর থেকে ফের ক্রেতাদের ভিড় শুরু হয়।

মোগল রেস্তোরাঁর বিক্রয় প্রতিনিধি শাহনেওয়াজ জানান, বেগুনি, আলুর চপ, পিঁয়াজু প্রতিটি ১০ টাকা। সাসলিক ৮০ টাকা, ডিম চপ, রোল, ছোট কাবাব প্রতিটি ৩০ টাকা। হালিম বাটি ভেদে ১৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, চিকেন কাবাব ১২০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এবার প্রতিটি খাবারের দাম ৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এর কারণ চিনি, ডাল, মসলাসহ প্রতিটি পণ্যের দাম বেশি।

মিরপুর ১১ নম্বরে ডেজার্ট ও বনলতা রেস্তোরাঁয় ইফতারের বাহারি আইটেম সাজানো রয়েছে। গ্রিল চিকেন ৪০০ টাকা, সিঙ্গেল চিকেন রোস্ট ১৬০ টাকা, বিফ কোপ্তা ৫৫ টাকা, শরমা ১০০ টাকা, স্প্রিং রোল ও চিকেন বন ৪০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। বনলতা রেস্তোরাঁর রসুল ইসলাম জানান, প্রথম দিন, এ কারণে আইটেম কম করা হয়েছে। বাজার যাচাইয়েরও প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সাড়ে ৫টার আগেই সব আইটেম বিক্রি হয়ে গেছে।

মিরপুর ডিওএইচএস থেকে নলতায় আসা সজীব ও বিউটি দম্পতি বলেন, মিষ্টি দই কিনতে এসেছিলাম। কিন্তু মুখরোচক সব খাবার দেখে মাংসের কিছু আইটেম নিয়ে গেলাম। বাসায় পিঁয়াজু, আলুর চপ ভাজা হয়েছে। এখান থেকে গ্রিল চিকেন ও শাসলিক নিলাম।

জিলাপি ঘরের সামনে ক্রেতাদের লম্বা লাইন চোখে পড়ার মতো। দোকানটিতে প্রতিকেজি জিলাপি ৩০০ টাকা। এছাড়া অন্যান্য দোকানে শাহী ও কাশ্মীরি জিলাপি ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।

পাড়া-মহল্লার অস্থায়ী ইফতারের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। যদিও বিক্রেতারা বলেছেন, প্রথম রোজা শুক্রবার হওয়ায় ক্রেতার চাপ বেশি।

জমজমাট ছিল পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী চকবাজারের ইফতার বাজার। চকবাজার জামে মসজিদের সামনের সড়কে ছিল ইফতার সামগ্রির অনেক দোকান। এসব দোকানে কাবাব, কোফতা, রোস্ট, পরোটা, তন্দুরি, ফুলুরি, পিঁয়াজু, বেগুনি, হালুয়া ইত্যাদি শত পদের খাবার ছিল। সেগুলোর দাম চড়া। তবু কিনেছেন রসনাবিলাসী নগরবাসী।

শুক্রবার চকবাজারে জুমার নামাজের পর থেকেই শাহী জামে মসজিদের সামনের রাস্তা ও আশপাশের দোকানগুলো খুলতে শুরু করে। দোকানগুলোতে দেখা গেছে মুখরোচক নানা সুপরিচিত ঐতিহ্যবাহী খাবার। এছাড়া রাস্তায় দুটি সারিতে ছিল ইফতারির ভ্রাম্যমাণ দোকান। মসজিদ রোডের শুরুতে বাম পাশে ছিল খাদ্য অধিদপ্তরের মনিটরিং বুথ। রাস্তার শুরু থেকেই হাজারও মানুষ লাইন দিয়ে ঢুকেছেন। কোনো দোকানের সামনে এক মুহূর্ত দাঁড়ানোর সুযোগ ছিল না। সবাই স্রোতের গতিতে এগিয়েছেন। সময় গড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতার ঢল আরো বাড়তে থাকে। ক্রেতারা বিভিন্ন দোকান ঘুরে ঘুরে পছন্দের আইটেম কিনছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close