নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২২ মার্চ, ২০২৩

২১১ উপজেলায় থাকছেন না গৃহহীন

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাচ্ছে আরো ৩৯ হাজার ৩৬৫ পরিবার

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় চতুর্থ পর্যায়ে ৩৯ হাজার ৩৬৫টি ঘর পাচ্ছে গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবার। বুধবার (২২ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের হাতে এই ঘর তুলে দেবেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারা দেশে যুক্ত থেকে এসব ঘর হস্তান্তর করবেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেওয়া এসব ঘরে এ বছর পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করবে আরো ৩৯ হাজার ৩৬৫টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবার। বুধব্লার (২২ মার্চ) চতুর্থ পর্যায়ে ৩৯ হাজার ৩৬৫টি ঘর হস্তান্তরের মাধ্যমে দেশের ৯টি জেলার ২১১টি উপজেলা সম্পূর্ণ ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মঙ্গলবার (২১ মার্চ) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।

মুখ্য সচিব বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে ২০২০ সাল থেকে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত সারা দেশে ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ২ লাখ ৩৭ হাজার ৮৩১টি ঘর বরাদ্দ করা হয়েছে। এর ফলে সারা দেশে উপকারভোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো প্রায় ১৩ লাখ।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে সরকারের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারের সংখ্যা ২ লাখ ৫৯ হাজার ২৩৭। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি ৬৩ হাজার ৯৯৯, দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০২১ সালের ২০ জুন ৫৩ হাজার ৩৩০, তৃতীয় পর্যায়ের প্রথম ধাপে ২০২২ সালের ২৬ এপ্রিল ৩২ হাজার ৯০৪, দ্বিতীয় ধাপে ২০২২ সালের ২১ জুলাই ২৬ হাজার ২২৯ ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। বুধবার (২২ মার্চ) চতুর্থ পর্যায়ে ৩৯ হাজার ৩৬৫টি ঘর হস্তান্তর করা হচ্ছে। এতে করে চিহ্নিত ২ লাখ ৫৯ হাজার ২৩৭টি পরিবারের মধ্যে ২ লাখ ১৫ হাজার ৮২৭টি পরিবারকে ঘর হস্তান্তর সম্পন্ন হচ্ছে। অবশিষ্ট ৪৩ হাজার ৪১০টি পরিবারের মধ্যে ২২ হাজার ১০টি পরিবার চিহ্নিত করে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ২ শতাংশ জমিসহ একক গৃহ বরাদ্দ করা হয়েছে। বাকি ২১ হাজার ৪০৪টি পরিবার চিহ্নিত করে তাদের পুনর্বাসনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হবে। প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘দেশের কোনো মানুষ ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না।

এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বলেন, স্বামী-স্ত্রীর যৌথ মালিকানায় দুই শতাংশ জমি দলিল ও নামজারি করে দুই কক্ষবিশিষ্ট ঘর হস্তান্তর করা হচ্ছে। তারা এই জমির পুরোপুরি মালিকানা পাচ্ছেন। তবে শর্তানুসারে তারা জমি হস্তান্তর বা বন্ধক দিতে পারবেন না। ভবিষ্যতে গৃহ সংস্কারের প্রয়োজন হলে মালিকানা হিসেবে তারাই সেটা করবেন।

তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ১৯৯৭ সাল থেকে আজ পর্যন্ত মোট ৭ লাখ ৭১ হাজার ৩০১টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। পরিবারপ্রতি ৫ জন হিসেবে এ কার্যক্রমে উপকারভোগীর সংখ্যা ৩৮ লাখ ৫৬ হাজার ৫০৫ জন। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্প সরাসরি পুনর্বাসন করেছে ৫ লাখ ৫৪ হাজার ৫৯৭টি পরিবার (প্রায় ২৭ লাখ ৭২ হাজার ৯৮৫ জনকে)। ভূমি মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের সমধর্মী কার্যক্রমের আওতায় পুনর্বাসিত হয়েছে অবশিষ্ট ২ লাখ ১৬ হাজার ৭০৪টি পরিবার।

বুধবারের কর্মসূচি : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার (২২ মার্চ) ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারের মাঝে ২ শতাংশ জমির মালিকানাসহ ৩১ হাজার ৩৬৫টি একক গৃহ হস্তান্তর করবেন। তিনি ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে সংযুক্ত হয়ে সারা দেশের সব উপজেলায় একযোগে ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষের কাছে এসব গৃহ হস্তান্তর করবেন।

প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে সরাসরি ৩টি উপজেলায় উপকারভোগীদের সঙ্গে কথা বলবেন। উপজেলাগুলো হলো- গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প; সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দীগাঁও ইউনিয়নের নওয়াগাঁও আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং বরিশাল জেলার বানারিপাড়া উপজেলার বানারিপাড়া পৌরসভার উত্তরপাড় আশ্রয়ণ প্রকল্প।

১৯৯৭ সালে ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ‘আশ্রয়ণ’ নামে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়, যা প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি ৬০ হাজার ১৯১টি ঘর, ২০ জুন ৫৩ হাজার ৩০০টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্মিত মোট ঘরের সংখ্যা ১ লাখ ১৭ হাজার ২৯।

তৃতীয় পর্যায়ে নির্মাণ করা একক ঘরের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৬৭৪। এর মধ্যে ৩২ হাজার ৯০৪টি হস্তান্তর হয়েছে গত বছরের ২৬ এপ্রিল এবং দ্বিতীয় ধাপে ২১ জুলাই জমির মালিকানাসহ ২৬ হাজার ২২৯ হস্তান্তর করা হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close