শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি

  ২০ মার্চ, ২০২৩

একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে নির্বাক বাবা

সুইটি (২০) বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। বাসা নিয়ে থাকেন রাজধানীর মিরপুরে। কয়েকদিন আগে ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন। ছুটি কাটিয়ে বাবা মাসুদ মিয়াকে নিয়ে গোপালগঞ্জ থেকে ইমাদ পরিবহনের বাসে করে যাচ্ছিলেন ঢাকা।

রবিবার (১৯ মার্চ) ভোরে গোপালগঞ্জ থেকে বাসে ওঠেন বাবা-মেয়ে। বাসটি মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় বাসটি পৌঁছলে পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিচে পড়ে যায়। এতে সুইটি ঘটনাস্থলে মারা যান। মাসুদের বাড়ি গোপালগঞ্জ সদরের পাঁচুরিয়া গ্রামে। সেখানেই পরিবার নিয়ে থাকেন। এসেনসিয়াল ড্রাগসে নিরাপত্তরক্ষী হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি।

আহত মাসুদ মিয়াকে ভর্তি করা হয় শিবচর উপজেলার পাঁচ্চর এলাকার ইসলামিয়া হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। হাসপাতালের বেড়ে শুয়ে মেয়ের জন্য কাঁদছেন এই বাবা। তিনি যেন নির্বাক হয়ে পড়েছেন।

এমএস সনদ আনা হলো না আফসানার : এমএস সার্টিফিকেট আনা হলো না ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী আফসানা মিমির (২৬)। তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের হর্টিকালচার থেকে এমএস করেন। আফসানার এই সার্টিফিকেট আনাই যেন কাল হলো। এসব কথা বলে চিৎকার করে আর্তনাদ করছেন আফসানার মা কানিজ ফাতেমা। তার আহাজারিতে আশপাশের লোক জড়ো হয়ে তাকে শান্ত¦না দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু কোনোভাবেই তাকে শান্ত করা যাচ্ছে না।

রবিবার সকালে মা কানিজ ফাতেমা ও ছোট বোন রুকাইয়া ইসলাম রূপা গোপালগঞ্জ শহরের বঙ্গবন্ধু কলেজের সামনে থেকে আফসানাকে ইমাদ পরিবহনের বাসে উঠিয়ে দেন। তার ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার কথা ছিল।

আফসানার বাবা আবু হেনা মোস্তফা কামাল একজন সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। ১২ বছর আগে আফসানার বাবা মারা যান। অনেক কষ্ট করে আফসানা ও রুকাইয়া ইসলাম রূপার লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছিলেন মা কানিজ ফাতেমা।

আফসানার বোন রুকাইয়া ইসলাম রূপা আর্তনাদ করতে করতে বলেন, ‘আফসানা তুই ফিরে আয়। আমি কাকে নিয়ে থাকব। আমি তো একা হয়ে গেলাম। ওরে আল্লাহ কি তুমি করলা’

জানা যায়, আফসানা গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্মান শেষ করে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স শেষ করেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close