পবিত্র রমজানে কালোবাজারিরা যাতে নিত্যপণ্যের সংকট সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, রমজান মাসে অনেকে পণ্যের দাম বাড়ানোর চেষ্টা করেন। এটা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। রমজান মাস হলো কৃচ্ছ্রসাধনের সময়।

প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বরিশালের আগৈলঝাড়া, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়াসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৫০টি মডেল মসজিদের উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি একথা বলেন।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, স্বাগত বক্তব্য দেন ধর্মবিষয়ক সচিব কাজী এনামুল হাসান (এনডিসি)।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কালোবাজারি, মজুদদারি বা খাদ্যে ভেজাল করা গর্হিত কাজ- এ ব্যাপারে মসজিদে জুমার খুতবার সময় আপনারা (ইমাম) মানুষকে সচেতন করবেন। খবর বাসসের।

তিনি বলেন, নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য আমরা বিশেষ কার্ড করে দিয়েছি। বেশি দামে চাল কিনে মাত্র ৩০ টাকা কেজি দরে আমরা তাদের দিচ্ছি। রমজান মাসকে সামনে রেখে আমরা আরো এক কোটি মানুষের মধ্যে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল সরবরাহ করব। সাধারণ মানুষ যাতে কষ্ট না পায়; চাল, তেল, চিনি, ডাল, যা যা দরকার সেগুলো যাতে ন্যায্যমূল্যে কিনতে পারে সেজন্য টিসিবির মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যের কার্ড দিয়ে আমরা এই সহযোগিতা করে যাচ্ছি।

সরকারপ্রধান বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশ যেভাবে অর্থসামাজিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, সেভাবে এগিয়ে যাক। সেই সঙ্গে আমাদের ধর্মীয় শিক্ষা এবং ধর্ম পালন করা হোক; সেজন্যই এই মসজিদগুলো করে দিচ্ছি। ইসলাম ধর্ম সব সময় মানুষকে শিক্ষাগ্রহণ করতে বলেছে, সেই বিষয়টা আমাদের মনে রাখতে হবে।

জনগণের কাছে দোয়া চেয়ে সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশের জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়নের কাজটা যেন আমরা আরো ভালোভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। এ দেশের একটি মানুষও ভূমিহীন থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না।

আমরা বিনা মূল্যে সবাইকে ঘরবাড়ি তৈরি করে দিচ্ছি। জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। আমরা কৃষিতে প্রচুর ভর্তুকি দিচ্ছি, আমরা শ্রমিকদের জন্য কাজের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। বিদেশে যারা কাজ করতে যান তারা যাতে জমি বিক্রি না করেন, ব্যাংক থেকে সহজ ঋণ নিয়ে যেতে পারেন সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছি। কেউ দালালের খপ্পরে পড়ে শেষে ভূমধ্যসাগরে ডুবে মরবেন- সেটা আমরা চাই না।

তিনি বলেন, কোনো কোনো দেশে দেখি নারীদের শিক্ষা নিতে দেবে না। ইসলাম কিন্তু সেটা বলেনি। আমাদের সবাইকে শিক্ষাগ্রহণ করতে বলেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, জীবন দেওয়ার মালিকও তিনি, নেওয়ার মালিকও তিনি। আমার বাবা, মা, ভাই, বোন সবাইকে হত্যা করা হয়েছে। বিদেশে ছিলাম বলে আমরা দুই বোন বেঁচে গেছি। ১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর কতবার আমি গুলির সামনে পড়েছি; কখনো পেতে রাখা বোমা, কখনো গ্রেনেড হামলা ও নানাভাবে আমার ওপর আক্রমণ হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, আল্লাহ রাব্বুল আলামিনই আমাকে রক্ষা করেছেন। আল্লাহ সব সময় মানুষকে কিছু সময় দেন। কিছু কাজ দেন। আমি বিশ্বাস করি, সেই কাজগুলো সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তিনি আমাকে রক্ষা করবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের বাংলাদেশে আমরা চাই সব ধর্মের সমান অধিকার। যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। শেষ বিচার তো আল্লাহ করবেন, বিচারের ভার আল্লাহর হাতে।

"