আরিফ মাহমুদ, কলারোয়া (সাতক্ষীরা)

  ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’

দেশ স্বাধীন হয়েছে প্রায় ৫২ বছর। তবু এতদিনেও মহান ভাষা আন্দোলন স্মরণে শহীদ মিনার গড়ে ওঠেনি সাতক্ষীরার কলারোয়ার অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্থায়ী শহীদ মিনার থাকলেও উপজেলার কোনো মাদরাসায় নেই একটিও শহীদ মিনার। উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে ২টি ইউনিয়নের কোথাও শহীদ মিনার নেই।

অনেকে বলছেন, যেসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই সেখানে কিছু সময়ের জন্য বেঞ্চ, কলাগাছ, বাঁশ-কাপড়, মাটি ইত্যাদি দিয়ে অস্থায়ী শহিদ মিনার তৈরি করতে দেখা যায়। শহীদ মিনারবিহীন অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মহান একুশে ফেব্রুয়ারিতে ভাষাশহীদদের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করতে পারে না বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, কলারোয়া পৌরসভা এবং উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে শহীদ মিনার রয়েছে ৩৫টি। উপজেলার কয়লা ও জালালাবাদ ইউনিয়নে কোনো শহীদ মিনার নেই। গতবছর কয়লা হাইস্কুলে একটি শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য ভিত্তি স্থাপন করা হলেও তার নির্মাণকাজ এখন পর্যন্ত শুরুই হয়নি। এদিকে, উপজেলায় ৩৪টি এমপিওভুক্ত মাদরাসা রয়েছে। এর মধ্যে সিনিয়র মাদরাসার সংখ্যা ৫টি। এসব মাদরাসার কোথাও গড়ে ওঠেনি একটিও শহীদ মিনার। যদিও কলারোয়া আলিয়া মাদরাসায় একটি শহীদ মিনার নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মাদরাসা সূত্রে জানা গেছে। তবে সেটার কাজ আজও শুরু হয়নি।

অপরদিকে, উপজেলার ১২টি বেসরকারি কলেজের মধ্যে ৫টিতে শহদি মিনার আছে, বাকি ৭টি কলেজ ক্যাম্পাসে নির্মাণ করা হয়নি কোনো শহীদ মিনার। উপজেলার ৫০টি মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২০টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে, নেই অবশিষ্ট ৩০টিতে।

অপরদিকে উপজেলার ১২৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে শহীদ মিনার রয়েছে শুধু ৫টিতে। কলারোয়া, গোপীনাথপুর, রঘুনাথপুর, ঝাঁপাঘাট ও বয়ারডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বাদে বাকি ১২২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই শহীদ মিনার।

কলারোয়া পৌরসভার মধ্যে কলারোয়া ফুটবল মাঠের কর্নারে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, কলারোয়া সরকারি কলেজ, শেখ আমানুল্লাহ ডিগ্রি কলেজ, বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজ, কলারোয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তুলসীডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোপীনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কলারোয়া গার্লস পাইলট হাইস্কুল মিলিয়ে মোট ৮টি শহীদ মিনার রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এমআর ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমানের অর্থায়নে কয়েক বছর আগে কলারোয়া ফুটবল মাঠের কর্নারে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়স্তম্ভ ‘স্বাধীনতা’ ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, সোনাবাড়িয়া হাইস্কুল, হেলাতলা হাইস্কুল, কেকেইপি হাইস্কুল ও চন্দনপুর কলেজ ক্যাম্পাসে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে।

কেন্দুয়ায় শহীদ মিনার থাকলেও দেওয়া হয় না ফুল

কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি জানান : নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কেন্দুয়া-ময়মনসিংহ- কিশোরগঞ্জ সাহিতপুর বাজারে সড়ক ঘেঁষেই আছে একটি শহীদ মিনার। অথচ কখনো তাতে ফুল দেওয়া হয় না। অযত্ন অবহেলায় দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কেন্দুয়া উপজেলা সদর থেকে ৬ কিলোমিটার পশ্চিমে সান্দিকোণা ইউনিয়নের সাহিতপুর বাজার।

বর্তমানে সড়কটি সম্প্রসারিত হওয়ায় শহীদ মিনারটির কিছু অংশ ভাঙা পড়েছে। মিনারের পাশ ঘেঁষেই রয়েছে একটি ময়লা পানি নিষ্কাশনের ড্রেন। স্থানীয় এক ব্যক্তি শহীদ মিনারে শামিয়ানা টানিয়ে মনোহারী ব্যবসা করছেন।

চেংজানা গ্রামের বাসিন্দা শহীদ মিনার সংলগ্ন ব্যবসায়ী নুরুল আমিন বলেন, আমি এই শহীদ মিনারটির পাশে গত ৪ বছর ধরে ব্যবসা করছি। আমি এখানে আসার পর থেকেই এই শহীদ মিনারটি এভাবে পড়ে থাকতে দেখে আসছি। এখানে কাউকে কোনোদিন ফুল দিতে দেখিনি।

স্থানীয় বাসিন্দা কাজল মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই শহীদ মিনার এখানে করা ঠিক হয়নি। শহীদ মিনারটি এখান থেকে স্থানান্তর করে বাজারের অন্য একটা ভালো জায়গায় স্থাপন করা হোক।

স্থানীয় সান্দিকোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, সম্ভবত ৪-৫ বছর আগে জেলা পরিষদের অর্থায়নে সাহিতপুর বাজারে শহীদ মিনারটি নির্মাণ করা হয়। এটি নির্মাণের সময় আমাদের সঙ্গে কোনো পরিকল্পনা করা হয়নি। এখানে কোনো সময় কেউ ফুল দিয়েছে বলে মনে হয় না। এ বিষয়ে মঙ্গলবার দুপুরে কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাবেরী জালাল বলেন, বিষয়টি শুনেছি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close