প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

পাকিস্তানের সাবেক শাসক মোশাররফ আর নেই

দীর্ঘ অসুস্থতার পর মারা গেছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও সামরিক শাসক জেনারেল পারভেজ মোশাররফ। রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুবাইয়ের একটি হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি বার্ধক্যজনিত জটিল রোগে ভুগছিলেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।

পারভেজ মোশাররফের জন্ম ব্রিটিশ ভারতের দিল্লিতে, ১৯৪৩ সালের ১১ আগস্ট। ১৯৪৭ সালে পরিবারের সঙ্গে তিনি পাকিস্তানে চলে যান। তার বাবা সৈয়দ মোশাররফ একজন কূটনীতিক ছিলেন। ১৯৪৯ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত পারভেজ মোশাররফ তুরস্কে ছিলেন। ১৯৬৪ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। সামরিক বাহিনীতে যোগ দেওয়ার পর তিনি কোয়েটার আর্মি কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ ও লন্ডনের রয়্যাল কলেজ অব ডিফেন্স স্টাডিজে পড়াশোনা করেছেন। খবর রয়টর্সের।

১৯৬৫ ও ১৯৭১ সালে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। যুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য তিনি সামরিক বাহিনীর সর্বোচ্চ পদকে ভূষিত হন। ১৯৯৮ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধানের দায়িত্ব পান। ১৯৯৯ সালের মে মাসের কারগিল যুদ্ধে সেনাবাহিনীর জড়িত থাকা নিয়ে তখনকার প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সঙ্গে সম্পর্কে ফাটল ধরে জেনারেল মোশাররফের। এর ধারাবাহিকতায় সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ১৯৯৯ সালে ক্ষমতা দখল করেন। এরপর প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। এ সময়ের মধ্যে অনেকবার আততায়ীর হামলা থেকে রক্ষা পেয়েছেন। তাকে উৎখাতের অনেক ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে।

২০০৭ সালে সংবিধান স্থগিত করে তিনি জরুরি অবস্থা জারি করেন, যার মাধ্যমে তিনি নিজের শাসনামল দীর্ঘ করতে চেয়েছিলেন। এ ঘটনায় পাকিস্তানে ব্যাপক বিক্ষোভ হয় এবং ইমপিচমেন্ট এড়াতে ২০০৮ সালে তিনি পদত্যাগ করেন। এজন্য পরে জেনারেল মোশাররফকে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। তিনি পাকিস্তানের প্রথম সামরিক শাসক, যাকে সংবিধান স্থগিত করার জন্য বিচারের মুখোমুখি হতে হয় এবং রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয় পাকিস্তানের আদালত। অবশ্য পরে আদালতের এই রায় বাতিল হয়ে যায়। সর্বশেষ তিনি দুবাইয়ে অবস্থান করছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে’ সমর্থন ও ভূমিকা পালনের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে সুপরিচিত ছিলেন তিনি। যদিও এ কারণে স্বদেশে ব্যাপক বিরোধিতার শিকার হতে হয় তাকে। রাষ্ট্রপতির পদ ত্যাগ করার পর ২০০৮ সালে দেশ ছাড়েন তিনি। কিন্তু ২০১৩ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য পাকিস্তানে ফেরেন। যদিও আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে ব্যর্থ হন। রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার শুনানিতে মাত্র দুবার হাজিরা দিয়েছেন তিনি।

এর আগে তার সময় কেটেছে হয় সেনাবাহিনীর একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে, নয়তো ইসলামাবাদের একটি খামারে। পরবর্তী সময়ে ২০১৪ সালের এপ্রিলে তিনি করাচিতে চলে যান। সেখানে দুবছর থাকার পর তিনি আবার দেশত্যাগ করেন। ২০১৬ সালে তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এরপর আর দেশে ফেরা হয়নি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close