নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

প্রথম প্রকাশিত স্মরণিকা

১৯৫২ সালের হৃদয়বিদারক ২১ ফেব্রুয়ারিকে স্মরণ করে পরের বছরই প্রকাশিত হয় একটি স্মরণিকা। ১৯৫৩ সালের মার্চ মাসে প্রকাশিত সেই স্মরণিকার নাম ‘একুশে ফেব্রুয়ারী’, সম্পাদনা করেছেন হাসান হাফিজুর রহমান। হৃদয়ের সবটুকু আবেগ ও ভালোবাসা ঢেলে তিনি এই বইটিকে সাজিয়েছেন। সংকলনটির প্রকাশক মোহাম্মদ সুলতানের ভাষ্যে জানা যায়, তিনি অনেক কষ্টে বাবার জমি বিক্রি করার টাকা দিয়ে এই সংকলনটি প্রকাশ করেছিলেন। মনি হায়দার নামের আরেকজন লেখকের মতে, সংকলনটি প্রকাশের টাকা এসেছিল মায়ের গহনা বিক্রি করে (সূত্র : একুশের চেতনার মশালবাহী হাসান হাফিজুর রহমান প্রথম সোপান ‘একুশে ফেব্রুয়ারী’ ও লিটল ম্যাগাজিন মনি হায়দার, দৈনিক ইত্তেফাক, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪)। তবে যেভাবেই টাকার সংস্থান হোক না কেন হাসান হাফিজুর রহমান চেয়েছিলেন বায়ান্নর বাংলা ভাষা সম্পর্কিত মানুষের প্রতিবাদী ভাবনাগুলো মুদ্রিত করে রাখতে।

হাসান হাফিজুর রহমান সম্পাদিত ‘একুশে ফেব্রুয়ারী’ সংকলনে মুর্তজা বশীরের লিনোকাটভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সেই সময়ের পূর্ব পাকিস্তানের সর্বক্ষেত্রে বিশেষ করে রাজনীতি বিষয়ে সব শ্রেণির মানুষের মধ্যে প্রবল সচেতনতা সৃষ্টি হয়। মানুষের এই সচেতন ভাবাবেগকে স্থায়ী করে রাখার জন্য সেগুলো একত্র করে মুদ্রিত রূপ দেওয়ার ইচ্ছে ছিল হাসান হাফিজুর রহমানের মনে। যার ফলে জন্ম হয় একুশে ফেব্রুয়ারিকে নিয়ে নানাজনের লেখার প্রথম স্মরণীয় সংকলন ‘একুশে ফেব্রুয়ারী’।

একুশের প্রবন্ধ, গল্প, কবিতা, গান, নকশা ও ইতিহাস দিয়ে সাজানো এই পত্রিকা বাঙালির বাংলা ভাষাকেন্দ্রিক রাজনৈতিক লড়াইয়ের ইতিহাসে একটি অমর সংযোজন। বইয়ের শেষ প্রচ্ছদে সংকলক লিখেছেন :

একুশের চৈতন্য সারা দেশে ব্যাপ্ত। আলাদা করে এ কারো নয়, তেমনি কাউকে বাদ দিয়েও এ নয়। সারা দেশের শিরায় শিরায় এমন অগ্নিপ্রভ স্রোত বুঝি আর হয় না, মাতৃভাষার প্রেরণা ছাড়া এমন দোলা বুঝি মানুষের মনে আর কখনো লাগে না!

রক্ত দিয়ে আমরা প্রতিটি হৃদয় এই আত্মদর্শনকে অর্জন করেছি; রক্তের অক্ষরে আমাদের প্রতিটি সাহিত্যিক এই মহাগাথাকে লিপিবদ্ধ করেছেন। তাই সারা দেশে একুশের রক্তমাখা ঘটনা আবেগে অমোঘ, বিশ্বাসে অনন্য।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close