নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩

একুশে বইমেলা

শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি, সরগরম একাডেমি

বাঙালির প্রাণের উৎসব অমর একুশে বইমেলার বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। করোনার কারণে গত বছর নির্দিষ্ট সময়ে শুরু না হলেও এবার শুরু হচ্ছে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারির ১ তারিখেই। চলছে অমর একুশে বইমেলার প্রস্তুতি। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ৬০৯ প্রতিষ্ঠানের ৮৫৮টি ইউনিট তৈরিতে ব্যস্ত নির্মাণ শ্রমিকরা। বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মেলায় দর্শনার্থীদের কেনাকাটা ও চলাচল সহজ করতে ডিজিটাল দিকনির্দেশনাসহ বেশকিছু পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া শিশু চত্বরের পরিধিও বাড়ানো হচ্ছে। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নির্মাণ শ্রমিকরা। প্রকাশকের চাহিদা অনুযায়ী নির্দিষ্ট নকশায় কাঠামো তৈরি হচ্ছে। একাধিক কাজ পাওয়ায় নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে শ্রমিকও বাড়িয়েছেন অনেকে।

বাংলা একাডেমিতে গিয়ে দেখা যায়, মূল মঞ্চের কাজের সঙ্গে জোরেশোরে চলছে স্টল নির্মাণের কাজ। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেও চলছে একই নির্মাণযজ্ঞ।

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সশরীরে উপস্থিত থেকে অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০২৩ উদ্বোধন করবেন। এরপর মেলা পরিদর্শন করবেন তিনি। পরে মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এক প্রান্তে দাঁড়ালে যেন শেষ প্রান্তেও দেখা যায় সেভাবেই এবারের মেলা পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। প্রস্তুতি নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট। এখন পর্যন্ত সবকিছু পরিকল্পনা মাফিক এগোচ্ছে। যথাসময়ে যেন মেলা শুরু করা যায়, সে জন্য আমরা সার্বক্ষণিক মনিটর করছি। মেলায় সাত সদস্যের আলাদা টাস্কফোর্স থাকবে। বইমেলার জন্য নীতিমালা আছে। যেসব প্রতিষ্ঠান বইমেলায় অংশগ্রহণ করছে, তাদের সেই নীতিমালা মানতে হবে। কেউ যেন নীতিমালার বাইরে না যায়, সে জন্য টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। টাস্কফোর্স সদস্যদের জন্য মেলায় করা হয়েছে একটি অফিসও। টাস্কফোর্স নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। টাস্কফোর্সের কারণে কারো মুক্তচিন্তার কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না।

সম্প্রতি বাংলা একাডেমি প্রকাশিত স্টল বরাদ্দের তালিকা থেকে আদর্শ প্রকাশনীর নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, বইমেলার নিয়মনীতির বাইরে আমরা যেতে পারব না। তারা যদি নিয়মনীতি মানে, তাহলে তাদের ব্যাপারে আমাদের যে সিদ্ধান্ত তা জানানো হবে। সমাজ, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, জাতীয় পতাকা, জাতির পিতার বিষয়ে কোনো আপস করা যাবে না। গত বছর আদর্শের বইয়ে আপত্তিকর কিছু বিষয় ছিল। সেসব বিষয়ে তাদের জানানো হয়েছে।

জানা গেছে, এবারে অমর একুশে গ্রন্থমেলা নতুন আঙ্গিকে সাজানো হচ্ছে। বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মেলা প্রাঙ্গণকে ভাগ করা হয়েছে চার ভাগে। একাডেমি প্রাঙ্গণের নামকরণ করা হয়েছে এ বইমেলার উদ্যোক্তা মুক্তধারা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী চিত্তরঞ্জন সাহার নামে। অন্যদিকে উদ্যানে থাকছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চত্বর, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা চত্বর, শেখ রাসেল শিশু চত্বর। মেলার এক প্রান্তে দাঁড়ালে দেখা যাবে অপরপ্রান্ত। গত বছর মেলার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের দিকে স্টল ও প্যাভিলিয়নগুলো এ বছর আনা হচ্ছে মূল উদ্যানে। এ প্রান্তে থাকবে লেখক মঞ্চ, মুক্ত মঞ্চ, নামাজের স্থান এবং খাবারের দোকান। একাডেমির সামনের রাস্তায় মেট্রোরেলের স্টেশন থাকায় মেলার আঙ্গিকেও বড় পরিবর্তন করা হয়েছে। এবার একাডেমির বিপরীতে উদ্যানে প্রবেশের ফটকটি থাকবে শুধু বের হওয়ার জন্য। তবে টিএসসির দিকের একটি ও মাঝখানের আরেকটি ফটক দিয়ে প্রবেশ এবং বের হওয়া যাবে। মেলার প্রধান গেট থাকবে উদ্যানের রমনা কালীমন্দিরে প্রবেশের ফটক। এবারের বইমেলায় মোট ৬০৯টি প্রতিষ্ঠানের ৮৫৮টি ইউনিটের স্টল ও ৩৪টি প্রতিষ্ঠানসহ মোট ৩৮টি প্যাভিলিয়ন থাকবে। একটি প্যাভিলিয়নে হবে মুজিব কর্নার।

মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ডা. কে এম মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, মেলা প্রাঙ্গণে এ বছর নতুন আঙ্গিক আনা হয়েছে। গত বছর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের দিকের স্টল ও প্যাভিলিয়নে পাঠক-দর্শনার্থীর ভিড় ছিল একেবারে কম। তাই এ বছর সব স্টল ও প্যাভিলিয়ন মূল মাঠের দিকে আনা হয়েছে। মেট্রোরেলের স্টেশনের কারণে পরিবর্তন আনা হয়েছে মেলায় প্রবেশ ও বের হওয়ার ফটকে। এ বছর মেলা প্রাঙ্গণ সাজানো হবে ডিজিটাল বাংলাদেশের ডিজিটাল ব্যানারে। বিদ্যুৎ চলে গেলেও এসব ব্যানার জ্বলবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close