জিয়াউদ্দিন রাজু
কমিটি ছাড়াই হয়ে গেল ছাত্রলীগের সম্মেলন
২৪ ডিসেম্বরের আগে যেকোনো সময় কমিটি ঘোষণা * কারা আসছে নেতৃত্বে তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা * প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের অপেক্ষা
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) সম্মেলন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে সম্মেলনের প্রথম এবং দ্বিতীয় অধিবেশনেও ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা হয়নি। সম্মেলন শেষ হলেও আগামী দিনে কারা আসছে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বে তা নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই সারা দেশ থেকে সম্মেলন স্থলে যোগ দেওয়া নেতাকর্মীদের।
তবে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের আগে অর্থাৎ ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে যেকোনো সময় ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। প্রথম অধিবেশনে নিজ বক্তব্যে ছাত্রলীগের প্রত্যেকটি নেতাকর্মীকে সংগঠনের সুনামের ধারায় ফিরে আসার আহ্বান জানান সাবেক এই ছাত্রনেতা। সম্মেলনে বিএনপি নেতাকর্মীদের সতর্ক করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘প্রস্তুত হয়ে যান। বুধবার থেকে সব পাড়া-মহল্লা, ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা-সব জায়গায় সতর্ক পাহারা বসবে।’
প্রথম অধিবেশনের আরো বক্তব্য দেন সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। এ সময় তারা ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দেওয়ার সময়কালীন আবেগ অনুভূতি কথা জানান।
বেলা সাড়ে ৪টায় অনুষ্ঠিত হয় ছাত্রলীগের সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন। ছাত্রলীগের ৩০তম সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনেও কমিটি করার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। উপস্থিত কাউন্সিলরদের সম্মতিতে কমিটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সব প্রার্থীর জীবনবৃত্তান্ত প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ছাত্রলীগের নির্বাচন কমিশনার। সন্ধ্যায় ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এ সিদ্ধান্ত হয়। এ অধিবেশনের স্থায়িত্ব ছিল ১৫ মিনিট। দ্বিতীয় অধিবেশনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এ অধিবেশনে প্রার্থীদের নাম প্রস্তাব হবে। প্রস্তাবের পক্ষে সমর্থন ও পাস করে সেটি নেত্রীর (আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা) কাছে পাঠাবে। পরে নেত্রী যাচাই-বাছাই করে কমিটি ঘোষণা করবেন।’
ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের পরই ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ‘আজকে দ্বিতীয় অধিবেশন থেকে আমরা আপনাদের (প্রার্থী) সবার নাম আপার (শেখ হাসিনা) কাছে পাঠাব। এতে আপনারা একমত? সবাই তখন একাত্মতা পোষণ করেন।’
লেখক ভট্টাচার্যের বক্তব্যের পর ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘আমরা এখান থেকে সবার সিভি আপার কাছে পাঠাব। আপা আমাদের সবচেয়ে বড় অভিভাবক। তিনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই চূড়ান্ত।’ এভাবে শেষ হয় দ্বিতীয় অধিবেশনের কার্যক্রম।
গত দুই সপ্তাহ ধরে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের সম্মেলন ঘিরে সাজানো হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। নির্মাণ করা হয়েছে বর্ণাঢ্য ও সুবিশাল নৌকার আদলে প্যান্ডেল। ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ডে ভরে গেছে শাহবাগ থেকে মৎস্য ভবন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকা। সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে দেখা গেছে উৎসবের আমেজ। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিটের পাশাপাশি সারা দেশের জেলা মহানগর, উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ভোর থেকেই দলে দলে জড়ো হয়েছেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই সেগুনবাগিচা, টিএসসি, রমনা কালী মন্দির গেট, দোয়েল চত্বরে দেখা গেছে আনন্দমুখর পরিবেশ। নানা রঙের পোশাক আর টুপি পরে, বাদ্য বাজিয়ে সম্মেলনে এসেছেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। ‘জয় বাংলা’, ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
"