ক্রীড়া প্রতিবেদক
মেহেদীর রঙে রাঙাল বাংলাদেশ
প্রতিপক্ষ বিবেচনায় লক্ষ্য বেশি বড় ছিল না। তারপরও ভারত বলেই প্রয়োজন ছিল সাবধানী সূচনার। কিন্তু ওপেনিংয়ে নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যর্থতার পরও লিটন-সাকিবের জুটি সিরিজে এগিয়ে যাওয়ার আশা দেখাচ্ছিল বাংলাদেশকে। কিন্তু মিডল অর্ডারের ধীরগতির ব্যাটিং ও অভিজ্ঞদের দ্রুত উইকেট ছুড়ে দেওয়ার মিছিলে যেন খেই হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। তরুণ আফিফ হোসেনের বিদায়ে পরাজয় হয়ে দাঁড়ায় সময়ের ব্যাপার। কিন্তু কে জানত এই সময় ত্রাতা হয়ে দাঁড়াবেন মেহেদি হাসান মিরাজ। মুস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে জুটি গড়ে অসাধারণ এক ইনিংসে বাংলাদেশকে এক উইকেটের জয় উপহার দেন তিনি। ইতিহাসের পাতায় নাম লেখানোর দিন এই ব্যাটার শেষ উইকেটে যোগ করেন ৩৮ রান। ফিজের সঙ্গে ৫১ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে ১-০ লিড এনে দেন মিরাজ।
সহজ লক্ষ্য তাড়ায় বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দিতে পারেননি দুই ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত এবং লিটন দাস। ইনিংসের প্রথম বলেই দীপক চাহারকে উইকেট দিয়ে এসেছেন শান্ত। ডানহাতি এই পেসারের অব স্ট্যাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা রোহিত শর্মার হাতে ক্যাচ দেন তিনি। তাতে শূন্য রানেই ফিরে যেতে হয় শান্তকে।
শান্তকে ফিরিয়ে খানিকটা মোমেন্টাম পায় ভারত। দারুণ লাইন লেংথ বজায় রেখে বাংলাদেশের ব্যাটারদের চাপে রাখেন চাহার-মোহাম্মদ সিরাজরা। এদিকে নবম ওভারে চাহারের বল ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে এনামুল হক বিজয়ের প্যাডে আঘাত হানে। জোরালো আবেদনে সাড়া দিয়ে বিজয়কে আউট দেন আম্পায়ার। তবে তৎক্ষণাৎ রিভিউ নেন ডানহাতি এই ব্যাটার।
রিপ্লেতে দেখা যায় চাহারের বলটি লেগ স্ট্যাম্প মিস করেছে। ফলে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান বিজয়। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। সিরাজের বলে ফ্লিক করার চেষ্টা করেছিলেন বিজয়। শর্ট মিড উইকেটে দাঁড়িয়ে ক্যাচ লুফে নেন ওয়াশিংটন সুন্দর। ফলে ২৯ বলে ১৪ রান করে ফিরে যেতে হয় তাকে। এরপর অবশ্য জুটি গড়ে তোলেন লিটন ও সাকিব আল হাসান।
যদিও শুরু থেকেই ব্যাট হাতে ধুঁকছিলেন লিটন। তবে হাত খুলতে খেলা শুরু করতেই সাজঘরে ফিরতে হয় বাংলাদেশের অধিনায়ককে। ওয়াশিংটনের বলে লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে উইকেটকিপার লোকেশ রাহুলের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়ে আউট হন লিটন। হাফ সেঞ্চুরি করতে না পারার আক্ষেপ নিয়ে লিটনকে ফিরতে হয় ৪১ রানে। লিটনের বিদায়ে ভাঙে সাকিবের সঙ্গে ৪৮ রানের জুটি।
লিটনের পর আউট হয়েছেন সাকিবও। ওয়াশিংটনের বলে এক্সট্রা কভারের ওপর দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন বাঁ-হাতি এই ব্যাটার। শটও খেলেছিলেন তবে বিরাট কোহলি দুর্দান্তভাবে ক্যাচ লুফে নিলে ফিরতে হয় সাকিবকে। বল হাতে ৫ উইকেট নেওয়া সাকিব ব্যাট হাতে করেছেন ২৯ রান।
অভিজ্ঞ সাকিবের বিদায়ের পর ক্রিজে নেমে মুশফিককে সঙ্গ দেন মাহমুদউল্লাহ। দুই সিনিয়রের ব্যাটে দেখে শুনে ধীরগতিতে এগোতে থাকে বাংলাদেশ। নিজেদের মাঝে ৩৩ রানের জুটি গড়লেও বল খরচ করেন ৬৯টি। তবে দলীয় ১২৮ রানে বাস্তবতা টের পাচ্ছে বাংলাদেশ। একই রানে পর পর দুই সিনিয়রকে হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় বাংলাদেশ।
ফলাফল
ভারত : ১৮৬/১০ (৪১.২ ওভার)
বাংলাদেশ : ১৮৭/৯ (৪৬ ওভার)
বাংলাদেশ এক উইকেটে জয়ী
ম্যাচ সেরা মেহেদী হাসান মিরাজ
"