ক্রীড়া ডেস্ক

  ০৫ ডিসেম্বর, ২০২২

ব্রাজিল বাধা পেরোতে চায় কোরিয়া

কাতার বিশ্বকাপে আজ (৫ সেপ্টেম্বর) স্টেডিয়াম ৯৭৪-এ শেষ ষোলোর ম্যাচে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের মোকাবিলা করবে উজ্জীবিত দক্ষিণ কোরিয়া। আরো একটি অঘটনের জন্ম দিয়ে সন হেয়াং-মিনের নেতৃত্বাধীন এশিয়ান পরাশক্তিরা এবার ব্রাজিল বাধা পেরোতে চায়। অন্যদিকে গোল ব্যবধানে সুইজারল্যান্ডকে পেছনে ফেলে গ্রুপ-জির চ্যাম্পিয়ন হিসেবেই আজ মাঠে নামতে যাচ্ছে সেলেসাওরা। আবার শেষ ম্যাচে পর্তুগালকে হতবাক করে দিয়ে গ্রুপ-এইচের রানার্সআপ পজিশন নিশ্চিত করে দক্ষিণ কোরিয়া।

ক্যামেরুনের বিরুদ্ধে গত শুক্রবার পরাজিত হওয়া গ্রুপের শেষ ম্যাচে একের পর এক সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি পরিবর্তিত ব্রাজিল। নক আউট পর্বের কথা মাথায় রেখে এরই মধ্যেই গ্রুপ পর্বের বাধা পেরুনো ব্রাজিল মূল একাদশেনর ৯ জন খেলোয়াড়কে বদলি বেঞ্চে রেখে দল সাজিয়েছিলেন কোচ তিতে। ক্যামেরুনের গোলরক্ষক ডেভিস ইপাসির দুর্দান্ত ফর্মের কাছে টিকতে পারেনি তিতের দ্বিতীয় দলটি। ৯২ মিনিটে ভিনসেন্ট আবুবকরের গোলে আফ্রিকার অদম্য সিংহদের ঐতিহাসিক জয় নিশ্চিত হয়। বিশ্বকাপে কোনো আফ্রিকার দলের কাছে এটাই ছিল ব্রাজিলের প্রথম পরাজয়। এই গোলের পরপরই জার্সি খুলে উদযাপন করতে গিয়ে দ্বিতীয় হলুদ কার্ডের কারণে মাঠ ত্যাগ করতে হয়েছে আবুবকরকে। কিন্তু ততক্ষণে নিজের দায়িত্বটুকু পালন করে দলকে জয় উপহার দেওয়া আবুববকর হাসিমুখেই মাঠ থেকে বেরিয়ে যান। যদিও এই জয়ে গ্রুপ পজিশনের কোনো হেরফের হয়নি। শীর্ষ দল হিসেবেই ব্রাজিল পরের রাউন্ডে উঠেছে। আর ঐতিহাসিক জয়কে সঙ্গী করে কাতার থেকে বাড়ির পথ ধরেছে ক্যামেরুন।

টানা ৯ ম্যাচে জয়ের ধারা থেকে ছিটকে পড়া ব্রাজিলকে এখন উজ্জীবিত দক্ষিণ কোরিয়াকে নিয়ে নতুন করে ভাবতেই হচ্ছে। জায়ান্ট কিলার দক্ষিণ কোরিয়ার মুখোমুখি হওয়ার আগে গ্রুপ পর্বে এশিয়ান পরাশক্তির ম্যাচগুলোর খোঁজখবরও নিচ্ছেন তিতে। সার্বিয়া ও সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ব্রাজিল প্রথম দুই ম্যাচে জয়ী হলেও প্রত্যাশানুযায়ী দলের আক্রমণভাগ পারফর্ম করেনি। ভয়টা এখানেই, কারণ কাউন্টার অ্যাটাক থেকে দক্ষিণ কোরিয়া যেভাবে এরই মধ্যে নিজেদের গতিময় ফুটবলের প্রমাণ দিয়েছে তাকে তাদের আটকাতে তিতেকে নতুন ছক কষতে হচ্ছে। এনিয়ে বিশ্বকাপে টানা পাঁচ ম্যাচে প্রথমার্ধে কোনো গোল পায়নি ব্রাজিল। নিজেদের ফেভারিট তকমাকে শক্তিশালী করতে হলে এ ধারা থেকে অবশ্যই সেলেসাওদের বেরিয়ে আসতে হবে।

এনিয়ে টানা নবমবারের মতো নক আউট পর্বে খেলতে যাচ্ছে ব্রাজিল। ৩২ বছর আগে শেষ ষোল থেকে বিদায় নিয়েছিল পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ক্লদিও ক্যানেজিয়ার একমাত্র গোলে আর্জেন্টিনার কাছে ১-০ ব্যবধানে পরাজিত হওয়ার সেই ম্যাচটি এখনো অনেকেরই মনে গেঁথে আছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার সামনে এখন ঐতিহাসিক অল-এশিয়ান কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার হাতছানি। ব্রাজিলের বিপক্ষে দক্ষিণ কোরিয়া মাঠে নামার আগে দিনের শুরুতে আরেক ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার মোকাবিলা করবে জাপান। শুক্রবার গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে রিকাডো হোর্টার পাঁচ মিনিটের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল পর্তুগাল। কিন্তু এরপর পরপর দুই গোল দিয়ে ২০১৬ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নদের হতাশ করে জয় ছিনিয়ে নেয় কোরিয়ানরা। নিষেধাজ্ঞার কারণে দলের দুর্দান্ত এই জয় স্ট্যান্ডে বসে দেখতে হয়েছে কোচ পাওলা বেনটোকে। এর আগে গ্রুপের আরেক শীর্ষ দল উরুগুয়ের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে টুর্নামেন্ট শুরু করেছিল দক্ষিণ কোরিয়া। শেষ পর্যন্ত ঘানাকে ২-০ গোলে পরাজিত করে গ্রুপ পর্ব শেষ করেও গোল ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে বিদায় নিতে হয়েছে উরুগুয়েকে।

এর আগে একবারই শেষ ষোলর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিল এশিয়ান টাইগার্সরা। ২০০২ সালে ঘরের মাঠের বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে খেলেছিল দক্ষিণ কোরিয়া। সম্প্রতি ব্রাজিলের সঙ্গে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে ৫-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে।

কাতারে সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যেই ব্রাজিলের দলীয় চিকিৎসকরা বেশ ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। সেলেসাও চিকিৎসক রডরিগো লাসমার অবশ্য নেইমার প্রসঙ্গে ইতিবাচক আপটেড দিয়েছেন। গোঁড়ালির ইনজুরি কাটিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে শুরু থেকেই নেইমারের খেলার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে ক্যামেরুনের বিপক্ষে ম্যাচে হাঁটুর সমস্যায় পড়া গাব্রিয়েল জেসুস ও অ্যালেক্স টেলেসকে বিশ্বকাপে আর পাওয়া যাচ্ছে না বলে অনেকটাই নিশ্চিত করেছেন তিতে। যদিও টেলেস রিচারলিসনের কারণে সবসময়ই দলের বাইরে থাকেন। টেলেসের ইনজুরি ও অ্যালেক্স সান্দ্রোর কোমরের সমস্যার কারণে লেফট-ব্যাক পজিশন নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তিতে। তবে গোড়ালির সমস্যা অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছেন ডানিলো। এডার মিলিটাও রাইটব্যাক পজিশনেই থাকছেন।

দক্ষিণ কোরিয়ান শিবিরেও ইনজুরি সমস্যা রয়েছে। হুয়াং হি-চ্যান পুরো টুর্নামেন্টেই হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে ভুগছেন। আগের ম্যাচেও বদলি বেঞ্চ থেকে উঠে এসে তিনি গোল করেছিলেন। তাকে আবারও মূল দলে পাওয়া না গেলে লি জায়ে-সুংই তার স্থানে খেলবেন। কাফ পেশির সমস্যার কারণে পর্তুগালের সঙ্গে মূল একাদশে ছিলেন না কিম মিন-জায়ে। কালকের ম্যাচে তার মূল দলে ফেরার আশা রয়েছে। লি কাং-ইন ও কিম ইয়ং-গুনও হালকা ইনজুরি সমস্যায় রয়েছেন। দলের তারকা স্ট্রাইকার সন হেয়াং-মিনের ওপর আরো একবার ভরসা করতে চাইছে দক্ষিণ কোরিয়া। এবারের আসরে তিনি এখনো কোনো গোল করতে পারেননি

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close