নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০১ ডিসেম্বর, ২০২২

করোনা টিকার চতুর্থ ডোজের সুপারিশ

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে টিকার চতুর্থ ডোজ প্রয়োগের সুপারিশ করেছে সরকারের কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। এই টিকা সম্মুখসারির যোদ্ধা, ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি এবং অন্তঃসত্ত্বাদের আগে দেওয়ারও সুপারিশ করেছে কমিটি। বুধবার (৩০ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের টিকা ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব শামসুল হক সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে শামসুল হক বলেন, আমরা মাত্র সুপারিশ পেয়েছি। কবে নাগাদ চতুর্থ ডোজের টিকা দেওয়া শুরু হবে সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমাদের হাতে পর্যাপ্ত টিকা আছে। জাতীয় পরিকল্পনার মাধ্যমে আমরা কার্যক্রম শুরু করব।

শামসুল হক বলেন, আমরা পাঁচোর্ধ্ব বয়সিদের টিকা দিচ্ছি। মোট জনসংখ্যা থেকে ৫ বছর পর্যন্ত সংখ্যা বাদ দিলে ৮৭ শতাংশ প্রথম ডোজ এবং ৭৩ শতাংশ দ্বিতীয় ডোজের টিকা পেয়ে গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দিকনির্দেশনা ছিল ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনতে হবে। আমাদের ৭৩ শতাংশ মানুষ ২ ডোজ টিকা পেয়ে গেছে। ৫ বছরের ঊর্ধ্বে ধরলে আমাদের ৯৫ শতাংশ মানুষ প্রথম ডোজ ও ৮০ শতাংশ মানুষ দ্বিতীয় ডোজের টিকা পেয়েছে। বুস্টার দেওয়া হয়েছে ১৮ বছরের বেশি বয়সিদের। সে হিসেবে ৫২ দশমিক ৫১ শতাংশ বুস্টার ডোজের টিকা পেয়ে গেছে। আমরা রুটিন ভ্যাকসিনেশনের পাশাপাশি ক্যাম্পেইন করেছি।

শামসুল হক আরো বলেন, এ পর্যন্ত আমরা ৯টি ক্যাম্পেইন করেছি। আমরা এ পর্যন্ত মোট ৩৩ কোটি ২৭ লাখ টিকা দিয়েছি প্রথম, দ্বিতীয় ও বুস্টার ডোজ মিলিয়ে। এর মধ্যে ১৩ কোটি ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে ৯টি ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে, গড়ে ৩ দিন করে ধরলে ২৭ দিনে আমরা ১৩ কোটি ডোজ টিকা দিয়েছি। বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে আমরা একটি ক্যাম্পেইন শুরু করতে যাচ্ছি। এই ক্যাম্পেইন ১ থেকে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। এ ক্যাম্পেইনে যারা প্রথম ডোজের টিকা নিয়ে দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষা করছেন তারা টিকা পাবেন। এখনো গড়ে প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ বুস্টার ডোজের অপেক্ষায় আছে। তারা যেন বুস্টার ডোজ পেতে পারে সে লক্ষ্য নিয়ে আমরা ক্যাম্পেইন করছি। সারা দেশে ইউনিয়ন, উপজেলা, পৌরসভা, সিটি করপোরেশন এবং জেলা সদর ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ ক্যাম্পেইন চলবে।

ডা. শামসুল হক বলেন, ১ থেকে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে। ৭ দিনব্যাপী ক্যাম্পেইনে ৬টি কর্মদিবস পড়বে। এই কর্মদিবসকে আমরা ২ ভাগে ভাগ করেছি। যেদিন প্রচার হবে তার পরের দিন ওই এলাকায় টিকা দেওয়া হবে। ৩ দিন প্রচার করা হবে, ৩ দিন টিকা দেওয়া হবে। আমাদের লক্ষ্য প্রায় ৯০ লাখ মানুষকে টিকার আওতায় আনা। সেভাবে আমরা প্রস্তুতিও গ্রহণ করেছি। ক্যাম্পেইনে মূলত ফাইজার ও সিনোফার্মের টিকা দেওয়া হবে। আমাদের মোট কেন্দ্রের সংখ্যা হবে ১৫ হাজার ৯৮৪টি এবং সেখানে ১৭ হাজার ১১৬টি টিম কাজ করবে। প্রতিটি টিমে দুজন করে ভ্যাকসিনেটর হিসেবে মোট ৩৪ হাজার ২৩২ জন এবং প্রতিটি টিমে তিনজন করে মোট ৫১ হাজার ৩৪৮ স্বেচ্ছাসেবী থাকবে। প্রায় ১ লাখ মানুষ সরাসরি টিকাদানে জড়িত থাকবে। এর বাইরেও লক্ষাধিক মানুষ পরোক্ষভাবে কাজ করবে।

শামসুল হক জানান, এ পর্যন্ত আমরা ৩৪ কোটি ৩৪ লাখ ভ্যাকসিন সংগ্রহ করেছিলাম। ৩৩ কোটি ২৭ লাখ টিকা আমরা দিয়েছি। ১ কোটি ১৭ লাখ ডোজ টিকা আমাদের হাতে আছে। আরো টিকা আসছে।

শিশুদের টিকাদান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৫ থেকে ১১ বছর বয়সি শিশু ২ কোটি ২৪ লাখ। আমরা প্রথম ডোজ দিয়েছি ১ কোটি ৭৩ লাখ। এতে ৭৭ শতাংশ শিশু টিকার আওতায় এসেছে। দ্বিতীয় ডোজ মাত্র শুরু হয়েছে, ৯ লাখ ৫৭ হাজার জনকে দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আমরা দিয়ে যাচ্ছি। প্রথমে আমরা সিটি করপোরেশন, এরপর জেলা ও উপজেলা এবং এখন স্কুলের বাইরে কমিউনিটি পর্যায়ে দেওয়া হচ্ছে।

এক প্রশ্নের জবাবে শামসুল হক বলেন, গত ক্যাম্পেইনে আমরা বলেছিলাম আমাদের প্রথম ডোজের টিকাদান শেষ হয়েছে। তবে কেউ যদি একেবারে না নিয়ে থাকেন তিনি এলে, সুনির্দিষ্ট কারণ দেখাতে পারলে, আমাদের কাছে টিকা আছে আমরা দিতে পারব। তবে আমরা প্রথম ডোজ উৎসাহিত করব না। এই ক্যাম্পেইনের পর দ্বিতীয় ডোজ আমরা সীমিত করে ফেলতে চাই। এরপর শুধু বুস্টার চালু থাকবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close