নিজস্ব প্রতিবেদক
পদ্মা ও মেঘনা নামে বিভাগ হচ্ছে না
বিশ্ব মন্দা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে পদ্মা ও মেঘনা নতুন দুটি বিভাগ করার যে চিন্তা করেছিল সরকার, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সচিবদের সভায় তা স্থগিত করা হয়েছে। ব্যয় সংকোচন নীতির অংশ হিসেবে আগের সিদ্ধান্ত বদলেছে সরকার। মূলত একটি বিভাগ সম্প্রসারণ করতে হাজার কোটি টাকার ওপরে ব্যয় হবে; বর্তমান প্রেক্ষাপটে তা করা সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ। স্থগিত হওয়ার নেপথ্যে এসব কারণ রয়েছে।
রবিবার (২৭ নভেম্বর) মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বিকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠক হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, দেশে দুটি নতুন বিভাগ গঠনের কথা থাকলেও এখনই তা হচ্ছে না। প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) সভায় গতকাল এই দুটি বিভাগের নাম প্রস্তাব করা হয়। তবে ব্যয়ের কথা বিবেচনা করে সরকার এখনই বিভাগ ঘোষণা থেকে পিছিয়ে আসে।
তিনি বলেন, নতুন দুই বিভাগ ঘোষণা করলে ব্যয় বেশি হবে। এই মুহূর্তে এই ব্যয় ঠিক হবে না। এ কারণেই স্থগিত করা হয়েছে। বৃহত্তর ফরিদপুরের পাঁচটি জেলা নিয়ে প্রস্তাব করা হয় ‘পদ্মা’ বিভাগ, আর বৃহত্তর কুমিল্লার তিনটি ও নোয়াখালীর তিনটি করে মোট ছয়টি জেলা নিয়ে ‘মেঘনা’ বিভাগ গঠনের প্রস্তাব নিকারের বৈঠকে উঠেছিল। সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর পৌরসভা, কুষ্টিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে স্থাপিত থানাটি স্থানান্তর ও বগুড়ার সারিয়াকান্দি সংযোগ সড়ক স্থাপনে নিকার সভায় অনুমোদন পেয়েছে।
দেশে ১৬ লাখ টন খাদ্য মজুদ আছে : মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা কীভাবে নিশ্চিত করা যায়, তা নিয়ে কাজ করতে হবে। এখন ১৬ লাখ টন খাদ্য মজুদ আছে। সংকট যেন না হয়, এজন্য আমদানি ও উৎপাদন বাড়নোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চলমান থাকবে। এতে সাধারণ মানুষের উপকার হচ্ছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ২০২৩ সালে কঠিন সময় যাবে। আন্তর্জাতিকভাবে এটা বলা হয়েছে। চীন ও রাশিয়ায় উৎপাদন কমেছে। এজন্য সংকট আসবে।
তিনি আরো জানান, খাদ্য, সার ও জ্বালানিকে গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভোগ্যপণ্য, ফল, এসব ক্ষেত্রে খরচ কমাতে বলা হয়েছে। প্রয়োজন ছাড়া প্রকল্প করা যাবে না। বিদেশি সাহায্য বা ঋণের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হচ্ছে বা হবে, সেগুলো বাস্তবায়নে গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। নিজেদের খরচের প্রকল্পে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে বৈঠকে।
খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে পতিত সব জমি ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, যোগ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। বলেন, উৎপাদন বাড়লে আমদানি কমবে বলে জানানো হয় বৈঠকে। তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের ১০ প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে কীভাবে উৎপাদন বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায়। এছাড়া রেমিট্যান্স বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
সচিব জানান, জঙ্গি বিষয়ে সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তারা যেন কারো সহায়তা ও অর্থ না পায়, এ নিয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, সুশাসনের জন্য জনগণের ও রাষ্ট্রের চাহিদার সমন্বয় করে কাজ করতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্মার্ট গভর্ন্যান্সের দিকে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বৈঠকে। সিটিজেন চার্টার, এনআইএস, তথ্য অধিকার আইন যেন ভালোভাবে বাস্তবায়ন করা হয়, সেসব বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে।
ব্রুনাই থেকে আগামী বছর সিএনজি পাওয়া যাবে : মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, দেশে জ্বালানি সংকট আছে। ব্রুনাই থেকে আগামী বছর সিএনজি পাওয়া যাবে বলে নিকার সভায় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব জানান। এটা পাওয়া গেলে খাদ্য, সার ও জ্বালানিকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
"